এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

রশ্মি মজুমদার


বিভাগ : সাক্ষাৎকার
খনন (নতুন কবি)


নবাগতা রশ্মি মজুমদারের সাক্ষাৎকার নিলেন রাহুল গাঙ্গুলী


রাহুল : এই সময়ে যে সকল কবি প্রতিভা নিয়ে লিখছে ও মেধার বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে রশ্মি মজুমদার তাদের ভিতর একজন।


রাহুল : রশ্মি তোকে প্রথমেই স্বাগত জানাই ও লেখার জন্য শুভেচ্ছা



রাহুল : প্রথম।যে কথাটা ভীষন যানতে ইচ্ছে করে তা হলো 'তোর জীবনে লেখালিখির শুরু কিভাবে?'



রশ্মি : এবাবা আমাকেও ফর্মাল কথাবার্তা বলতে হবে নাকি?



রাহুল : একদম না।তুই তোর মতো উত্তর দিবি


রশ্মি : প্রথমেই বলি আমাকে এই প্ল্যাটফর্মে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

রাহুল : আসলে আমাদের এই বিভাগটা এবারই প্রথম।একজন কবির লেখালিখির শুরু আর তারপর তার চিন্তার উত্তরণ,একে সময়োচিতভাবে ডকুমেন্টেশন করাই মূল উদ্দেশ্য

রশ্মি : আচ্ছা বলছি

রাহুল : আচ্ছা

রশ্মি : সেভাবে প্রথম লেখার শুরু বলতে নির্দিষ্ট কিছুই ছিল না ।  আমি ছোট থেকেই টুকটাক লিখি। নিজের সাথে কথা বলার জন্য ডায়েরি ছিল। যা কিছু লেখা হত সবই একপক্ষের বক্তব্য বিশেষ। কবিতা লিখব কোনদিন ভাবিনি। ২০১৪ সাল নাগাদ একটা  মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম।  মনের কথাগুলো লাইনের পর লাইন সাজিয়ে লিখে ফেললাম একদিন হঠাৎ করেই। এইসব লেখাদের আমার কাছে কবিতা বলে মনে হয়নি। তবে এই প্যাটার্নেই এরপর থেকে লেখা শুরু করলাম

রাহুল : বাহ।এই স্বতঃস্ফূর্ততা বিষয়টা বেশ অভিনব তো

রাহুল : প্রথমবার লেখার পর আনন্দ নিশ্চয়ই দারুণ

রাহুল : নিশ্চয়ই তোরও খুব আনন্দ হয়েছিল

রশ্মি : প্রথমবার লিখে স্বাভাবিকভাবেই একটা ভাল লাগা এসেছিল, অন্যরকম কিছু করতে পারার থেকে ভাল লাগা।

রাহুল : আচ্ছা।অধিকাংশ জায়গাতেই দেখা যায়,জীবনের প্রথম লেখাই কবিতা দিয়ে শুরু।তবে কি কবিতার ভিতর একটা অন্য অনুভূতি বা সহজবোধ্যতা আছে?তোর কি মনে হয়?

রশ্মি : আমার কাছে অনুভবের নাম কবিতা। যদিও কবিতার কোন সংজ্ঞা হয় না এবং আমি যা লিখি তাদের কবিতা বলা যায় কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে, তবু বলব, মনের মধ্যে অনেক কথা জমা হলে কবিতা জন্মায়।

রশ্মি : এই সূত্র মানলে কবিতা সহজিয়া স্রোত... লিখতে হবে বলে জোর করে লেখা যায় না, সে আপনিই নেমে আসে মন থেকে চেহারায়।

রাহুল : বাহ।বেশ সুন্দর উত্তর দিলি।খুব সুন্দর চিন্তা

রাহুল : আচ্ছা লেখা ছাড়া তো খুব সুন্দর ছবি আকিস জানি।আর কোনো প্রিয় ইচ্ছে?

রশ্মি : গল্পের বই আমার জ্ঞান হওয়া থেকে সঙ্গী। মনের বিভিন্ন অবস্থায় সে পাশে থেকেছে। আজীবন থাকবে।  প্রিয় বন্ধু। একা হওয়ার মধ্যে আনন্দ খুঁজে নিতে ভাল লাগে।

রাহুল : আচ্ছা
পরের যে কথাটা জানতে ইচ্ছে করছে, তা হলো : আজ যখন লিখছিা, না লেখার দিনগুলোকে কেমন মনে হয়?

রশ্মি : না লেখার দিন বলতে কোন সময়টা?  যখন লেখা শুরু করিনি সেই সময়টা নাকি এখন যখন লেখা আসে না??

রাহুল : বলা ভালো : এই লেখালিখি তোর জীবনযাপনকে কিভাবে প্রভাবিত করছে?মানে,যখন লেখালিখি শুরু হয় নি

রশ্মি : এখন মনে হয় সেইসময়ে যখন লেখা শুরু করিনি,  লেখাগুলো তৈরি হচ্ছিল, কথা না বাঁধা হলেও যেমন কথারা চলতে থাকে, সেরকমই। তখন অক্ষরে ফুটে ওঠে নি শুধু, কবিতা নিজের নিয়মেই বয়ে চলছিল।

রাহুল : তখনকার রশ্মি আর আজকের রশ্মি : কতোটা পার্থক্য?তোর কি মনে হয়?

রশ্মি : আগে অনুভব করতাম শুধু। মনের ভিতর জমতে থাকত। আজ তাদের অক্ষরের ভাষায় অনুভূতিগুলোকে রূপ দিতে পারছি।

রাহুল : বাহ
আচ্ছা পরের প্রশ্ন করি।সাহিত্যে এখন নানান বিভাগের মানুষ লিখছেন।তা ইন্জিনিয়ার হোক,ডাক্তার হোক,ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া হোক।
এসবে কি সাহিত্য কিছু এগোলো।তুই কিভাবে দেখিস বিষয়টাকে

রশ্মি : বিভিন্ন পেশার মানুষ যারা লেখালেখি করছেন নিয়মিত, তাঁদের হাত ধরে আমরা আধুনিক জীবনের আরও নানা দিকের কথা জানতে পারছি। তারা যেহেতু সরাসরি যুক্ত আছেন নিজস্ব জগতে তা সেই দুনিয়ার কথা আরও ভাল ভাবে তুলে ধরতে পারবেন। যারা লেখালেখি করেন নিয়মিফ তারা পড়ার মধ্যেও আছেন। এভাবে বিভিন্ন দিকের ঘটনা পরিবেশ লাইফস্টাইল আলোচিত হচ্ছে। অনেক মানুষ জানছেন একে অন্যকে। আর এভাবেও সাহিত্য অনেকটা জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।


রাহুল : আচ্ছা। বেশ
পরের প্রশ্নটা করছি

রশ্মি : 🙂

রাহুল : জীবনে ঘটা ঘটনার আবহ কতোটা তোর কলম ও চিন্তনকে প্রভাবিত করে?

রশ্মি : কবিতা বলো আর যা ই বল, লেখনী হল জীবনের প্রতিফলন। অতএব রোজকার জীবন দিয়েই কবিতার উপকরণ হবে এটা যেমন সত্যি তেমনই কল্পনার মিশেলেও কবিতার শরীর হয়

রাহুল : অথবা ধর কিছু ইচ্ছে, চাওয়া না পাওয়া, মানে একটা ভয়েড বা অ্যান্টি ভয়েড সেটাও তো উপকরণ হতে পারে।তোর কি মনে হয়?

রশ্মি : যেহেতু এই সব কিছুই জীবনের সাথে জড়িত তাই কেউই কবিতার বাইরে নয়

রাহুল : একদমই

রশ্মি : তুমিও কি তাই মনে করো?
রাহুল : অবশ্যই।দেখা না দেখা সবই তো কবিতা

রাহুল : আচ্ছা পরের প্রশ্নে যাই।সকলের জীবনে একটা প্রেরণা থাকে।একটা উৎসাহের বুস্টআপ থাকে
এটা তোর কাছে কতটুকু?
কোনো বিশেষ কেউ?বিশেষ প্রভাব?যা তোর লেখন-চিন্তনকে প্রভাবিত করেছে বা এখনো করছে

রশ্মি : আমি সবরকম জিনিস থেকেই কবিতা লেখার উপকরণ খুঁজে  পাই। রাস্তায় আসতে যেতে কিছু ঘটনা বা দৃশ্য মনে ছাপ ফেললে তা থেকে কবিতার ভাবনা আসে। আর আমার কাছে লেখার জন্য সব থেকে বড় অবদান হল প্রকৃতি। গাছপালা মাঠ আকাশ বৃষ্টি- ভীষণ ভালবাসি। আমার খুব কাছের।

রাহুল : বেশ
আচ্ছা এই সময়ের ভাষা নিয়ে অনেকেই ভাবেন দুরহ বা অতিরিক্ত জটিল কবিতা।এ ব্যাপারটা তোর চোখে কেমন?

রশ্মি : কিছু জটিল কবিতা হচ্ছে তার পাশাপাশি অতি সরল ভাষা নিয়েও লেখা হচ্ছে। ভাষার ব্যাবহার অর্থাৎ শব্দ চয়নে সহজ ও সাবলীল হওয়াই উচিত আমি মনে করি। কারণ তাহলে মেসেজটা অনেকের কাছে পৌঁছোবে। কঠিন ভাষা দিয়ে লেখা হলে অনেকক্ষেত্রেই তা সহজবোধ্য হয় না। আর মানুষ যদি লেখা পড়ে বুঝতেই না পারে তাহলে সেই লেখার মূল্য নেই বলেই মনে হয়। শুধু হাতে গোণা কিছু মানুষ বাহবা দেবে।
তার সাথে আবস্ট্রাক্ট কবিতা গুলিয়ে ফেললে ভুল হবে। অন্য ধরনের একটা ধাঁচ আছে সেখানে যা কিনা যিনি লিখছেন তার নিজস্বতা ফুটিয়ে তোলে। সেই সব লেখা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়

রাহুল : আচ্ছা।তাহলে কি কবিতার পাঠক পাঠিকার সংখ্যা বাড়ছে মনে করছিস।অর্থাৎ এই সময়ে তার অ্যাকসেপ্টেন্স  কি তাহলে বাড়ছে?

রশ্মি : হ্যাঁ লেখার মান সহজ হওয়ার জন্য অবশ্যই আরও বেশি গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। ফলে পাঠকের সংখ্যাও বাড়ছে

রাহুল : তোদের মতো নিউজেনারেশনের কাছে এই উত্তরগুলো সময়েয় কাছে খুব জরুরী ও আশাজনক
আচ্ছা অনলাইন না প্রিন্টেড?না কি ব্যক্তিগত ওয়াল?
কোনটা পছন্দের?

রশ্মি : আমারও ভাল লাগল জেনে যে আমাদের জেনারেশন এখনও বাংলা সাহিত্যতে অবদান রাখছে।

রশ্মি : প্রিণ্টেড

রাহুল : আগামী সময়কেও এদিক দিয়ে কিভাবে দেখবি?
কিন্তু অনলাইন এতো বাড়ছে।মনে কি হয় না প্রিন্টেড ভার্শনের চেয়ে অনলাইনের প্রসারতা ভবিষ্যৎে অনেক বেশি

রশ্মি : যত সময় এগোবে আধুনিকীকরণ অর্থাৎ ইংলিশ গ্রাস করে নিতে থাকবে সমস্ত মাধ্যম। ভয় হয় বাংলা কতটা টিকে থাকবে। কিন্তু আজকাল লেখালেখির উপকরণ মাধ্যম এত উন্নত হয়েছে যে যারা মাতৃভাষায় কাজ করতে ইচ্ছুক তারা পিছু হটবে না। এবং তাদের কাজ দিয়েই অনেককে জুড়ে রাখবে।
রশ্মি : আগেরটার উত্তর ছিল

রশ্মি : অনলাইনের প্রসারতা বাড়ছে একথা সত্যি। কিন্তু প্রকাশক এবং বই প্রকাশের সাথে এতত মানুষ জুড়ে থাকেন তারা যেমন চাইবেন না বই বন্ধ হয়ে যাক তেমনই আজকালকার লেখক কবিরা বরাবর নিজের বইয়ের প্রিন্টেড ভার্শনই দেখতে পছন্দ করেন,  অনেকের হাতে তুলে দেওয়া- বই নিয়ে আলোচনা- সেরকম গুণগত মান থাকলে পুরষ্কার পাওয়া ইত্যাদিরর আশায় কেউই বোধহয় চান না যে বই অনলাইনে হোক।
আচ্ছা আমি এখন তো বাড়ি ঢুকলাম আর পারছি না। কাল আবার হোক?

রাহুল : আচ্ছা মনে কি হয় না : এই মুহূর্তে যদি এমন কোনো মাধ্যম হতো, যার ভিতর দিয়ে একজন আমেরিকান কবি বা লাতিন কবি এই মুহূর্তে কি লিখছেন জানতে পারতাম এবং আমরাও কি লিখছি জানাতে পারতাম : তা এক অন্যরকম আবহ তৈরি করতো

রাতে একটু সময়।আর বেশি সময় নেব না

রশ্মি : ভাষার সমস্যা একটা বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায় অনেক ক্ষেত্রেই। তাই শুধু মাত্র ট্রান্সলেটরের সাহায্য না নিয়েই যদি কবিতার অনুভবটাও বোঝানো যায়,  তাহলে দুপক্ষই উপকৃত হবে।

রাহুল : আচ্ছা
এই মুহূর্তে তোর প্রিয় কবি কে?কেন?
এটা বড়ো জানতে ইচ্ছে হয়

রশ্মি : নিঃসন্দেহে আমার ভাললাগার কবি ভাস্কর চক্রবর্তী। ওনার লেখায় আমি নিজেকে খুঁজে পাই। জীবন দর্শনের অবয়ব আমি আঁকা দেখি ওনার প্রতিটি বাক্যে, প্রতিটি কবিতায়। আমি নিজের জীবনের এতকটা দিকও খুঁজে পেতাম না বিভিন্ন আঙ্গিকে, যদি না ভাস্করের লেখা হাতে পেতাম। মনের সমস্ত প্রকারের ওষুধ খুঁজে পাই প্রতিনিয়ত।  আমার লেখার এক অনুপ্রেরণাও তিনিই

রাহুল : বাহ।আমাদের কাছেও।ভাস্করদার অকাল প্রয়াণ আজও মেনে নেওয়া যায় না

পরের যেটা জানতে ইচ্ছে করে : কি ধরনের লেখা আরো লিখতে চাস আগামীতে?
লিখতে গিয়ে সবচেয়ে বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বী কাকে মনে হয়?কেন?

রশ্মি : আমার জীবন, প্রতিদিনের ঘটনা আর প্রকৃতি- এই সবই লেখায় উঠে এসেছে, আশা করব এরাই আরও নানা দৃষ্টিভঙ্গিরর মধ্যে দিয়ে উঠে আসবে আগামীতে।
কবিতা লেখা আমার যেহেতু পেশা নয়, তাই
প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাউকে দেখি না এবং আমিও কারও প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চাই না। তবে হ্যাঁ, মান ও গুণগত দিক থেকে উন্নতি করার জন্য নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, বলা ভাল করতে ভালবাসি।

রাহুল : আচ্ছা
আগামীতে কোনো বিশেষ ইচ্ছে : কলমের কাছে বা ভাষায়?

রশ্মি : সব ইচ্ছেই কি সফল হয়? কিছু অপূর্ণ থেকে যাওয়া ভাল। তাই সময়ের কাছে জমা থাকুক কিছু।

রাহুল : আচ্ছা।এটা তোর 'কবিতার ভিতর কুয়াশা' রাখার মতো হলো 😃😃😃😃😃😃😃

রশ্মি : কবিতা তো একপ্রকার কুয়াশাই। সব কথা তো কবিতা নিতে পারে না, কিছু রাখে নিজের ভিতর লুকিয়ে। বাকিটা আবছা অন্ধকারে ছড়িয়ে দেয়

রাহুল : আচ্ছা।অনেক তোর সময় নিয়েছি আর নয়।তুই যে অফিসের এই ব্যস্ততার ভিতর সময় দিলি,গোটা এখন তরঙ্গ পত্রিকার টিম থেকে শুভেচ্ছা, ভালোবাসা, অভিনন্দন
শুধু কিছু বার্তা যদি তোর পাঠকদের জন্য দিস

রশ্মি : যারা পড়ছেন আজকের লেখা, নিশ্চয়ই তাঁরা লক্ষ্য করেছেন লেখার ধরন, ভাব প্রকাশে পরিবর্তন আসছে। পরিবর্তনটা বেশ দ্রুত আসছে, নতুন রকম ভাবে। এবং আজকের পাঠক সেটা ভালও বাসছেন। লেখক/কবিদের কাছে পাঠকই ভরসার যায়গা। তারা যেমন ভালবাসবে লেখা তেমনই সমালোচনাও করবেন। এই দুটোই দরকার। তাই বলব সবই চলুক। লেখার পাশাপাশি পড়া এবং সমালোচনা করা আর বাংলা ভাষাকে কোণঠাসা নয়, বরঙ আরও এগিয়ে নিয়ে চলুন।

রাহুল : অনেক ভালোবাসা তোকে।আরো এগিয়ে চল।আমরা পাশে থাকছি সবাই

রশ্মি : ধন্যবাদ দাদা... ভীষণ খুশি হলাম এরকম আলোচনায় অংশ নিতে পেরে।


********


রশ্মি মজুমদারের কবিতা


স্ক্রিনশটঃ


বিছুটিদলের কর্মকাণ্ড শেষ হলে স্ক্রিনশট নামক বিশুদ্ধ বাজারের জমিজিরেত মুখ দেখায়
প্লটে প্লটে ভাগ করে দিলে প্রাপকের সংখ্যা গুণিতক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে


এতটা শিথিলতা ভাবা যায়নি
সমস্ত খেসারত দাম বুঝে দুরপাল্লার ফ্লাইট বুক করে, আর
অব্যবহিত ফলরূপে তাদের ঝাড়া হাতপা বেয়ে নেমে আসে অক্ষর প্রতিশ্রুতির স্তবক


সুযোগ্য পাপড়িদের জড়ো করলে
বাঁধা ধরা নৌখাত পেড়িয়ে গত বর্ষার জমা জল এসে হাত নাড়ে
বড় ব্যস্ততায় মাখা শীর্ণ অপরিচিত মুখ হাওয়া কেটে চলে যায় অগুনতি মেট্রোর খোঁজে


আরও কিছুটা বাতিল খাতার কোঁচকানো মুহূর্ত
রিফ্লেক্ট করে ওদের গায়ে লেগে থাকা কিছু উৎকট সাদা রঙ
ঠিক এই মুহূর্তে সমস্ত চেতনা তোমার ছায়ার অফার ফিরিয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ হই!


ঝটপট সাজ বিহীন যুদ্ধে যেমন রঙিন প্রবণতা মুছে যায় কাশ শরীর থেকে
দীর্ঘ ভাবসম্প্রসারণের পরে
হালকা ব্লেড দিয়ে অবিশ্বরদের একফুঁয়ে নিভে যাওয়া মোমের রূপ দিতে বসি ভরদুপুরে



আমাদের উদাহরণঃ

অর্ধনগ্ন মাঠ বরাবর যে কটা গলিত চোখ ফ্যাট ফ্যাট করে চেয়ে থাকে
কোনও এক সময়ে তাদের নাম দেওয়া হয়েছিল
যেমন
অত্যন্ত ভালবেসে ভাঙা হাতুড়িদের ঘরের এক কোণে ফেলে রাখা
অথবা
নরম শিউলিদের পুজো বাক্স অবধি না যেতে দিয়ে গলা টিপে মেরে ফেলা
কিম্বা ভাবো
আমাদের মাঝে ইক্যুয়াল চিহ্নটাকে জাস্ট কলা দেখিয়ে পেট চিড়ে দেওয়া

বিশ্বাস করো
এরকম কিছু “টুকরোটাকরা” মরচে পড়া ঠোঁটের কোণায় এখনও লেগে আছে
লাইন করে নমুনার পাতা হাজির করলে সংখ্যাদের শুধু বয়সই বাড়ে

আসলে
প্যারারাল রাস্তারা অপরিচিতই থাকতে চায় (শহুরে সমাজ কিনা!),
নিদেনপক্ষে নিঃস্পৃহ প্রতিবেশীর উদাহরণ হয়ে


প্রাক্তনঃ

প্রাক্তন বললে তার নাম উচ্ছিষ্টের খাতায় জমা পড়ে
প্রক্রিয়াটা অনেকটা এরকমঃ

পর্ব শুরুতে পরিচয়ের ভিত আঁকা
জলখরচের অবাধ মিশেল... সহজ পথ না ধরে
সে ভিজে হয় আলটপকা খুঁটি

অসময়ের ঝড়ে পড়লে বাক্যরা সব দিশেহারা
কমতির সাথ নেয়... ক্রমশ শব্দে
ছোট হতে হতে হাসিচিহ্নে সে হয় বন্দী

এ টু জেড... জেড টু জেড... চাকার কথায় ফিরে ফিরে আসে ইতিহাস
লেখাগাছেদের বাতাসে মুড়ে উড়ে যায় আরেকটা দিন,
নেহাত অস্তিত্বের কারণে বসত থাকে
নয়তো এসব কিছুই যাযাবর ।



রশ্মি মজুমদার

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
এই মুহূর্তে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরতা


No comments:

Post a Comment