এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

প্রবীর রায়


প্রবন্ধ


সরস বিষয়

সরসতা অর্থে রসপূর্নতা কিংবা মধুরতা।অতএব সরস রচনাকে রসপূর্ন হতে হবে।,তাতে মাধুর্য থাকতে হবে।বাংলাসাহিত্যেতো সরস রচনায় বাংলা সাহিত্যিকদের অনেকেই উজ্জ্বল।তবুও রসপ্রসঙ্গে বিবিধ চিন্তা আসে,তার বিবিধ প্রকাশ।
সরসতা তো বেঁচে থাকার সম্বল।আজীবন নীরস আখ্যা পাওয়া মানুষটিও গোপনে তার কলসটিকে ধরে রাখে।তাতে সঞ্চয় করে জীবন-প্রবাহ থেকে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম আলোর ছোঁয়া থেকে চারিপাশের আড়মোড়া ভাঙ্গার শব্দ মনের ভিতর প্রস্তুতিপর্ব তৈরী করে,সেই সরসতার কথা আমরা আলোচনা করিনা।

গুণীজন অনুভব করেন কাব্যর।যে কাব্য মানুষ প্রকৃতি থেকে শব্দশিল্পীরা তুলে আনে।শিল্প্রসিক মানুষের নির্মানে নিজের কল্পনা আর অনুভবকে তৃপ্ত করে।কোনও এক জীবন্রসে ভেজা মানুষ তার যাপনে জাগতিক সুখকে অনায়াসে অনায়াসে অবহেলা করে।সাধারন মানুষ তাকে উল্টোপথের পথিক ভেবে এড়িয়ে চলে।রসিকজনেরা জানে তার ভেসে যাওয়ার নেশা।

বলায় যে সরস,তার কথা সবাই শুনতে চায়।সে প্রিয় হয়ে ওঠে শ্রোতাদের কাছে।বেঁ থাকার আপাত শুষ্ক মোড়ক ভিজে যায় শব্দের অলউকিক মায়াজালে। কবি ও কবিতা পাঠক কাব্যরচনায় ও পাঠে উপভোগ করেন কাব্যরস।আদিরস করুণরস হাস্যরস বীভৎস রস সহ নানাবিধ রসে তাকে চিহ্নিত করেছেন শাস্ত্রকারেরা।

এই সরসতা সাধারনজন অন্যত্র খোঁজ করেন ভিন্ন স্বাদ পেতে।ফল ও সব্জীর ভিতরে সঞ্চিত রস।এই সরসতা উপভোগ করতে যান্ত্রিক উপায়ে তাকে রুপান্তরিত করা হয়। এই রস স্থূল জগতের উপাদান।জীবনরসকে উপভোগ করতে হলেতাকে হতে হবে প্রকৃত রসিক মানুষ।

নাট্যশাস্ত্র ও কাব্যশাস্ত্রে নানাবিধ রসের কথা বিভিন্ন সময়ে আলোচিত হয়েছে।তবে এই দুই ক্ষেত্রেই বাস্তবজগতের সাথে কল্পনার জগতের সাযুজ্য খুঁজে পেতে চেষ্টা করেছে রসিক মানুষ।এর মধ্য দিয়ে সে এক সুন্দরকে পেতে চায়,যা তার মনকে দ্রবীভূত করে।

এই রসের প্রতিক্রিয়া সমমনস্ক মানুষের কাছে সমান হয়।একই পরিস্থিতিতে কেউ কেঁদে উঠতে পারে,কেউ অতটা বেদনাবোধ করেনা।কেউ হাসিতে ভরিয়ে দিতে পারে, কেউ অতটা আনন্দবিষয় বলে মনে করেনা।সরসতা তাই সবার কাছে সমান প্রতিক্রিয়া পায়না।

রসসাহিত্য বলতে যে সাহিত্য বিশুদ্ধ আনন্দরূপকে ব্যাক্ত করে-যে রচনা নির্মল আনন্দ উদ্রেক করে তাকেই বোঝায়।রসসাহিত্য মানে শুধু হাসির গল্প মনে করলে বোধহয় ভুল হবে।সাম্প্রতিক রচনাগুলিতে বিশেষ করে কবিতায় যে রস পরিবেশিত হচ্ছে,তাকে গ্রহণ করিতে হলে বুদ্ধির কৌশলে অর্থ খুঁজলে চলবেনা।তাকে মর্মে আনতে হবে।ভাবের ছন্দে শব্দকে অনুসরণ করে তার রস আস্বাদন করতে পারে প্রকৃত রসিক।অতএব রসচর্চা বজায় থাকুক।সরসতা সংস্কৃতির সর্বস্তরে নানা ভাবে প্রকাশ পাক।রসিকজনেরা সেই হাওয়ায় ভর করে ডানা মেলে দিক।

প্রবীর রায়
শ্যামলছায়া উকিলপাড়া
জলপাইগুড়ি
735101
ফোন 9434061794

No comments:

Post a Comment