এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

স্রোতস্বিনী ভট্টাচার্য


কবিতা : সাধারণ বিভাগ



আকরিক

তবুও তুমি পেন্ডুলাম ভাবতে পারো,
বলতে পারো, কবিদের নামে নামে বিভৎস  কাঁটা।
যতদূর অচেনা, তুমি ততটাই নিষিদ্ধ করতে পারো কানামাছি-
সব কিছুর পরেও আমাদের রাতগুলো বেঁচে থাকবে।

তুমি প্রেমীদের বানিয়েছ গৃহত্যাগী।
নীলডানা পাখি, নিষিদ্ধ গোলাপকুঁড়ি, রামধনু বেআইনি দেশটা...
তুমি ভুলিয়ে দেবে প্রিয়তম নামগুলো।
এতকিছুর পরেও আমাদের গানগুলো বেঁচে থাকবে।

আর যতদিন ইতিহাস জানে তোমাদের অসম লড়াই,
সহস্র শতাব্দী খুঁড়ে টেনে আনা টাটকা আকরিক,
রোদেজলে মাখামাখি যতদিন-
সেসব দিনের শেষেই স্বাধীনতা মাথা তুলে দাঁড়াবে।।




শূন্যস্থান

যেটুকু ঘাটতি রয়ে গেছে, মিশে থাক ভ্রুকুঞ্চিত রাগে-
এরপর কোনোদিন, সেসব কবিতা হয়ে যাবে।

দুজনের ঠিক মাঝামাঝি চকচকে বিলাসী টেবিল...
কোনো কোনো স্যাঁতস্যাঁতে তেষ্টা বেঁচে থাকে কবিদের ঠোঁটে।
আপাতত অনাদরে বড় হোক-
আগামীর অন্তমিলে ওরা পাঠকের ঘর ছুঁয়ে যাবে।

গোটাদশেক রঙিন ছবি চাই,
আরও চাই শীতের অন্তাক্ষরি,
একদিন তোমারও নাম একডাকে চিনে নেবে শহর-
কয়েক মুহূর্ত পর ফের মুছে যাবে।।



পালক

ঘুমওড়ানো পালক তখন বারবার করে বলত,
আমার উত্তর চাই না... জানতে চাইনা... জানতে চাইনা কিছু লিখেছো কী আমায় নিয়ে?
উত্তরের বাতাস তবু বলে ওঠে, "ঘরে আয়, সব জানতে পাবি।"

ভেজা পালকের শরীরে অনেক বাতিল হবার ইতিহাস লেখা থাকে,
বিন্দুতে বিন্দুতে মিশে থাকে প্রমাণ-
কত তুচ্ছ আমি।
প্রাণপন বলে,
না। জানতে চাইনা...  প্রশ্ন করিনা... তুমি কী লিখেছো আমায় নিয়ে?
মধ্যাহ্নের সূর্য তবু ডাকে, "কাছে আয় সব বলছি।"

তারপর?
স্বপ্ন দেখার অপরাধ।
হাড় কনকনে বাতাসে সব টুকু উষ্ণতা হারিয়ে,
চড়া রোদের সামনে সবটুকু সিক্ততা ফুরিয়ে
কবিদের পালক পাড়ি দেবে সেই না ফেরার দেশে।

কতটুকুই বা মূল্য তখন?
খসে যাওয়া এক অঙ্গ বই তো নয়…



একা

সন্ধ্যের সাথে সাথে ফুরিয়ে আসে শিবিরের কোলাহল।
অসময় শীতের কোলে জমাটবাঁধা ক্লান্তি-
তুমি যতদূর সম্ভব নিস্ক্রিয় থেকো,
তুমি বেশী করে বুঝে নিও কেন এখন থেমে থাকাই নিয়ম।

যেসব নামেরা প্রতিদিন একবার করে জ্বলে মধ্যগগনে, একা...
যেসব শব্দ যখন তখন নামিয়ে আনে অকালশ্রাবন,
তারা কেউ জানেনা দোকানদারি-
সাহসের কেনাবেচা চড়া দামে।

আজকাল আমরা মাতৃজঠরেই আসি, তোমাদের তেজের পরোয়া না করে।
আজকাল আমরা গোটাদশেক অস্ত্র সাজেই আসি, তোমাদের দানের অপেক্ষা না করে।।

স্রোতস্বিনী ভট্টাচার্য
আমার পরিচয় এইটুকুই যে জন্মসূত্রে উঃ ২৪ পরগণার ভাটপাড়ার বাসিন্দা। কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের শেষ বর্ষের ছাত্রী। ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা। একাধিক পত্রিকা ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। নতুন ধরণের সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী।  সাধারণত বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনেই কবিতা লিখে থাকি।
প্রথম  কাব্যগ্রন্থ কলকাতা বইমেলা ২০১৮ তে প্রকাশ হতে চলেছে।

No comments:

Post a Comment