এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

ডঃ মীনা মুখার্জী




কবিতা (সাধারণ কবিতা)




" রাত জাগানিয়া কড়া নাড়ে"


                       (১)
ফেলে আসা দিন গুলো প্রেম সঙ্গে করে
ময়ূরাক্ষীর তীরে এখনও অপেক্ষায়৷
হয়তো বা রঙীন ফোয়ারা ছড়ায়৷
          ঝুলে পড়া সূর্য্যটা
                  গোধূলির ছায়া মাখায় জলে৷
অফুরান ক্লান্তি আর অনুতাপ ধাক্কা মারে
                   আঘাটায়,অবেলায়.........


                       (২)
   
যখন মাঝরাতে প্রতিদিন কবিতা শোনাতাম                       তোমায় .....
তখন পূর্ণিমার চাঁদ উঁকি মারতো জানলায়,
                                     হয়তো বা ঈর্ষায়......!
চন্দ্রদহনে ঠিক তখনি
             ঝপ্  করে আর একটা প্রেম
                      এলো জ্যোত্সনা মেখে
                                জোনাক ডানায় !


                        (৩)

সারাদিন নিঘুম আজকাল ,
           গোটা রাত ও মত্ত অভিসারে......
                       প্রেমের কবিতা  হাতে.......

আকাশে বিক্ষুব্ধ ঝড়  .......
                মহুল ডালে দোয়েল ফিঙ্গে......

সব ভালবাসা ছুঁড়ে—— প্রিয় !
                  কি নিষ্ঠুর না-চেনার ভান !
        


                         (৪)

উষ্ণ -বীজ উত্তাপ নিয়ে
             বাঁচার এক গঙ্গা সাধ—
অথচ সে রক্তে কত নীল বিষ......
আহা তোর দ্যুতিমাখা চোখে জল
                        —ঠিকরে বেরোয়....
আমি স্বপ্নেই ডুব দিতে চাই৷


                       (৫)

প্রতীক্ষায় স্থাণু হয়ে থাকা———
                   সে কল্পনারা
একযোগে বিদায় নিতে চায়৷

আমার ডানায় কি জীয়ন কাঠি?
           স্বপ্ন বালা
এক সকাল রোদ মেখে,
        ফিরে যা রংছুট দিনের মাঠে.......৷






অণুগল্প




"খুঁজে- ফেরা"
          
        অকুন্ঠিত শিশুর সুরেলা স্বর,বিস্মিত আমরা সাত সকালে৷
       —বিস্কুট দাও ন৷
     বাইরে গিয়ে প্রশ্ন করি—
     —স্কুলে যাসনি কেন ভূত?
      —ল্যাট হ্যল্যোঁ যে৷তুমরা ঘরে থাকবেক ন৷
      —নাঃ ,বিবেলে আয়৷
      —ক্যানে দাদা?
      —দাদা ভাঙ্গা পা নিয়ে দৌড়তে পারবে না বাবা৷

     বাবা,মা ও দিদির না ফেরার দেশে যাওয়ার পর প্রায়ই এ আস্তানায় তার আর্বিভাব হয় ,দুধ-বিস্কুটের লোভে৷ইচ্ছেমত উদরপূর্তির পর বহু কষ্টে স্কুল পাঠানো হলো তাকে৷উদোম নাচন করতে করতে মিনিট কুড়ির মধ্যেই আবার আগমণ ভূতোর৷
         ক্র্যাচে ভর দিয়ে রজত দরজা খুলে আশ্রয় দেয় জ্যান্ত সরল নিষ্পাপ ভূতটিকে৷
       —চলে এলি যে?
       হঠাৎ গর্জে তাকায় দাদার দিকে ৷এক নাগাড়ে প্রশ্নরাজির তীক্ষ্ণ বাণ ছোঁড়ে সেই ক্ষুদে!
        —থাকবক নাই ইঠিঁয়ে হামি৷তুরা হমকে পাচার করবি৷মোর কিটনি বিকবি লয়?
       —ওঃ বাব্বাঃ বড্ড পাকা দেখছি তুই!
       —তা বল্ কেন চলে এলি?
       —হমকে খিচড়ি ভাল লাগেনি৷সুবাই পছরায় হমকে তুর দিদির কি হঁয়্যেছিলি?মিস বলেক—
    —হতভাগা সুবার মাথা খেলিস৷
   — তু বল তো দাদা হামি কি উয়াদের মাথা খালি?তুরা কত রকত চড়ালি তাও তো দিদি মরলি!
   
      রজতের স্মৃতির ক্যানভাসে বিভিন্ন রঙের আঁকিবুকি৷কোন্ মর্মর অরণ্যে ভূতোর পথ গেছে হারিয়ে,কোন্ বাঁকে?শরাহত পাখার সকরুণ স্পন্দন ধ্বনি স্পন্দিত বিধাতার প্রতি৷পুন্জিত আর্তনাদ মৃদুল বাতাসে রণিত রজতের গুন্জনে——
     "আজ আকাশের মনের কথা ঝরোঝরো বাজে..
      সারা প্রহর আমার বুকের মাঝে "!!!!
      উদ্ভ্রান্ত দু 'চোখে মা-বাবা-দিদির খুঁজে ফেরা কবিতা গাথা!!!




ডঃ মীনা মুখার্জী

No comments:

Post a Comment