এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সতীশ বিশ্বাস


ছড়াক্কা

‘ছড়াক্কা’-য় ‘ঠাকু’মার ঝুলি’


নীলকমল আর লালকমল

এক যে রাজা তার দু’রানি;একজন রাক্ষসী।
দুই রানিরই দুই ছেলে
সমস্ত দিন বেড়ায় খেলে
অজিত ছেলে রাক্ষসীমা’র।
নামটি ‘কুসুম’,মানুষ যে,তার।
অজিত কুসুম দুই ভায়েতে যেন রবি শশী।

রাক্ষসী-মা’র জিভখানা লাল, খাই-খাই দিনভর।
কবে ‘হাউ-মাউ’গানটি গাবে
কচি মাংস চিবিয়ে খাবে
কী করে পাবে একলা তাকে
দু’ভাই যে একসঙ্গে থাকে।
পেটের ছেলের উপর রাগে দাঁত করে কড়্‌কড়্‌।

জো না পেয়ে রাক্ষসী সতীনের দিকে ঝোঁকে,
জিভ লকলক চোখে তাকায়
দৃষ্টি দিয়েই সব চেটে খায়
শুষেই খেল হাড় ও মজ্জা
লক্ষ্মী নিলেন কালশয্যা।
শেষ নিঃশ্বাস পড়ল যখন, রাজ্য ভাসল শোকে।

রাক্ষসীটা এখন শুধু তক্কে তক্কে থাকে।
পেটের ছেলেকে ‘সর সর সর’
সতীন-পুতকে ‘মর-মর-মর’
করতে থাকে সকল সময়
যাতে দু’জন আলাদা হয়।
অজিত মরে দুর্ভাবনায়; সে তো চেনে মাকে।

দাদার কথা ভেবে অজিত নাওয়া-খাওয়া ভোলে/
দাদাকে নিয়ে পালায় দূরে,/
খুব গোপনে বেড়ায় ঘুরে।/
রানি দেখল—‘পেটের পুত্র’/
সেই-ই শেষে হল ‘শত্রু’!/
রাক্ষসীটার মনে রাগের আগুন উঠল জ্বলে।/

এক রাত্রেই হাউ-মাউ-খাউ,গিললো সে হা ক’রে--
ঘোড়াশালে ঘোড়া এবং/
হাতিশালে হাতি,/
গোয়ালঘরে গরু/
হত্যালীলা সারারাতি/
চললো। দেখে রাজামশাই পড়লেন ফাঁপরে।/

পরের রাত্রে রাজার ঘরে ‘কাঁই মাঁই’ ‘কাঁই মাঁই’।
যেই হল হুঁশ এবং খেয়াল,
রাজা নিলেন ইয়া তরোয়াল।
কুসুমকে ধরে এক রাক্ষস।
রানি ছেঁড়ে চুল;কী আক্রোশ!
মারলো ছুঁড়ে রাজার গায়ে; স্ট্যাচু রাজামশাই।

একী কান্ড! রাজা নড়তে পারেন না এক তিল।
কার সাধ্য তাঁকে নাড়ায়।
চোখের থেকে অশ্রু গড়ায়।
মোছার—বসার নেই যে উপায়,
থর থর করে রাজা কেঁপে যায়।
রাজার কাঁপন দেখেই রানি হেসে ওঠে খিল-খিল।

ভেঙে গেল ঘুম। দেখল অজিত—
‘রাত যেন নিশে
মন যেন বিষে,
দাদা কাছে নাই’
দেখতে না পাই,
চার দিক কেন নিঝুম নিশীথ!

‘এক মুহূর্তে বুঝল অজিত চলছে হত্যাখেলা।
সারাঘর জুড়ে গা-ছম ছম!
রানির কাঁকন করে ঝম ঝম।
দাদাকে ধরেছে যে,তার উপর
অজিত সপাটে মারে এক চড়।
পালালো সে ব্যাটা উগরিয়ে দিয়ে সোনার একটা ডেলা।

পেটের ছেলের শত্রুতা দেখে চুকায়ে স্নেহের পাট/
রাক্ষসীরানি খপ করে ধ’রে—/
ছেলেকে চিবায় মুড়-মুড় করে,/
দেখে লোহার এক ডেলা ওগরাতে/
সোনার লোহার ডেলা নিয়ে হাতে/
ছাদে উঠে দেখে-- রাক্ষসদের বসেছে আজব হাট।/

রাক্ষসদের সঙ্গে রানির কথা হল নেচে হেসে।–
‘হুঁম হুঁম খাম্‌-আঁরো খাঁবো
গুঁম-গুঁম-গাঁম দেশে যাবো’।
–‘গঁব্‌ গঁব্‌ গুঁম্‌-খঁম খঁম খাঁ !
আঁমি হেঁথা থাঁকি,তোঁরা দেঁশে যাঁ।
রানির আদেশে সব ভেঙেচুড়ে দানবেরা ফেরে দেশে।

ঘরে ফিরতেই জ্বলে পুড়ে ওঠে রানির গতরখানি।/
মন ছন-ছন,বুক কন-কন,/
পোহায় না রাত,কীযে জ্বালাতন!/
পোড়াল আরাম জিরাম দু’কাঠি,/
বাঁশবনে ডেলা চাপা দিল মাটি।/
কাঁদল শিয়াল,ডাক দিল কাক—শুনতে পেল না রানি।/

রাজ্যে চরম বিশৃঙ্খলা! হৈ-হৈ-হৈ, রে-রে!
মানুষের হাড় ঘরে আর পথে
বাঁচবে না প্রজা আর কোন মতে।
নিজের ছেলেকে খেয়েছে এ রানি,
এ কথা যখন হল জানাজানি,
রাজা হতবাক! দলে দলে প্রজা পালাল রাজ্য ছেড়ে।

‘নদীর ধারে বাঁশের বনে হাওয়ায় খেলে,বাতাসে দোলে/
সে বাঁশ কেটে একটি চাষি/
ডিম দেখেই ভুললো হাসি।/
সাপের—ভেবে, যেই ফেলে,তার/
মধ্যে থেকে দু’রাজকুমার/
অস্ত্র হাতে বেরিয়ে এসেই কোথায় যেন গেল চলে।/

অশৈলী এ কান্ড দেখে,চাষি হারায় জ্ঞান।
ফের তাকিয়ে চাষি তো হা।
নীল ডিমটির খোলস লোহা!
লাল ডিমটির খোলস সোনা
যায়নি কোথাও এমন শোনা।
লোহার কাস্তে,সোনার পঁইচে,বাজু গড়ে কৃষাণ।

চলতে চলতে দু’রাজপুত্র পৌঁছলেন এক রাজ্যে
এখানে রয়েছে ঘোষণা এমন--
খোক্কস যারা করবে নিধন,
রাজকন্যা ও পাবে রাজত্ব।
রাজাকে দু’ভাই জানালো তথ্য—
রাজারপুত্র তারা। সহজেই করবে তাই এ কাজ যে।

কুঠুরিতে রাত জাগে দুই ভাই—নীল আর লালকমল।
নীলের উঠল শেষরাতে হাই,
বলে তুই জেগে থাক,আমি ঘুমাই।
জানতে চাইলে কোন খোক্কস
প্রথমে কিন্তু ‘নীলকমল’ কোস।’
যেই সে ঘুমাল,অমনি প্রশ্নঃ ‘এ ঘরে কে জাগে,বল?’

জবাবে হাঁকল লালকমল, ‘যা। ভাগরে সব তফাৎ।‘
নীলকমলের আগে লালকমল জাগে
আর জাগে তরোয়াল
দপ্‌দপ্‌ ক’রে ঘিয়ের দীপ জাগে—
কার এসেছে কাল?’
‘নীলকমল’ শুনেই তারা সরে গেল তিন হাত।

সবাই ভয়ে কাঁপতে থাকে থর-থর থর-থর।
এ কথাটা সবার জানা
নীলকমলের রাক্ষসী মা।
তাকে হারানো খুবই শক্ত,
তার দেহে রাক্ষসের রক্ত।
খোক্কস হাঁকে, ‘নীলকমল কি না—পরীক্ষা কর।

বড় রাক্ষস বলল, ‘তোঁদের নাঁকেঁর ডঁগা দেঁখি।/
লাল,নীলের মুকুট নিয়ে/
তরোয়ালের খোঁচা দিয়ে/
খোক্কসদের দিল হাতে।/
বলল তারা ঘাবড়ে তাতে,/
‘যাঁর নঁখের ডঁগা এঁমন,নাঁ জাঁনিরেঁ সেঁ কীঁ!/

খোক্কস এবার বলে, তোঁদের থুঁ-থুঁ দেখা কেঁমন?
লাল কমল তরোয়ালে,
প্রদীপের ঘি ক’রে গরম
যেই ছিটোল,অমনি তাদের
পুড়ে গেল গা-ভরা লোম।
আর কি দাঁড়ায়? সব খোক্কসঃ চোঁ-চাঁ পলায়ান।

ফিরে এসেই ‘জিভ দেখাতো বলল তাদের নেতা/
লালের ছিল সজাগ খেয়াল/
দেখাল সে নীলের তরোয়াল/
বললো, টেনে ছিঁড়ব এরে।/
সবাই আমাকে টান দেরে।’/
হাত কেটে যে রক্ত ছুটবে—জানতো বল কে তা!/

খানিক পরে সর্দার আবার বলে, ‘জাগে কে?’/
লালকমলের ঘুম ঘুম ভাব,/
তার উপর সে শান্ত স্বভাব।/
তবুও বললো,স্তিমিত রাগে,/
‘এ ঘরে লালকমল জাগে।’/
বলেই অমনি বুঝতে পারে,কী ভুল করল সে।/       
মুখের কথা মুখে, দুয়ার কবাট ভাঙলো তারা।
ঘিয়ের দীপ উলটে পড়ল।
লালের মাথার মুকুট ঝরল।
লাল দেখল আর রক্ষা নাই,
ডাকল—ওঠ রে নীলকমলভাই।
দাদার ডাকে ঘুম ভাঙতেই ভাইটি দিলেন সাড়া।

গা-মোড়ামুড়ি দিয়েই নীল রাগে পড়ল ফেটে। /
‘ আরামকাটী, জিরামকাটী/
কে জাগিস রে?/
দ্যাখতো দুয়ারে মোর/
ঘুম ভাঙে কে? ’/
উঠেই নীল, ঘি-দীপ জ্বেলে খোক্কস ফেলে কেটে।/

খবর পেয়ে রাজামশাই দেখেন সেথায় গিয়ে,
খোক্কসেরা সব মরেছে
নেই খবরে আর কোন ভুল।
গলাগলি ঘুমিয়ে যেন
দু’রাজপুত্র দুই জবাফুল।
রাজা দিলেন—রাজত্ব ও দু’রাজকন্যার বিয়ে।

রাক্ষসীরানি রাজপুরীতে খবর পেল যখন
বলল, ‘আইরে! কাইরে!
আমি তো আর নাইরে!’
‘-ছাই পেটের বিষ-বড়ি
সাত জন্ম পরানের অরি—
ঝড়ে বংশে উচ্ছন্ন দিয়া আয়’তোরে দুইজন।

সিপাই সেজে, ‘আই!কাই!’ বলে,রাজসভায় এসে/
‘বুকে খিল, পিঠে খিল,/
সোয়াস্তি নাই এক তিল।/
অন্য কোন ওষুধ নাই/
রাক্ষসের মাথার তেল চাই।/
লালনীল বলে,’সে তেল আনতে যাই রাক্ষসের দেশে।’/

যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে--অশথতলে দু’ভাই
বসল এবং শুনতে পেল,
‘আহা,এমন দয়াল কারা,
দু’ফোটা রক্ত দেবে যারা।
ফুটবে যাতে বাছাদের চোখ।
নীল বলল, ‘আমরা দু’ভাই রক্ত দিতে চাই।’

হাসতে হাসতে দু’ভাই তখন রক্ত দিল আঙুল চিরে।
বেঙ্গম সেই রক্ত নিয়ে
নিজের বাসায় ফিরে গিয়ে
চোখ ফোটাল সবশিশুদের
শিশুরা বলে, ‘দেব তোমাদের
কী?’ নীল বলল, ‘কিছু না তোমরা সুখে বেঁচে থাক নীড়ে।

বাচ্চারা বলে, ‘অন্তত বলো কোথায় তোমরা যাবে।
আমরাই দেব পৌঁছে সেখানে,
দু’ভাই চাপলো সে পক্ষীযানে।
সাতদিন সাতরাত্রির শেষে
অষ্টম দিনে পৌঁছাল এসে
পাহাড়ে। মাঠের ওপারে গেলেই রাক্ষসপুরী পাবে।

সেই মাঠ যেই পেরোল,অমনি দু’ভাই শুনতে পায়—
‘হাউ-মাউ-কাউ,
মানুষের গন্ধ পাউ!
ধরে ধরে খাউ’ ;
আরো খেতে চাউ।’
‘আয়ীমা’ বলল নীল, ‘আমি নাতু, নাও না কোলে আমায়।’

শুনেই আয়ী-মা ‘থাম,থাম’ ব’লে,নূলুকে তুলল কোলে।
বলে, ‘মনে তবু হতেছে সন্দ,
পাচ্ছি কেন মনিষ্যি-গন্ধ!
নাতু যদি হয়, চিবিয়ে খাক—
লোহার কলাই; ধন্দ যাক।
‘প্রমাণ চাইরে,তোর আয়ীমা কি মুখের কথায় ভোলে?’

লোহার কলাই ফেলে দিয়ে লাল সত্যি কলাই খেল।
দেখে বুড়ি বলে, সুঁরে গাঁ,
‘ আঁইয়া মাঁইয়া নাঁতুর
লাঁলু নীঁলু কাঁতুর
নাঁতুর বাঁলাই দূঁরে যাঁ! ’
জোড়া দুই নাতি সাথে নিয়ে বুড়ি নিজের বাড়িতে গেল।

‘অছিন অভিন’ রাক্ষসপুরী;মরাপ্রাণী দিকে দিকে।
গাদায় গাদায় মরা
গাদায় গাদায় জরা
গন্ধে ভূত পালায়
দেব ও দৈত্য ডরায়।’
নীল বলে, ‘দাদা,বাঁচাতেই হবে বিপন্ন পৃথিবীকে।’

নিশীথ রাত্রে দুই ভাই জাগে,রাক্ষসপুরী ফাঁকা।
দুই ভাই গেল ইঁদারার পাড়ে।
নীল বলে, ‘দাদা,পোশাক ধরতো।
জলে ডুব দিয়ে তুলে আনে নীল
সোনার কৌটো,এবং খড়্গ।
জীয়নকাটি ও মরণকাটি যে সেই কৌটোতে রাখা।

জীবন ও মরণ দু’কাঠি আসলে ভীমরল ভীমরুলি/
জীয়নকাটিতে রাক্ষস আর/
মরণকাটিতে রানি,/
রেখেছে গোপনে লুকিয়ে তাদের/
নিজেদের প্রাণখানি।/
নীল আর লাল জীয়ন মরণ দুই কাটি নিল তুলি।/

ভীমরল ভীমরুলীর গায়েতে বাতাস লাগল যেই—
মাথা কন কন
বুক চন চন
রাক্ষসদেরও
মাথা টন টন।
রাক্ষসীরানি ঘুমের কোলেতে ধীরে ঢুলে পড়ে সেই।

ওদিকে তখন রাক্ষসদল আসতে লাগল ধেয়ে
তাদের দেখেই নীল নিয়ে কাটি
টেনে ছিঁড়ে ফেলে জীয়নের পা’টি।
রাক্ষসদের পা পড়ল খ’সে।
তবুও যুদ্ধ করে বসে বসে।
‘হাউ-মাউ-খাউ! সাত শত্তুর খাউ।’--তবু চলে গান গেয়ে।

জীয়নের মাথা কাটে নীল;তার ছড়ালো রক্ত ছিটে।
অমনি সকল রাক্ষসদের
মাথাগুলো কাটা পড়ে।
বুড়ির মাথায় জড়ালো দু’ভাই
কাটা নতুন কাপড়ে।
কাটি ও কৌটো নিয়ে শেষে ওঠে বেঙ্গমদের পিঠে।

তিন মাস তের রাত্রির পরে পৌঁছাল তারা এসে।
লাল নীল বলে—কোথায় সিপাই?
মারা গেছে সেই আই আর কাই।
আপন সিপাই দিয়ে লাল নীল
দিল বুকে খিল আর পিঠে খিল।
সে রাক্ষসের কাটা মাথাটিকে পাঠালো রাজার দেশে।

কাটা মাথা দেখে রাক্ষসীরানি নিজরূপ ধরে আজ যে!/
‘করম খাম্‌ গরম খাম্‌!/
মুড়-মুড়িয়ে হাড্ডি খাম্‌!’/
হম্‌ ধম্‌ ধম্‌ চিতার আগুন/
তবে বুকের জ্বালা যাম্‌।’/
বলেই রানি ছুটলেন লাল নীলকমলের রাজ্যে।/

এসে রাক্ষসীরানি বলে হাত তুলে
‘বাহির দুয়ারে খাম্‌! খাম্‌!
লাল বললেন,থাম! থাম!’
তার মনে কোন ভয় নেই
হাসতে হাসতে নিমেষেই
বের করে, দিল সোনার কৌটো খুলে।

অমনি মৃত্যু ঘন্টা বাজলো রাক্ষসীরানিটার
গা ফুলিয়া ঢোল
চোখের দৃষ্টি ঘোল
মরে পড়ে গেল শেষে
প্রজারা বলল হেসে—
মিটলো তো সাধ মানুষের দেশে নিমন্ত্রণ খাবার।   

রাক্ষসীরানি মরতেই গেল রাজার অসুখ সেরে।
রাজ্যে রাজ্যে দিল রাজা ঢোল—
সব্বার মুখে একটাই বোল
রাজাপ্রজা কারো চোখে নেই ঘুম
কোথায় রয়েছে অজিত-কুসুম?
তখুনি আওয়াজ শুনে রাজা বলে,‘দেখতো বাইরে কেরে।

লাল নীল এসে রাজাকে প্রণাম করলেন হাসিমুখে/
এরা দুজনেই অজিত—কুসুম।/
তারপর শুরু বিবাহের ধুম!/
দাঁড়িয়ে অজিত কুসুমের পাশে/
ইলাবতী আর লীলাবতী হাসে।/
দুই রাজ্যের রাজা প্রজা দিন কাটাতে লাগল সুখে।/


এক টুকু বাসা*৬/৫ ডিরোজিও পথ * দুর্গাপুর-৭১৩২১৬। পশ্চিম বর্ধমান। ভারত।      



No comments:

Post a Comment