এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

আফজল আলি


বিভাগ : প্রবন্ধ (ধারাবাহিক)



কেমন আছো কবিতা ,  বিশ্বচরাচর দেখছে
-  -  -  -   - -   -  -   


বাংলা কবিতাকে ঠিক কত ডিগ্রি বাঁকিয়ে দিলে আমি লেখাটা শুরু করতে পারব তা জানি না , তবে কবিতা একটি নরম মাঠ , সুবিশাল,  দিল খোলা,  পরম আশ্রয়দাত্রী আবার সজাগ অভিমানী , বিকর্ষযান্ত্রিক এবং হৃদয়ের হুল্লোড় । কবিতা ঠিক কী তা বুঝে ওঠার আগেই কারো কারো কলম থেকে ছিটকে যায়  , অথবা পরম আদরে ধরা দেয়   উদযাপনের অভিমুখ বদল হয় । ঠিক নদীর স্রোতের মতো । নিজস্ব ধারায় বহে চলে আবার মাঝে মাঝে এদিক ওদিক বদল-চল। মনের দহনে অথবা আভিধানিক পতনে ভাষা খামখেয়ালিপনার আকার নেয়। তাই কবিতার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই  । সংজ্ঞা বা ছকে বাঁধা নির্দিষ্টকরণ নেই,  কিন্তু এক্কেবারে নেই তা কিন্তু নয় । সংজ্ঞা আছে এবং তা নানাবিধ । এক এক কবি এক এক ভাবে দেখেছেন,  নিরীক্ষণ করেছেন । যেহেতু নির্দিষ্টকরণ নেই এবং এখানেই বিতর্কের ফাঁক এবং এখানেই যত মতামত , নানা পথ । বাংলা কবিতার ইতিহাস হাজার বছরের । খুব সুক্ষভাবে দেখলে বোঝা যাবে তার ভাষাকেন্দ্রিক যে স্রোত তার বদল 180 ° বা 90°  কখনওই হয়নি বা দক্ষিণদিক থেকে উত্তর দিকে হয়ে যায়নি। বদল হয়েছে ধারার মধ্যে -  সময়, '  উৎকর্ষতাকেন্দ্রিক।এলোমেলো ভাবে নয় । খুব বড় মাপের কবিরা তাঁদের প্রখর প্রতিভা এবং তীব্র ক্ষমতার দ্বারা কবিতার discourse পাল্টে দিয়েছেন।কিন্তু সেই পাল্টানোর মধ্যে সেই সময়ের ছাপ , প্রভাব,  অবস্থান , ভাষার ব্যবহার এবং তার উৎসকেন্দ্রিকতা এই সবের উপর । কবি তাঁর সময়কে বাঁধেন কাব্যে। এবং কবির নিজস্ব ক্ষমতার উপর কাব্যভাষা খানিক পরিবর্তন হয় বা হয়েছে । কিন্তু সেই ভাষা কখনওই এলিয়েনদের ভাষা হয়ে ওঠেনি কারণ ভাষার মধ্যে থাকে কারণ ভাষার মধ্যে থাকে কিছুটা communication  , কিছুটা রহস্যময়তা , কিছুটা ছায়া কিছুটা আশ্রয় । সব মিলিয়ে তা মানুষের কথ্য,  অকথ্য,  ব্যবহারিক,  অব্যবহারিক বা অভিধানিক এ সবের মধ্যে সীমাবদ্ধ । চিন্তা দর্শন বিস্তার পাল্টে পাল্টে গিয়ে কবিতা জটিল বা সরল বা রহস্যময় হয়েছে , কিন্তু শব্দের ব্যাকরণের বাইরে যায়নি। শব্দের ব্যাকরণ মানে শব্দ ব্যবহারের একটি কাঠামো থাকে অর্থাত্ তার খেলাটা মূলত শব্দ নিয়েই। বাংলা ভাষা সম্ভারে যা শব্দ আছে তা আমাদের সকল দুঃখ বেদনা কষ্ট জর্জরিত আনন্দ উল্লাস অভিব্যক্তি প্রকাশ করার জন্য খুব অপ্রতুল নয় । সে জন্য কবিতার বিবর্তনের ধারা বা স্রোতটা মূলত ভাষা কেন্দ্রিক বা শব্দ কেন্দ্রিক।ইতিহাসকে সঙ্গে নিয়েই নতুন ইতিহাস তৈরি হয় তাই বাংলা কবিতার একটি স্রোত আছে  ; হতে পারে সেই স্রোতের মধ্যে নানান ধরনের কবিতা,  নানান ব্যবহারিক ক্ষমতা,  স্ফূরণ বিদ্যমান । কখনোই তা পড়াশোনার বা জ্ঞানের বিভিন্ন শাখাকেন্দ্রিক হয়নি। অর্থাত্ বিজ্ঞানের ছাত্রের জন্য বিজ্ঞান-কবিতা,  ইতিহাসের ছাত্রদের জন্য ইতিহাস- কবিতা,  ডাক্তারি ছাত্রদের জন্য medical poetry  ,  আবার এইভাবে physics poetry,  chemistry poetry,  or math poetry or geographical poetry.     
একজন কবি যে কোনো profession থেকে আসতে পারেন  , কিন্তু তিনি যখন কবিতা লেখেন তখন তাঁর অনুভূতি,  জ্ঞান দর্শন জারণ , জীবন অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে ভাষাকেন্দ্রিক কবিতা লেখেন । হতে পারে তাঁর কবিতায় কার্যকারণ বশত কোনো গাণিতিক সূত্র বা গাণিতিক বিভাজন দু এক ক্ষেত্রে চলে আসে , কিন্তু সেটি কবিতার মধ্যে আত্তীকরণ হয় , কবিতা গণিত একাকার হয়ে সেটি শুধুমাত্র গণিত থাকে না  ,  হয়ে ওঠে কবিতা । এবং দক্ষতা তো একটা বড়ো factor . অদক্ষ মানুষের হাত দিয়ে খুব বড়ো কিছু creative  বা technical কাজ হওয়া সম্ভব নয়
ক্রশশ
আফজল আলি
 জিরো বাউন্ডারি কনসেপ্ট ও কবিতা


No comments:

Post a Comment