এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সুব্রত দাস


বিভাগ : গল্প (অণু গল্প)


“প্লাবন”

(১)
--"দরকারি জিনিস গুলা আগে ভর "
---"আমার বই-খাতা !"
--"ওগুলা থাক ,জামা-প্যান ভর দিকিনি তাড়াতাড়ি "
      অনুপ বিচলিত হয়ে একটা বস্তার ভিতর জামা-কাপড় গুটিয়ে ভরতে লাগল । সবাই এখন ব্যাস্ত ,খবর হয়ে গেছে -নদীতে বিপদসীমার উপর জল আসছে ,যে কোন সময় যা কিছু একটা হয়ে যেতে পারে ।একেই বাঁধের যা অবস্থা , তার উপর বালিখাদের বালি কেটে কেটে গোঁড়া পর্যন্ত গর্ত ; সম্বল বলতে রেল ব্রিজের পাশে উঁচু জায়গাটি ,সেখানকার ঝোঁপ-জঙ্গল পরিষ্কার করে দখল দখল নিয়ে বন্ধু হয়ে উঠেছে শত্রু ,পাড়া-প্রতিবেশী কেউ কাওকে চেনে না এখন ; একে অপরকে ঠেলে উপরে উঠতে চাইছে প্রথাগত ।
                
(২)
তখনও রিম-ঝিম বৃষ্টি ,প্যাঁচপ্যাঁচে কাদায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি বিস্ময়ে ।ক্রমাগত জলের হুঙ্কারে ভেতরটা হু হু করে উঠছে ,রাত্রি তখন ২ টো , বাঁধের এপার-ওপার এখন সমান্তরাল । কেউ কেউ ঠাকুরকে ডেকে প্রণাম করছে বার বার ,তাদের প্রার্থনাটা কি তা আমি জানি।চারিপাশে হইহুল্লোড়,কারওর চোখে ঘুম নেই ,হঠাৎ উপরের বাঁধ ভাঙার খবরে সকলের শুকনো মুখগুলোতে এবার যেন জোনাকি এসে বসল । আর কোন ভয় নেই ,এখানে আর বাঁধ ভাঙবে না , ঘর ভাঙবে না , নিশ্চিহ্ন হবে না ভিটেমাটি ।
                   
(৩)
ভাঙা জায়গাটা দেখতে এখন দলে দলে দর্শনার্থী যায় সেখানে ,বেচারা মানুষগুলো এখন ক্যামনভাবে আছে ,সেটাই নাকি ছবি তোলার উপযুক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড ।বেশ কয়েকদিন পর আমিও গেছিলাম,দেখে খুব আশ্চর্য হয় নি , গ্রামটা জলাশয়ে পরিণত হয়েছে বলে ভেঙেও পড়িনি ,যেভাবে ক্ষেত-বাড়ি গুলো বালি চাপা পড়েছে ,ঢঙি আধুনিকতার উপর ঠিক এরকমই একটি প্লাবন আমিও বার বার চেয়েছি আমার  দেশে…...।


সুব্রত দাস 

গ্রাম -বুধরা 

পোঃ-ভেদিয়া 

জেলা -পুর্ব বর্ধমান 

পিন -৭১৩১২৬
কথা -৯১৫৩৭৫৫৭৯২ 




No comments:

Post a Comment