বিভাগ : গল্প
দেহ সর্বস্ব
মনের সাথে শরীরের অভিন্ন সম্পর্ক। শরীর ছাড়া মনের কথা ভাবা যায় না। তবু রমাকান্ত দেখেছেন, কখনও মানুষ এমন এক মোড়ে এসে ঠেকে--যখন তার মনে হয় সে যেন দেহ-সর্বস্ব !
কামনা বাসনা রঙ ছেড়ে যায়। প্রকৃতি তার রঙ সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে। আমরা মন-মোহিত হয়ে পড়ে আছি।
বস্তারের আদিবাসী গ্রামে সরকারী ডিউটি পড়েছিল রমাকান্তর। ভোটার আই ডি বানাবার কাজ। এখানে পরিচ্ছন্ন তাঁবু পাতা হয়েছিল। কিছু দিন থাকতে হবে। এক আদিবাসী বয়স্থা মেয়ে লাইলী রোজ সকাল বিকেলে বাসন মাজা ঘর ঝাড়ু দেবার কাজ করে যায়। কাজের ফাঁকে লাইলী রমাকান্তকে চা বানিয়ে দিয়ে যায়।
সে দিন কোন উৎসবের দিন ছিল। তাঁবুতে রমাকান্ত একা বসে ছিলেন। পড়ন্ত বেলায় হঠাৎ তিনি দেখলেন, লাইলী নেশা করে তাঁর ঘরে এসে ঢুকেছে। সে কিছুটা টল ছিল আর কথায় কথায় হাস ছিল। বারবার রমাকান্তর গায়ে এসে পড় ছিল।
লাইলী বলে--কি বাবু কথা কোসনে কেন্ ?
--কি বলবো বল ?
--আমারে পাইতে ইচ্ছা হয় না তোর ? অমুন গুলু গুলু চোখ কইরে আমার দিকে তাকাস কেন বল ?
এত দিনে রমাকান্ত লাইলীর শরীরের দিকে তাকান, কালো কষ্টিপাথরের একটা দেহ, নিটোল নিভাঁজ শরীর প্রলেপে ও যেন চকচক করছে।
তখন গোধূলির আলো ফিকে হয়ে আসছিল, সূর্য ডুবতে থাকা এক সন্ধ্যা ছিল। ঘরের আলো-আঁধারির স্বপ্নালোকে লাইলীর লৌহ চুম্বক শরীর যেন জ্বলে জ্বলে উঠছিল। তাপ উষ্ণতায় রমাকান্ত যেন ক্ৰমশঃ গেলে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি লাইলীর গালে এক চুমু কেটে বসলেন। তারপর আঁধার আলোক মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো। শেষে সমাপ্তির অবসন্নতার মাঝে রমাকান্তর স্ত্রীর কথা মনে পড়ে গেলো। তাঁর মনে হল, জীবনে কখনও বুঝি এমনি হতেই পারে, মন থেকে শরীর আলগা হয়ে যেতে পারে। আর মানুষ তখন দেহ সর্বস্ব হয়ে পড়ে।
মনের সাথে শরীরের অভিন্ন সম্পর্ক। শরীর ছাড়া মনের কথা ভাবা যায় না। তবু রমাকান্ত দেখেছেন, কখনও মানুষ এমন এক মোড়ে এসে ঠেকে--যখন তার মনে হয় সে যেন দেহ-সর্বস্ব !
কামনা বাসনা রঙ ছেড়ে যায়। প্রকৃতি তার রঙ সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে। আমরা মন-মোহিত হয়ে পড়ে আছি।
বস্তারের আদিবাসী গ্রামে সরকারী ডিউটি পড়েছিল রমাকান্তর। ভোটার আই ডি বানাবার কাজ। এখানে পরিচ্ছন্ন তাঁবু পাতা হয়েছিল। কিছু দিন থাকতে হবে। এক আদিবাসী বয়স্থা মেয়ে লাইলী রোজ সকাল বিকেলে বাসন মাজা ঘর ঝাড়ু দেবার কাজ করে যায়। কাজের ফাঁকে লাইলী রমাকান্তকে চা বানিয়ে দিয়ে যায়।
সে দিন কোন উৎসবের দিন ছিল। তাঁবুতে রমাকান্ত একা বসে ছিলেন। পড়ন্ত বেলায় হঠাৎ তিনি দেখলেন, লাইলী নেশা করে তাঁর ঘরে এসে ঢুকেছে। সে কিছুটা টল ছিল আর কথায় কথায় হাস ছিল। বারবার রমাকান্তর গায়ে এসে পড় ছিল।
লাইলী বলে--কি বাবু কথা কোসনে কেন্ ?
--কি বলবো বল ?
--আমারে পাইতে ইচ্ছা হয় না তোর ? অমুন গুলু গুলু চোখ কইরে আমার দিকে তাকাস কেন বল ?
এত দিনে রমাকান্ত লাইলীর শরীরের দিকে তাকান, কালো কষ্টিপাথরের একটা দেহ, নিটোল নিভাঁজ শরীর প্রলেপে ও যেন চকচক করছে।
তখন গোধূলির আলো ফিকে হয়ে আসছিল, সূর্য ডুবতে থাকা এক সন্ধ্যা ছিল। ঘরের আলো-আঁধারির স্বপ্নালোকে লাইলীর লৌহ চুম্বক শরীর যেন জ্বলে জ্বলে উঠছিল। তাপ উষ্ণতায় রমাকান্ত যেন ক্ৰমশঃ গেলে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি লাইলীর গালে এক চুমু কেটে বসলেন। তারপর আঁধার আলোক মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো। শেষে সমাপ্তির অবসন্নতার মাঝে রমাকান্তর স্ত্রীর কথা মনে পড়ে গেলো। তাঁর মনে হল, জীবনে কখনও বুঝি এমনি হতেই পারে, মন থেকে শরীর আলগা হয়ে যেতে পারে। আর মানুষ তখন দেহ সর্বস্ব হয়ে পড়ে।
সমাপ্ত
তাপসকিরণ রায়।
পিতার নাম : স্বর্গীয় শৈলেশ চন্দ্র রায়। মাতাঃ শ্রীমতী বেলা রায়। জন্মস্থান : ঢাকা, বাংলা দেশ। জন্ম তারিখ : ১৫ই এপ্রিল, ১৯৫০
স্বর্গীয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রকাশনায় কৃত্তিবাস প্রকাশনী থেকে লেখকের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : চৈত্রের খরায় নগ্ন বাঁশির আলাপ।
উদার আকাশ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত লেখকের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থঃ তবু বগলে তোমার বুনো ঘ্রাণ। শিশু বিতান প্রকাশনী থেকে দুটি শিশু ও কিশোর গল্প গ্রন্থঃ (১) গোপাল ও অন্য গোপালেরা (২) রাতের ভূত ও ভূতুড়ে গল্প, প্রকাশিত হয়েছে। নান্দনিক থেকে প্রকাশিত লেখকের গল্প সঙ্কলন, গুলাবী তার নাম। এ ছাড়া প্রসাদ, সারাক্ষণ, পথের আলাপ, লং জার্নি, দৌড়, কালি কলম ও ইজেল, রেওয়া, কর্কট ক্রান্তি, দিগন্ত, নিরুক্ত, কবিতার সাত কাহন, অঙ্কুর, আত্মদ্রোহ, বেদুইন ইত্যাদি বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় লেখকের গল্প, কবিতা ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া ঐহিক, কালিমাটি, কৌরব, আদরের নৌকা, সৃষ্টি, পরবাস ইত্যাদি আরো কিছু অন লাইন পত্রিকাতে তিনি লেখেন। শিশু-কিশোরদের পথের সুজন, কিচিরমিচির, জয়ঢাক, ম্যাজিক ল্যাম্প, ইচ্ছামতি, কচিকাঁচা ইত্যাদি পত্রিকায় লেখকের উপন্যাস, গল্প ও কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।স্বর্গীয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রকাশনায় কৃত্তিবাস প্রকাশনী থেকে লেখকের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : চৈত্রের খরায় নগ্ন বাঁশির আলাপ।
বর্তমানে লেখক শিশুকিশোর উপন্যাস ধারাবাহিক ভাবে লিখে চলেছেন মানভূম সংবাদের বিশেষ পাতায়।
No comments:
Post a Comment