এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

অনিন্দিতা ভট্টাচার্য্য


কবিতা : সাধারণ বিভাগ



ঋতুস্রাব

আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণীর ক বিভাগ,
বছর বারো হবে
বিশ্বাস করো মোটেও জানতাম না আমি এমনটা যে হবে।
স্কুল বাসও আসেনি সেদিন,
উঠলাম লোকাল ট্রেনের ভীড়ে
কি জানি কার হাতে টানে
স্কার্টের বোতাম গেল ছিঁড়ে।

অবাক আমি তাকিয়ে আছি
পায়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত।
লাগে নি তো কোথাও,কাটেও নি তো
দিব্যি আছি তো শক্ত।
তবে কেন লোক হাসছে?
রক্ত দেখে আমার?
পাশের থেকে আওয়াজ এলো,
"রক্ত নয় থামার"!

আমি তখন সবে মাত্র
বছর এগারো বারো হবো
বলো না কাকু কেমন করে
এ রক্ত থামাবো?
ছিঃ নির্লজ্জ মেয়েছেলে
তোর শিক্ষা দিক্ষা নেই?
মেয়েছেলে হলে এমন
পাপের রক্ত গড়াবেই।

সত্যি বুঝি মা? সত্যি নাকি
মেয়ে মানেই পাপী হয় বুঝি?
না মা! রক্তপাত হলেই মাগো
মেয়েরা মায়ের রূপে সাজি।
ওরা তবে হাসল কেন? ওদেরও
তো মা আছে। বলল কেন পাপ?
মেয়ে হওয়ার আরেক নাম
বুঝি পাপের ঋতুস্রাব?



ফিরে দেখা’১৭

তোমার শিশু রোহিঙ্গা,
আমার শিশু ৪ বছরের 'নির্ভয়া'
তোমার বৃদ্ধ ঘর বন্ধি আমার
বৃদ্ধ অনাহারে অপয়া।

এমন করে ধিক্কার জমছে
সাধের বছর গুলোর ঘাড়ে
তুমি ভাবছ ব্রেকাপ হয়েছে
ঐ মাসের শেষ শনিবারে?

আমার মনিষী আজ উলঙ্গ
সোশ্যাল মিডিয়ার ভীড়ে
গুজরাটও সেদিন ধর্ষিত রাস্তায়,
সহস্রলোক ঘিরে।

এমন ভাবেই বছরখানা সব
কেটেছে অসম্মানের সাথে
আর তুমি ভাবছ রেজাল্ট বলে
ঘুম হয়নি কালরাতে?

আমার অমিতাভ ঝাঁজরা হয়েছে
গুরুং-এর বর্ষণে।
পার্কস্ট্রিট কখনো ওলা রক্তে
রেঙেছে দগদগে ধর্ষণে।

এমন ভাবেই বছর গেছে
Horrible সব বিপদের sign-এ
আর তুমি ভাবছ দাঁড়িয়ে আছো
একঘণ্টা আধার লিংকের লাইনে?



বিদ্ধস্থপ্রেম

তোর আমার সম্পর্কের নাকি অসংযমী রেষ।
ভালোবাসি না।
বেহায়া আমি শরীর নিয়ে ভাবি।
রাত কাটিয়ে সকাল হলে,
প্রেমের দফা শেষ।
ভালো যদি সত্যি বাসি,
নীল কি তুই সঙ্গে আমার যাবি?

তোর প্রেমে আমার শরীর জুড়ে
তখন অশরীরী সত্ত্বা,
আমি যে তোর বিষনীল ঠোঁটের
আদরে ভীষণ নেশাগ্রস্থ।
নখের ডগায় আঁচড়ে করেছিস
আমার নরম প্রেমের হত্যা।
সংযমী ছিল আমার যেসব রাত,
সেসব এখন বন্যতায় বিদ্ধস্থ।


অনিন্দিতা ভট্টাচার্য্য
ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ বর্ষ।
কলমে প্রাণ পাই ইটকাঠ তো রুজিরোজগার,
কবিতা আমার ভালোবাসা।

3 comments: