বিভাগ : কবিতা (অনুবাদ কবিতা)
ভারতীয় কবি (হিন্দি) অশোক বাজপেয়ির কবিতার অনুবাদে, কবি সৌম্যজিৎ আচার্য
অশোক বাজপেয়ি হিন্দি ভাষার এক উল্লেখযোগ্য এবং প্রতিভাবান কবি। জন্ম ১৯৪১ সালে। একজন আমলা হিসাবে জীবন শুরু করলেও তাঁর মরমে আপ্লুত ছিল কবিতা। শুধু কবিতা নয়, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য-কৃষ্টির সমালোচক হিসাবেও তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল অবধি অশোক বাজপেয়ি ‘ললিত কলা একাডেমি’র চেয়ারম্যান পদ অলঙ্কৃত করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হ’ল
‘তৎপূরুষ’ (১৯৮৬), ‘বহুরি একেলা’ (১৯৯২), ‘উমিদ কা দুসরা নাম’ (২০০৪), ‘বিবক্ষা’ (২০০৬),
অশোক বাজপেয়ির প্রশংসাযোগ্য সাহিত্য ও শিল্প-সমালোচনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হ’ল, ‘ফিলহাল’, ‘সময় সে বাহার’, ‘কবিতা কে গল্প’, ইত্যাদি।
১৯৯৪ সালে ‘কাহি নেহি উঁহা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁকে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। বাজপেয়ি ভূপালের ‘ভারত ভবনে’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
শব্দদের দ্বারাও
শব্দরাও জাগিয়ে তুলতে পারে
শরীরকে
ঠিক যেভাবে একটা পাতা
রাতকে টানে
ভোরের মধ্যে
শুভস্রভা
একটা নদীর কথা বলা আছে পুরাণে, নাম শুভস্রভা।
একটা প্রাচীন নদী: কে জানে কোন অচেনা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে, কে জানে কী কী ফসল হয়েছে এর তীরে, কোন্ উপনদী এসে মিলে গেছে এতে। কোথায় এর উৎপত্তি: কতো ছোট। প্রায় অদৃশ্য, অলীক এর শুরুটা। ধীরে ধীরে নদীর আকার নিয়েছে।
টইটম্বুর জল, ভর্তি পানা, থিকথিক মাছ, শব্দের ঝঙ্কার আর উদ্বেল ঢেউয়ের সৌন্দর্য। একটা শৈশবের নদী, একটা যৌবনের নদী ওই সুপ্রাচীন গর্ভগৃহে।
একটা নদী যাকে ঈশ্বর স্পর্শ করেনি, একটা নদী যাকে ভূগোল স্পর্শ করেনি। একটা নদী শুধু শব্দের। একটা নদী যা শব্দ দিয়ে নির্মাণ করা। একটা নদী যা ছিল বিশুদ্ধ ও ভাস্বর, একদিন হারিয়ে গেলে। একটা নদী যাকে শুভস্রভা নামে ডাকা হতো, এখন নামবিহীন। একটা নদী ছিল শিশুদের শাস্ত্রে, এক অসম্ভব নদী, লোকানো নদী, এক অদৃশ্য নদী।
শুভস্রভার একটা নদী, একটা নদী সব নদীর গহীনে, বয়ে যাচ্ছে পুরাণ নিসৃত এই শব্দগুলো: একটা নদী, শুভস্রভা।
No comments:
Post a Comment