এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সবর্না চ‍্যাটার্জ্জী


বিভাগ : কবিতা (সাধারণ বিভাগ)


তাও বেঁচে আছি

আমার বাঁচার কথা ছিল না
ছোট্ট একটা কবিতা,বাঁচিয়ে দিল
রক্তপ্রপাতের ছিঁটে যখন গায়ে লেগেছিল,তখন ঝাঁপ দিয়েছি খরস্রোতে!
কে জানতো,একটা শুকনো কাঠের গুঁড়ি কবিতা হয়ে যাবে?
ভাসতে ভাসতে এ পাহাড় সে পাহাড় চরকির মত ঘুরে,পড়লাম সমতলে।
সাথে কবিতা এল বালি চড়ে...
রোদে গা ভিজিয়ে নোনা জলে নামল,
ডুবল গলা,কিন্তু মাথা নয়।
আসলে আমার বাঁচার কথাই ছিল না,
ছোট্ট একটা কবিতা বাঁচিয়ে দিল...
ভেসে এল ঢেউএর সাথে, যেন শব্দে ভরা ডিঙি!
ছুটে পালিয়ে এলাম একলা ঘরে
বন্ধ দরজার পেছনে মৃত্যুকে ভালোবাসছি,
দমকা হাওয়ায় কাঁচের জানলা খুলে উড়ে এল একটা ধূলোমাখা খোলা চিঠি,
তাতে তুমি লিখছো,"আমি আসছি"।
আমার বাঁচার কথা ছিল না,তাও.....বেঁচে আছি।


আমি নারী

হাজার বছর ধরে ধরিত্রীর উপমা মেখে ধারণ করেছি সভ্যতা,
আমার নগ্নতায় বয়ে যায় আগুনের নদী।
সূর্যের নরম রোদ শুকনো করে কোমল গাত্র।
আঙুলের শিরা উপশিরায় টান টান উত্তেজনায় আমি জন্ম দিয়েছি পুরুষ,---- তোমায়।
আমি নারী।
সাদাটে ধূলো মাখা হলুদ ঘাসের মত মাথা নুইয়ে থাকা, সেই নারী।
গলায় পরেছি দামী নেকলেসের শিকল।
দুহাতে গোছা গোছা নারকোলফুল নক্সার চূড় যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ঘাটে বাঁধা কোনো নিরীহ লাজবন্তী গর্ধব!
অপেক্ষার রান্নাঘর দীর্ঘশ্বাসে ফোঁসে,
মোচার ঘন্ট কিংবা রাজশাহী চিকেন রাজনৈতিক ফন্দী আঁটে চারদেওয়ালের হেঁসেলের তাকে।
এলার্ম ঘড়ির মত ছোটে তড়িঘড়ি, সেই নারী।

কিছুটা মিথ্যে অহংকারে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভেবেছ পুরুষ,
         তুমি জানো না, সে তোমার অজ্ঞতা!
নারীকে দুর্বল ভেবে শোষন করেছ, আর,
        প্রশয়ে মহীরুহ গড়েছ আত্মগরিমার।

সেই নারী যার গর্ভে রোপিত হয়েছিল পৃথিবীর বীজ,
তার মুখটিপে প্রতিরোধ করেছো আগুন।
অহংকারী গ্রাসে গিলে খেয়েছে এক একটা নারী শরীর।
অসূর্যস্পশ্যা শৈবালের মত সেই নারীর স্যাঁতস্যাঁতে অকথিত ইতিহাস, উচ্চারিত হয়নি কখনও সোচ্চারে।
নিষ্পেষিত হয়েছে রান্নাঘরের শিলে বাটা মশলার ঘ্রাণে,
দুহাতে গোবর মাখানো,নিকানো উঠোনে।
সমস্ত সখ আহ্লাদ শোক তাপ ভুলে,
চুপিসারে খেটে যাওয়া নিষ্প্রাণ নারীর মন,ভুলেছিল এতকাল তার মর্যাদাবোধ।
সীতার পাতালপ্রবেশ কিংবা দ্রৌপদীর নিস্ফল বস্ত্রহরণ,
আত্মগরিমার ভুলে যাওয়া ইতিহাস শোনায় চিরকালীন এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।

আমি কবিতা লিখিনি আজও নারীর অসহায়তায়।
হাহাকার করিনি দুর্বলতায়।
চাইনি কোনো অমরত্ব নিজের আগ্নিকথকতায়।প্রতিবাদ চেয়েছি শুধু।
বুক ফোলানো পুরুষ দম্ভের আস্ফালনে হাঁসফাঁস নারীর হারানো গরিমার উদ্ধার চেয়েছি।
আমি দাম্ভিক।হ্যাঁ হ্যাঁ আমি দাম্ভিক।
কারণ আমি নারী।।


সবর্না চ‍্যাটার্জ্জী
কম্পিউটার প্রযুক্তি বিদ্যায় উচ্চ ডিগ্রী থাকা সত্ত্বেও উপার্জনের যন্ত্র হয়ে উঠতে চাইনি।সংসারের চেনা শব্দের ভিতরেই খুঁজে পাই অমরতার বীজমন্ত্র।তুচ্ছ যা কিছু, ছায়া ফেলে  মনে,তাই রূপ পায় নানা কলাশিল্পে, কখনো রঙ তুলিতে,গানের ছন্দে, কখনো শব্দে।নিজেকে অবিরত ভাঙাচোরা করে সাহিত্যকর্মীর পবিত্র নিষ্টায় এগিয়ে চলেছি।নিয়মিত কবিতা ও প্রবন্ধ বিষয়ক বিভিন্ন স্বাদের লেখা প্রকাশিত হচ্ছে যে সব পত্রিকায়,তার নাম দেওয়া হল--কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে নিম্নোক্তো পত্রপত্রিকায়--ট্রৈনিক, অতসী,হরিৎক্ষেত্র, তবুও মানুষ,পারিজাত,চারুপ্রকাশ,অজন্তা,কবিমশাই সাহিত্য পত্রিকা,অর্বাচীন,সমবেত(অপেক্ষায়)
ছোটদের ওয়েব ম্যাগাজিনের মধ্যে ---
ইচ্ছামতী ছোটদের মনের মত ম্যাগ,ম্যাজিক ল্যাম্প,জয়ঢাক(অপেক্ষায়)
কবিতার সংক্রান্ত ওয়েব ম্যাগের মধ্যে--
অন্তর্বর্তী শূন্যতা সাপ্তাহিক ব্লগজিন,kolkata ২৪ * ৭ অনলাইন ম্যাগাজিন, ফেরারি(অপেক্ষায়),তরঙ্গ(অপেক্ষায়)।এছাড়া ধারাবাহিক ক্রমশ প্রকাশ্য ফেজবুক পেজ,প্রতিলিপি ফেসবুক পেজ।



No comments:

Post a Comment