এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

গৌতম সমাজদার


বিভাগ : কবিতা (সাধারণ বিভাগ)


আরো কয়েকটা দিন


হে সবুজ পৃথিবী,
আমায় ছুটি দিওনা,
ছুটতে দাও আরো হাজার বছর।
জানি তুমিও ক্লান্ত, অবসন্ন
তবুও থাকতে চাই তোমাতে লেপ্টে!
ক্ষয় তোমার হচ্ছে,
হচ্ছে আমারও-
আমরাই দায়ী।
হে সবুজ পৃথিবী-
সরে যেওনা আমার পাশ থেকে!
তুমি বারবার বলেছো ভালোবাসায়
তোমায় খুঁজতে- চেষ্টা  করেছি,
একই সৃষ্টি তে তোমায় পাওয়া যায়না,
তাই প্রকৃতি তেও বিভিন্নতা।
হে অনন্ত যৌবনা পৃথিবী,
স্হান দিও তোমার বুকে।
কথা দিচ্ছি - তোমায় আবার
ভরিয়ে দেব সবুজে সবুজে-
তারপর চিরনিদ্রায় যেতে চাই,
তোমার কোলে মাথা রেখে




বিভাগ : গল্প (ছোট গল্প)

দরদী


তড়িৎ বাবু সত্তোরোর্ধ মানুষ। এক সময় বড় কম্পানির প্রযুক্তিবিদ ছিলেন। পরবর্তীকালে আধিকারিক হন। গতবছর ধরে Alzhymer আক্রান্ত। অবসর নেওয়ার পর কিছুই মনে রাখতে পারেন না। এমন কি মাঝেমাঝে কাছের মানুষদের চিনতে পারেন না। কখনও কখনও পথ ভুলে অন্য পথে চলে যান। বাড়ি চিনতেও ভুল করেন। ভরা সংসার তার, খুবই যত্নে রাখেন বাড়ির লোকেরা, কোনও কাজই করতে দেননা শুধু সিগারেট ফুরিয়ে  গেলে ধৈর্য্য ধরতে পারেন না তাই মোড়ের মাথার দোকান টায় যান। এই রকমই এক রবিবারের সকালে সিগারেট  কিনতে গিয়ে পথ ভুলে বেলগাছিয়া ছেড়ে শ্যামবাজারের দিকে চলত শুরু করেন। অনেক টা পথ হাঁটতে হাঁটতে যাওয়ায় ক্লান্তি তাকে গ্রাস করে। ঘামতে থাকেন তিনি, মাটিতে পড়েও যান। ওঠার একটু চেষ্টাও করেন কিন্তু ব্যর্থ হয়েই শুয়েই পড়েন রাস্তার একটা কোনায়
পথ চলতি অনেক মানুষেরই চোখে পড়ে কিন্তু এই ব্যস্ততার যুগে সবাই পাশ কাটিয়ে  চলে যায়। ঘটনাচক্রে কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসারের চোখে পড়ে এক বয়স্ক মানুষ রাস্তায় পড়ে।  নিজের গাড়ি থেকে নেমে জলের বোতল থেকে তড়িৎ বাবুর চোখে মুখে জল দিলেন। জানতে চান কি কষ্ট হচ্ছে! তড়িৎ বাবু শুধু নিজের বাঁদিকের বুকে হাত দিয়ে অস্পষ্ট ভাবে কিছু বলেন যা পুলিশ অফিসারের বোধগম্য হয়না। তৎক্ষণাৎ পাঁজাকোলা করে তুলে তড়িৎবাবু কে নিজের গাড়ি তে তোলেন এবং হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের Emergency তে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বাবুরা একটু দায়সারা ভাবেই কিছু অম্বলের ওষুধ লিখে ছেড়ে  দিল এবং পুলিশ অফিসার টি কে বলেন নিয়ে যান কোনো  চিন্তা করবেন না। তেমন কিছু হয়নি। কিন্তু পুলিশ অফিসার টি একটু জোরাজুরি করেন আর বলেন কোনো  senior ডাক্তার বাবুকে ডাকতে। 
জুনিয়র ডাক্তার রা ব্যাপার টা খুব ভালোভাবে না নিলেও senior ডাক্তার কে ডাকে। physician দেখে সঙ্গে -সঙ্গে ইসিজি করতে বলেন এবং মুখে বলেন পুলিশ অফিসার কেআপনারা মত কিছু মানুষ আজও আছেন।  আপনি ঠিকই আন্দাজ করেছেন। ওনার একটা Mild stroke  হয়েছে। আমরা ওনার চিকিৎসা করছি আপনি চেষ্টা  করুন ওনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার। আর একটু দেরী হলে অঘটন ঘটে যেত। আপনি ওনার প্রাণ বাঁচালেন।
তড়িৎবাবুর পকেটে রাখা মোবাইল  থেকে ওনার বাড়তে যোগাযোগ করা হলে বাড়ির সবাই চলে আসে। ডাক্তারের কাছে সব শুনে তড়িৎবাবুর বড় ছেলে পুলিশ অফিসার কে বুকে জড়িয়ে ধরেন। বলেন,“আপনি আজ আমার বাবার প্রানদান করলেন। আপনাদের শুধু গালাগালিই প্রাপ্য নয় সম্মান প্রাপ্য। আপনাদের মত মানুষের দিকে আমরা তাকিয়ে থাকি।  তাকিয়ে  থাকে সমগ্র সমাজ।  ধন্যবাদ দিয়ে এই বৃহৎ কাজ টাকে ক্ষুদ্র করবো না শুধু চাইবো আপনার এই মন টা যেন আজীবন থাকে



No comments:

Post a Comment