এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

মৃণালিনী


বিভাগ : কবিতা (সাধারণ বিভাগ)


"ক্যাকট্যাসের অক্ষর

১।
ভোরের আকাশেও রামধনু দেখা যায়
পাপড়ির বুক চিরে আসা সোহাগ

মিউনিসিপ্যালিটির সরু গলি 
পার করে---
ম্যানহোল প্রেমিক,
গন্তব্যস্থলে শীতের শেষ রাতের জমানো লজ্জা নিয়ে
বারবার 
       বারবার 

ফুটে উঠে উজ্জ্বল ছবির অক্ষরের মধ্যে 
পারস্পরিক বোঝাপড়া
               সম্প্রতির মিলন স্হল

                 
২।
আশাগুলো  মিনিস্যাসের  চকোলেট, জ্যাম 
মোড়ক খসিয়ে উন্মুক্ত দরবারে
হোঁচট খায় ক্যাকট্যাস ফুলের পাপড়িতে
ক্যামেরা  শক্তিশালী
রামধুনুর  উজ্জল রঙ
বারবার  ক্লিক---
প্রযুক্তির শক্তিশালী  ফ্লাইবার চামড়ার চোখ


৩।
আকাশের একবার নিলর্জ্জ চোখ তোলে নিলর্জ্জ
বিশালতা  তার বাঁধা দাস
ফুটপাতে পড়ে থাকা কালো ভাবগুলো
পাতা  বিছানায় স্হানহীন
নাম পরিচয়হীন
ভাবগুলো  অতীত আর্য বাহুর সান্ত্বনায়
              নিস্পাপ হাত বাড়িতে দিতে চায়।

আবার---
পুরনো নাটক জম উঠে 
ক্যাকট্যাস ক্যামেরা ম্যানহোল... 
নতুনের জল পড়ে
টুপ টুপ
        টাপুস টাপুস
উজ্জ্বল ছবির অক্ষরেরা- 
হৈ চৈ করে
      বিজয়িনীর আড্ডা
ম্যানহোল অপেক্ষা করে...

                               

বহুরূপী

১।
কায়া কথা বলে 
আওয়াজ শোনে রাতের মরা চাঁদটাও
মাইক্রোফোনে বাঁধা বিশাল গহ্বর
উঠে আসে পোষা টিয়ার বুলি...
সময়ের  তিরতির বয়ে যাওয়া
বয়ে যায় অনেক কিছু 
আবার 
বারবার এক ফরমূলা কাজ করে।

ভায়োলিন আরও মিষ্টি সুরে
বাজতে থাকে
ছন্ ছন্ আওয়াজ পাশাপাশি-
কায়া স্তব্ধ হয়
মায়া লুকিয়ে কাঁদে ভরা জ্যোৎস্না রাতে।

        
২।
গর্ভ নিরোধক পিল নিতে শুরু করেছি 
জন্ম নেবে না অভিযোগ 
আর কোন প্রতিবাদ।

বাক্ রুদ্ধ ভাব- ভাষা
হাতের আঙুলগুলো ধর্ষিত হচ্ছে.....
শুকনো রক্তে লেখা থাকবে ইতিহাস।

জীবাশ্ম কথা বলে...
পড়তে পারবে কী নতুন ভাষা!
নবীন ভবিষ্যৎ...

ইতিহাস তোমার প্রতীক্ষায় আজও
রক্তমাখা নখের কান্নারা
লুকিয়ে রেখেছি গর্ভ জীবাশ্মে।

   
৩।
গিরগিটির অভিনয়ের ভারে 
কাঁধে অ্যাপেনডিক্স
শূন্য সিঁথি
লাল রক্ত সিঁদুরে ভরে যায়
যখন রক্তচোষা মশা ছুঁয়ে যায় কপাল ।।




“রোজের  নামচা”

১।
হাটের মধ্যে রোদের সংসারে 
ব্যাঙের হাসিতে অতিরিক্ত 'প্রলাপ'
     পাশবালিসে  পরিয়ে রাখি
নিজের কোমরের দড়ি খুলে
     মাইক্রোফোনে নির্বাক-
ব্যর্থ কুমিরের জোড়ালো  প্রতিবাদ।
         
২।
খুঁজতে খুঁজতে মোহনায়
সাগরের ঘূর্ণি পাকে বৈশাখী রোদের ঝিলিক 
                  নিজেকে হারিয়ে  একবার 
ফ্রয়েডকে অনুভব করি ঘূর্ণিত গহ্বর
      অবচেতনে উঠে আসে কাম ও যৌনতা।



৩।
ঘ্যান ঘ্যানানি সুর  কলকব্জায়
ভেসে আসে বাসি ডোবা ঘাম
সতেজ সমালোচনার নিরক্ষর শব্দেরা  পোড়া মোবিল-
              ব্যঙ্গ করে দাঁত কেলিয়ে হাসে বারবার
রক্ত মাখা প্রেমিকের শরীর  ডানা মেলে ধরে।।




“কল্পলোক”

১।
শব্দগুলো এলোমেলো 
জালেকচি মাছেদের মতো
ছটফটানি 
         উন্মুক্ত হবার প্রয়াস-
নীরব চোখ রাঙানি উঠে আসে  
         হাওয়ার পাখায় ভরে।

শব্দেরা রোজের পরিধেয় সুতির জামাতে
       নেমে পড়ে কালো পীচের রাস্তায় 
              ভূ-গর্ভের চাপা কঙ্কাল 
       হাওয়ায় দুলে দুলে আওয়াজ করে না

২।
আকাশে সূর্য দেখেছিলাম 
রাতে নীল আকাশের চাঁদ দেখা হয়নি
ভোরের সকাল দেখব বলেই
 জেগে আছি 
               প্রহরীর মতো
ঘটনার পূর্বাভাস ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের জানা অসম্ভব
                       ঘটে যাবার পরে- 
             বাসি খাবার মুখে রোচে না আর


৩।
শব্দ আর নৈঃশব্দের ব্যবধান 
       ভাবের  গুমরানো ভাষা
ক্রমশই প্রকাশ্য... বলে বলে
      ঝুলে থাকবে দেয়ালে
অনন্তকালের রূপকথাগুলো
 বিপরীত মেরুতে- 
অলঙ্ঘিত বিধান আমার জন্যে 
কালো রাতের পাতায় তবুও লিখে যাই
           কালো অক্ষরে না বলা কিছু কবিতা


"অন্তহীন"

১।
রোদে জ্বলে শরীর 
      শরীরের সূক্ষ্ম কোষ
সবুজ মনের প্রকৃতি 
       অরণ্যময় অন্ধকারে 
দিশাহীন পথ
চলতে চলতে ক্লান্ত 
দিশা
      দিশা
                দি
                        শা
কুয়াশা ধোঁয়াশা মাখা

       
২।
কামসূত্রের আগুন জ্বলে উঠুক
কামুক ভালোবাসার অগ্নিশিখা
মিশে যাক সমুদ্রের নীচে মরুভূমি
আহা
তৃপ্তির অনাবিল আস্বাদে


চেটেপুটে নিঃশেষ জলীয় রস
   আল্লাদে নেচে উঠুক হাঙর
উন্মুক্ত স্তনে বসিয়ে দিয়ে যাক
 
কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধসভ্যতার 
         জরাগ্রস্থ বিবর্ণ অধ্যায়- ইতিহাস

       
৩।
অবগুন্ঠনে রতিসাধনায় 
        যৌনাঙ্গের পর্দা হোক উজ্জ্বল
ধর্ষকের ধর্ষিত সময়ের দিনে
মুখ ঢেকে পুনর্বার

অ-মানবিকতার  জন্মজাত  সুসভ্যতা

মৃণালিনী
জন্ম-উত্তরবঙ্গ
শিক্ষা জীবন- বাংলা (এম.এ) এডুকেশন (এম.এড)
পেশা-শিক্ষকতা
প্রকাশিত গ্রন্থ- স্বপ্নের ধূসর রঙ কবিতা - বইমেলা -2017
বাতিলের একটি দিন (উপন্যাস - বইমেলা -2017)
পছন্দ- বই পড়া, লেখা, সিনেমা  গান শোনা এবং গল্প করা

                                            

No comments:

Post a Comment