এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

'এখন তরঙ্গ' দ্বাদশ সংখ্যা/ সম্পাদকীয়

প্রকাশকাল : ৩১ মার্চ, ২০১৮

প্রধান সম্পাদক : জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি
সহ-সম্পাদকগণ :
  • বিজন পণ্ডিত
  • তুলি রায়
  • চন্দ্রাবলী ব‍্যানার্জি




সর্বসত্ব সংরক্ষিত
তরঙ্গ পরিবারের পক্ষ থেকে
শাল‍্যদানী
Founder & Chairman,
Taranga House


                              
সূচীপত্র


■ কবিতা (সাধারণ বিভাগ) :
-----------------------------------------   প্রভাত চৌধুরী,
নাসের হোসেন, অতনু ভট্টাচার্য, নীলাব্জ চক্রবর্তী,
প্রবীর রায়, উমাপদ কর, অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়,
শৈবাল পাল, ভজন দত্ত, তৈমুর খান, নাসির ওয়াদেন, মুরারি সিং, মনোজ দে, জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী, আর্যতীর্থ, উজান উপাধ্যায়, সুদীপ গুপ্ত, দেবযানী বসু, বনবীথি পাত্র, পার্বতী রায়, তুলসীদাস ভট্টাচার্য, ডঃ মীনা মুখার্জী, জারা সোমা, শ্রেয়ণ, আরণ্যক, নীলিমা দেব, অহনা সরকার,
তথাগত নিস্তব্ধ, অসীম মালিক, দেবব্রত ঘোষ মলয়, দেবদূত, অর্ঘদীপ পানিগ্রাহী, শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জী, রুনা দত্ত, মোনামী মন্ডল, বিকাশ ভট্টাচার্য, শুভঙ্কর পাল,
পৃথা রায় চৌধুরী, পারমিতা ঘোষ, চৈতালি দাস,
বিকাশ দাশ (হাওড়া), বিকাশ দাস (মুম্বাই),
সম্পিতা সাহা, রাহুল প্রামানিক, দীপ মন্ডল,
অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়, মানস সবুজ নিয়োগী,
দেবব্রত মাইতি, মৌসুমী ভৌমিক, মানসী গাঙ্গুলী, সোনালী মন্ডল আইচ, সবর্না চট্টোপাধ্যায়,
শর্মিষ্ঠা দত্ত, বন্ধু সুন্দর পাল, মধুমিতা ঘোষ,
অভিলাষ, সোহম হাটুয়া, পায়েল খাঁড়া, সুপ্রীতি বর্মন, অভিষেক মিত্র, সুদীপ্তা পাল, সৌরভ বর্ধন,
লিরিকা বৈরাগ্য, অনিন্দিতা চৌধুরী, সন্দীপ ভট্টাচার্য, পিয়ালী সাহা, দেবারতি চক্রবর্তী, সায়ন্তনী হোড়‌

■ কবিতা (কবিতার ল‍্যাব) :
                    অনুরূপা পালচৌধুরী, অসীম মালিক

■ গদ‍্য কবিতা :
     সৌম‍্যজিৎ আচার্য, সুদীপ ব্যানার্জী, উজান উপাধ্যায়

■ অনুবাদ কবিতা : মলয় রায়চৌধুরী

■ সিরিজ কবিতা :
      পাবলো শাহি, বিশ্বজিৎ লায়েক, সোনালী মিত্র

■ ছড়া : উপাসনা চক্রবর্তী

■ ছড়াক্কা : সতীশ বিশ্বাস, মানবেন্দ্র ব‍্যানার্জী

◆ পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূলক গদ‍্য : রাহুল গাঙ্গুলী

◆ প্রবন্ধ : জয়িতা ভট্টাচার্য, পবিত্র চক্রবর্তী

◆ আত্মজীবনীমূলক গদ‍্য (ধারাবাহিক) :
                                                    প্রভাত চৌধুরী

◆ বেবীটক্ : অমিতাভ প্রহরাজ

◆ মুক্ত গদ‍্য : নীপবীথি ভৌমিক, জয়দীপ রায়, পদ্মাবতী রায় চৌধুরী, সোমনাথ ভাদুড়ী

◆ অণু গল্প :
           শুভঙ্কর পাল, ডঃ মীনা মুখার্জী, রবীন বসু,
অভিষেক মিত্র, সুপ্রীতি বর্মন, মানসী গাঙ্গুলী,
সিলভিয়া ঘোষ, শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জী

◆ ছোট গল্প : অতনু গঙ্গোপাধ্যায়, রিয়া ভট্টাচার্য,
বিশ্বরূপ চক্রবর্তী, শুভংকর পাল, জুই দাশগুপ্ত,
মৈনাক চক্রবর্তী

◆ বড়ো গল্প :
                  অর্ঘ্য দত্ত বক্সী, শ্যামশ্রী রায় কর্মকার

◆ উপন্যাস (ধারাবাহিক) :
                           দেবশ্রী চক্রবর্তী, জ্যোতির্ময় রায়

◆ বই আলোচনা : পারমিতা চক্রবর্ত্তী




ধন‍্যবাদান্তে
সম্পাদক মন্ডলী,
‘এখন তরঙ্গ’
সাহিত্য বিভাগ, তরঙ্গ হাউস





সম্পাদকীয়



‘খর গ্রীষ্মের দুপুর।
হু হু করছে গগগনির মাঠ।
মনোরম আবহাওয়া দেখে
মামদো ভূত কবর থেকে উঠে এল মাঠে।’

(মণীন্দ্র গুপ্ত, কৃত্তিবাস-৬৫)


ঠিক জানিনা, উনি ভবিষ্যতবাণী করে গিয়েছিলেন কিনা, কিন্তু এটা নিশ্চিত জেনে গেছি যে, এই খর গ্রীষ্মের দুপুরে বাঙালি হঠাৎ ‘ধার্মিক’ হয়ে উঠেছে, মনোরম আবহাওয়া দেখে কবর থেকে উঠে এসেছে সাম্প্রদায়িক ‘মামদো’ ভূত। অতঃপর এটাও জানি, বাঙালি আবার বাঙালি হবে, ধর্ম নয়, সংস্কৃতি আর ভাষাই হবে তার মূল পরিচয়।

‘ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ বসন্ত’ বলার সাহস নেই আজ, শুধু বলব, জানি ফুল ফুটবে...জানি বসন্ত আসবে। এইভাবেই থাকবেন মনিন্দ্র গুপ্ত আমাদের মধ্যে, আমাদের কবিতা যাপনে। এই ভাবেই থেকে যাবেন প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট চন্ডী লাহিড়ী, ঠিক যেভাবে আছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায় আমাদের মাঝে, আমাদের সত্ত্বার গভীরে।


            গুটিগুটি পায়ে ‘এখন তরঙ্গ’ হেঁটে এসেছে কিছুটা পথ, অবশ্যই আপনাদের হাতে হাত রেখে। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা ছাড়া চলন বা গমন কোনটাই সম্ভবপর হতনা। যাইহোক, এই সুযোগে ভবিষ্যতে চলার পথের কিছু রূপরেখা আঁকা যেতেই পারে, যাতে আপনারাও আমাদের হাতটি আরও শক্ত করে ধরতে পারেন।

● ‘এখন তরঙ্গ’ আর ‘আঞ্চলিক উপভাষার কবিতা’ ছাপাবে না, ছাপাবে বাংলা ভাষায় লেখা কবিতা। সেটা হতে পারে যেকোনও অঞ্চলের কথ‍্য ভাষা। ‘এখন তরঙ্গে’র কাছে পুরোটাই বাংলা ভাষা, আঞ্চলিক ভাষা বা উপভাষা নয়। সাধারণ ভাবে স্ট‍্যান্ডার্ড বাংলা বলতে যে ধারণা পোষণ করে বাংলা সাহিত্য জগত, সেখান থেকে ‘এখন তরঙ্গ’ সরে আসছে এটা স্বীকার করে নিয়ে যে, পূর্ববর্তী সংখ‍্যায় আঞ্চলিক উপভাষার কবিতা সংকলন ছাপানোটা ভুল ছিল। বিশেষ করে ‘আঞ্চলিক উপভাষা’ এই ট‍্যাগটা ব‍্যবহার করা।

● পূর্ববর্তী সংখ‍্যায় বিশেষ ভাবে বিজ্ঞাপন দিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূলক গদ‍্য আমরা বিশেষ কিছু পাইনি। সংশয় হয়, গদ‍্যের উপর কি কেউ আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেননা? সংশয়টা সংশয় রেখেই, পরবর্তী সংখ‍্যা থেকে গদ‍্যের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূলক লেখা পাব এই আশায় রইলাম।

● তবে এটা ঠিক, এক্সপেরিমেন্টাল লেখার যে ঝোঁক কিছুদিন আগেও লক্ষ্য করা গিয়েছিল সেটা কিছুটা হলেও কমেছে, তার বড়ো উদাহরণ কবিতার ল‍্যাবে কবিতার আকাল। অবশ্য এক্সপেরিমেন্টাল লেখা বলতে অনেকেই মাধুর্যহীনতা মনে করেন, ব‍্যপারটা কিন্তু তা নয়। যাইহোক, আশা রাখি, কলম আবার চেনা ছকের বাইরে পা রাখার সাহস দেখাবে।

● কবিতা আসছে ভুড়ি ভুড়ি, গদ্য খুঁটে খেতে হয়, কেন? ঠিক জানিনা। কবিতা কি এখন বেশি লেখা হয়? হয়তো হয়, ক্ষতি নেই, ভালো জিনিস। মানুষ তো অন্তত কবিতায় বাঁচছে। তবে পরবর্তী সংখ‍্যা থেকে কবিতার সংখ্যা যাতে একটু কম করা যায় সেদিকে একটু নজর রাখা হবে।

যাইহোক, আপনারা এবারের সংখ‍্যা পড়ুন, আশাকরি ভালো লাগবে, আর আশা রাখি, এইভাবেই আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা পেতে থাকব আমরা।


জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি
Chief Editor at 'এখন তরঙ্গ'

নাসের হোসেন



কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




গান

স্টেজের উপর দিয়ে একটা অজানা পাখি উড়ে গেল।
কী পাখি, কী পাখি, ভাবছি কিন্তু মনে পড়ছে না
অথচ এত চেনা বলে মনে হচ্ছে অনেকক্ষণ।
এরকম হয়, যখন এমন বিস্মৃতির ঘটনা ঘটে
তখন অন্য কোনো ঘটনার মধ্যে ঝুঁকে পড়ি
যেন-বা নদীর জলে ঝুঁকে পড়ে নিজের মুখ দেখছি।
লোকে বলবে, নার্সিসাস, আমি বলবো জলের মধ্যে
একটা অদ্ভুত রকমের ডলফিন দেখছি, দেখা যাক
তাকে অতল জলের থেকে উপরে তুলে আনতে পারি কিনা
ঠিক তখনি বিশাল সাইজের ডলফিন জলের ভিতর
দিয়ে এসে জলের উপর উপর দিয়ে বাতাসে লাফ দিল।
আমি টেলিপ্যাথির মতো মনে মনে তাকে জিজ্ঞেস
করলাম, চিনতে পেরেছো আমাকে চিনতে পেরেছো
উত্তরে সেউ ডল্ফিন যেন-বা মনে-মনেই বললো
ইএন চিনবে না, তুমি তো রজার পেনরোজ, বলো
ঠিক বলেছি কিনা। আমার মনে হল সে ঠিক কথাই
বলেছে। স্টেজের উপরে আমার নাতি গিটার
বাজাচ্ছে। গাইছে, এসো ত্রিভুবন, এসো ত্রিভুবন।


******

অতনু ভট্টাচার্য



কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




আরেকটা সিগারেট ধরানোর আগে

আরেকটা সিগারেট ধরানোর আগে
আবছা মতো শুনতে পাচ্ছিলাম

কিন্তু,সিগারেটের দাম আরো বাড়লে
আমি তো লাল-নীল-কালো-সাদা যে কোনও
সুতোর বিড়িতে নেমে যাবো

ঠোঁটে বিড়িপাতার তাপ মাপতে মাপতে
একটা স্বপ্নের কাউন্টার স্বপ্নে
ঢুকে দেখবো

আমার-ই পছন্দের সিগারেট
অথচ যতগুলো আঙুল আর ঠোঁট
কোনওটাই আমার না




দাম্পত্য

‘প্রকৃত প্রণয় ও বিবাহ’ তুমি পড়ছো
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর...

আমিও কম্পিউটরের সঙ্গে দাবা খেলছি

সারাদিনে বড়জোর দুবার
সন্তান বিষয়ে তোমার সঙ্গে কথা হবে

আমাদের আলাদা আলাদা ঘরে
দুই প্রতিদ্বন্দী আলাদীন !


অতনু ভট্টাচার্য

নীলাব্জ চক্রবর্তী





কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




কড়কড়ে শ্রেষ্ঠ কবিতারা

উঁচু রাস্তাটা ওখানে
ঢালু হতে হতে
রাজহাঁস-বিষয়ক-স্মৃতিতে মিশছে
এই ভাঙা গানটা
একটা দশার ভেতর
পরিষ্কার একটা সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে
ব্যবহার করার পর খুলে রাখা যতিচিহ্নের ভেতর
আসতে চাইছে
ভালো শব্দটা প্রাক্তন শব্দটার পাশে
মাঠ হয়ে
সাদামাটা কতগুলো কম্যুনিকেশনে
কালচে পুকুর হয়ে
এসব আউট-অফ-ফোকাস পংক্তি নিয়ে
পালে পালে কেমন
কড়কড়ে শ্রেষ্ঠ কবিতারা উড়ছে...



স্বপ্ন

এরকম অপেক্ষার দিনে
আমি আস্তে আস্তে শরীর মেশাচ্ছি
দৃষ্টি পড়তে পড়তে
আর ভাবছি
আমার বিষাদ মোটেও নীল রঙের নয়
তবু
সুর লিখতে গিয়ে
রিয়ালি
বারবার অগাস্ট লিখে ফেলছি
আর নিজেরই দু’পায়ের ফাঁকে দাঁড়িয়ে দেখছি
গাছেদের ছবিরা কেমন বড়ো হয়ে উঠছে
পারফোরেটেড স্বপ্নদৃশ্যগুলোয়



নীলাব্জ চক্রবর্তী
জন্ম – অগাস্ট ১৯৭৭

প্রকাশিত বই –

  • পীত কোলাজে নীলাব্জ (জানুয়ারি ২০১১, ৯য়া দশক)
  • গুলমোহর... রিপিট হচ্ছে (ই-বুক) (নভেম্বর ২০১৩, বাক)
  • প্রচ্ছদশিল্পীর ভূমিকায় (জানুয়ারি ২০১৪, কৌরব)
  • লেখক কর্তৃক প্রকাশিত (জানুয়ারি ২০১৭)
  • আপনার বার্গার আরও মজাদার বানিয়ে তুলুন (জানুয়ারি ২০১৮, ঐহিক)

ভালোলাগা – গানের পুরনো আর কবিতার নতুন।

স্বপ্ন – মনের মতো একটা শর্ট ফিল্ম তৈরী করা।

প্রবীর রায়




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)



বদল

পাতাকে পাথর বলে ডেকে যারা খুশী হয়ে খুব মত্ত থেকে ছিল
কিছুদিন বাদে খুব ভারী হয়েছিল সেই নাম
তবু তাকে তুলো বলে ডেকে ওড়াউড়ি করতে পারেনি কখনও
তার শৈশব থেকে জীর্ন বাদামী স্রোত এইখানে অচেনার মত



ভাস্কর্য

পার্কের কোন আর রাস্তার মোড়ে মানুষের মত করে রাখা আছে যাদের পুতুল
তাদের সম্মিলিত মিছিলের সম্ভাবনা নেই
এই ভঙ্গী বিবেচিত হয়েছে যেই কালে তার ক্ষয়ে আজ বিড়ম্বনা
সারিয়ে দেওয়ার মত সমকাল কে বানাবে

প্রবীর রায়

শ্যামলছায়া উকিলপাড়া
জলপাইগুড়ি ৭৩৫১০১
ফোন ৯৪৩৪০৬১৭৯৪

উমাপদ কর




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)

                 

টুকরো কবিতা

১৩
জলে এক ছায়া পড়ে আছে যেভাবে থাকে
কার ছায়া, কোন জলে
আমার ছায়া হয়ত তোমার ওপর অথবা তোমার টলটলে
তোমার ছায়ার কাছে ঋণ জমে আছে বিন্দু বিন্দু
এই সকালে যেমন কাঞ্চনজংঘা ঋণী এক লেকের কাছে



১৪
নামছি আর নামছি, নীচে এক ক্ষুদ্র জলাশয়
কতটা নামলে পা আদৌ বিরাগভাজন হবে না
কতটা চোখ যেতে পারে জলের কাছে
জল শুয়ে আছে, আমার প্রতিটি পদক্ষেপ গুনছে
আর উল্লসিত হয়ে পড়ছে একটু ছোঁয়া পাওয়ার আশায়, দূরত্ব কমছে



১৫
উঠছি আর উঠছি, যতটা উঠলে ৩৬০ ডিগ্রি দেখা যায়
হাঁটু কি পারবে এতটা সইতে!
মন যে মানে না, মনকে কষ্ট দিলে বিধিসম্মত সতর্কীকরণ
নয় দিকে ছড়িয়ে আছে আকাশ, চুপ এবং আলোকিত
আর কয়েকটা মাত্র ধাপের কাছে এসে আমি তো বসে পড়তে পারি না



১৬
নামছি আর উঠছি, উঠছি আর নামছি, এই-ই লীলাক্ষেত্র
এই-ই বনমোরগের ঝুটি, একবার ছুঁয়ে দিতে চাই
এই-ই লাবণ্য, কলমের ডগায় ভর করে ছড়িয়ে পড়ছে
আমার যে কী করার সেটাই ভেবে দেখছে নাম না-জানা ক্ষুদে অজস্র ফুল
পুবের দিকে ঠিক সেই সময়েই কে যেন ঝলকে উঠছে চূড়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে

উমাপদ কর

অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




আস্কারা

প্রিয় হামাগুড়ি
এই শূন্য         এই জরুরী হঠাৎ
চিহ্ন রেখে গেল অপরাধের কোনো
স্পর্শ যখন

মেয়েটার কাছাকাছি নদীর ছায়া
খুলে ফেলা শরীর

আমি পাতের বুকে  
সামান্য লবণ নিয়ে    নতজানু ছিলাম

পায়েরা তখন বড় হয়ে গেছে  
জিভের ওপর এসে পড়ছে
সেই             
                 গৃহস্থের ধারালো দুপুর  
                 
                ফেলে দেওয়া পুরোনো ইঙ্গিত




পুরোনো বয়ান

বিনুনীর ভেতর
পাড়াদের রাস্তা ফুরোয় না
কথারা বন্ধ হয়ে গেলে
নেভা আলোর চেয়ে সুখ আর নেই

দুটো বৃষ্টিদিনের কথাই শুধু লিখে রাখতে পারি
পারি কিছুটা জেনে যাওয়া
এই  আসপাশ                    মাত্র শুয়ে থাকা

বন্ধ মানুষের শরীরে কোথায়  অ্যাব্রড থাকে
কোথায় নোটিশ ঝুলিয়ে দিলে
হাত গুলো সরে যাবে নখের কামড়ে

সাইকেলের তালা আজো খুলতে পারছে না কেউ
পারছে না পাসওয়ার্ড ভেঙে দিতে

আমাকে  কাজে যাবার কথা বোলো না আর।
পাতার ফাঁকে ফাঁকে কাজটাও মুছে গেছে

কাঁধ থেকে নেমে আসা চিরকূট লিখে




কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে গেছে

পাতা খুললেই আড্ডা আর ছবি সহ মানুষের নাম। পৌঁচ্ছে যাচ্ছে ওদেরই ঠিকানায়। দৃশ্য থেকে খালি শোনা যায় মাইলফলক। আর একটা নিঃসঙ্গ দিন কেবল মায়া ভাবছে মায়ের জন্য  মন্দিরের জন্য।
মিক্সি কিনেছে ওরা আর রাজ্য পুলিশও। বাজার থেকে এসে গেলে তুলে দেবার সমস্ত সরঞ্জাম।
কাহিনী এভাবেই শুরু হয়। তারপর সাক্ষর বিক্রি হবে ভোরের কাছে। জেগে থাকা নদীর কাছে।
ফুলের পাপড়িতে আর জল ধরছে না। যেমন গাইছে না গায়ক বিস্মৃতির পাগল ছাড়া।অস্থির ছাড়া।
আমার মা আর বোন হাটঁতে হাঁটতে চলে গেছিল চাষাদের ভেতর।ওরা তখন অলীকপথ ধরে কেটে যাচ্ছে আরো একটা পুকুর।বোঁটাদের আঁঠার রহস্য।
তবু ক্যালেন্ডারকেই এখনো বিশ্বাস করি।  পৃষ্ঠা থেকে বেরিয়া আসা কপাল আর হলুদ ।
আপাতত বৃষ্টি লেখা হোক বোঁটার দুধ  ছাড়াই।
শিশুদের ঠোঁট ছাড়াই  

অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়

65,DESHBANDHU NAGAR
P.O.& DIST.JALPAIGURI
735101
MOBILE NO.
9434746600/ 9609734155 / 8967892989


শৈবাল পাল




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




আত্মরক্ষা

এক চিলতে সুখ কিনতে চাই নি কক্ষনো ,
জানতাম সুখ কি কেনা যায় ?
মুখেই প্রকাশ পায় ,তাই স্বস্তিতে ছিলাম মনে মনে ।
এক একসময় পিচ্ছিল পথে চলতে চলতে
বিকৃত মুখে শাস্তি চেয়েছি কখনও গোপনে ।
তবুও পথ হারাই , ঠিক পথের হদিশটা খুঁজেই যাই ,
মূল বিষয়টা থেকেই যায় চিন্তা ভাবনায় ।
যদিও মাঝে মাঝে চিঠি পাঠাই ,
তদারকি না থাকায় ,
সেটাও চলেই যায় সর্বদাই ভুল ঠিকানায় !!!



বসন্ত যখন

শরীর যখন মেতে ওঠে শরীরের ঢেউ ভাঙ্গাতেই ,
কোমলতা মধুর লাগে ঠিক যেন কোমল ছোঁয়াতেই ।
বাগানে কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলি খসে খসে পায় তোমার ছোঁয়া ,
এমন ভাবে যেন লুকিয়ে চুরিয়ে ,
তোমার শরীরের ভাঁজ খুঁজে নেওয়া ।
বাগানের ফুলের রং দেখে বুঝতে পারি ,
অন্য ঋতুর সাথে কোথায় বসন্তের প্রভেদ ?
হয়তো এই বাগানে বসন্ত চির বিরাজমান ,
হয়তো বা অন্য ঋতুর প্রবেশই নিষেধ !



প্রেম (১)

ছোট্ট টুনটুনি পাখি যেমন বাসা আগলে
আগলে রেখে দিতে চায় ,
তেমন করে আগলে রাখতে রাখতে
পেড়ে ফেলি এক ঝটকায় ।
দেখি , তুমি থাকো সমর্পণের ভঙ্গিতে
দাঁড়িয়ে , ঘৃণার ভঙ্গির বদলে ,
গ্রহণ করতে গিয়ে থমকে যেতে পারি কই ?
নজরটাই চলে যায় শরীর দখলে ।
তোমার সমর্পণ আর আমার গ্রহণের মাঝে দাঁড়ায়
সমস্ত তার কৃষ্টি নিয়ে সময় ,
জ্বলতে থাকে হাজার বছর ধরে চলে আসা নিয়ম ,
চলতে থাকে আমার ভিতরে অনাসৃষ্টির প্রলয় ।


শৈবাল পাল