কবিতা (সাধারণ বিভাগ)
কোলাজ
সেই আবার ফিরতেই হবে-
বর্ষণসিক্ত পথ বেয়ে,
চোখের জলের নোনা পাতায়।
অভ্যাসেই ধরে রাখে চিরকাল,
ক্ষয়ে যাওয়া অন্তঃসারশূন্য প্রেম,
দু এক আঁচড়ে, কবিতার খাতায়।
কৃষ্ণপক্ষের একান্ত নিবিড় রাতে,
দুচোখের মাঝে আঁকড়ে থাকা চিরঘুম,
জানলার পাশে নষ্ট চাঁদের বেদনায়-
একলা জেগে জোনাকিরা, রাত নিঝুম।
ভুলেছে পথ, অচেনা নাবিক, চেনা বন্দরে,
ঠিকানা হারিয়ে একলাটি উড়ো খামে।
নারীর শরীরে বহমান ভালোবাসায়,
স্মৃতির কোলাজে সাজানো এলবামে।
অনুগল্প
বহুরূপী
সোনাঝুরি হাটে দেখেছিলাম লোকটাকে।রাক্ষসের বিভৎস মুখোশ মুখে। সামনে কালো চাদরে ছড়িয়ে কিছু নোট, খুচরো পয়সা।
মিঠি বহুরূপীটাকে দেখেই আতংকে দৌড়ে মাটিতে আছড়ে একেবারে রক্তারক্তি কান্ড ঘটিয়ে ফেললো। আজই কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে মিঠি আর ওর মাকে নিয়ে দুদিনের ছুটিতে ঘুরতে এসেছি। আর প্রথমদিনেই এই ঘটনায় মাথাটা চড়াৎ করে গরম হয়ে গেলো।
শাল্লা, বাচ্চাদের ভয় দেখিয়ে টাকা রোজগারের ধান্দা না? রেগে লোকটার মুখোশটা একটানে খুলে কাঁধ খামচে ঝাঁকিয়ে দিলাম। মুখোশের নিচে পিচুটি পড়া করুন নীরব মুখটা চেয়ে রইল শুধুই।
হাট ঘুরে ফিরছি। পিছনে বাবু ডাক শুনে থমকালাম, সেই লোক।
হাতে একটা খেলনা একতারা। বিরক্তি মুখে তাকাতে, বিব্রত মুখে বলল, ঘরে ঠিক খুকির বয়সীই আমার ছেলে আছে বাবু। ক্যান্সারে ভুগছে, গরীব বহুরূপী আমি ভিক্ষা করেই ছেলের চিকিচ্ছের খরচ চালাই। খুকীকে ভয় দেখাতে চাইনি। শুধু ভুল বুঝবেন না বাবু, তাতে আমার ছেলের অভিশাপ লাগবে।
নাও মা, মিঠির হাতে একতারাটা দিয়ে, আমাদের হতভম্ব করে একটা গরীব বহুরূপী বাবা হাটের ভিড়ে হাঁটা লাগালো।
সমাপ্ত***
No comments:
Post a Comment