এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




নারী দিবস
         
বর্ণচঞ্চল গোলাপ --রজনীগন্ধা
         অথবা বেণারসী , অলংকারে ও না
অজস্র ছুঁয়ে  যাওয়া অভিশাপে রাঙা তার ঋজু শরীর ।
কখনো পার্ক স্ট্রিট, কখনও মধ্যমগ্রামে ধূলিসজ্জায়,
সভ্যতা এখানে মুখ ঢাকে নিঃসীম লজ্জায় ।

মোমবাতি শোক -- কবিতার বাণ -- প্রতিবাদের তীরে তীরে এ পৃথিবী মুখর, বিরস ।
তবুও উঠুক আরেকবার সূর্য,
রাত্রির শেষে আলোয় উদ্ভাসিত নারী দিবস ।।



কেন আমি নারীকে দেখি না

কেন  আমি নারীকে দেখি না
অদ্ভুত, জনে জনে নারী নারী বলে ডাকে
ভাবতে ভাবতে কেবলই গভীর রাত্রি নেমে আসে
আমার এই পৃথিবীতে

দেখি বোবা কান্নায় চুপি চুপি মুখ ঢেকে
খালি পায়ে কারা যেন কাঠফাটা রোদ্দুরে চিরকাল
বাড়ি ফেরে অথবা বাড়ি থেকে কোথা যেন যায়
কোথা যেন যেতে যেতে কোথায় হারায়
আমার এই ধূসর গ্রাম --শহরের ব্যস্ত ভীষণ ভিড়ে

ওই ক্লান্তিহীন আবহমান শক্তির রাত্রিদিন ঘাম  আছে ,,পাখিদের মতো থাকার জায়গা আছে
কোন ঘর নেই, বসতি নেই, সভ্যতা নেই
সারাজীবনের স্বপ্নের সাম্রাজ্য তার
টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে মিশে যায়
মিশে গিয়ে জীবন্ত ইতিহাস হয়ে যায়

ঝাঁসির রাণীর উত্তরসূরি  সর্বহারার মুকুট পরে
এক গরম চাদর গায়ে আকাশে চেয়ে থাকি
মেঘ থেকেও বৃষ্টি নামে না
এখানে মেঘবালিকা ঝরতে পারে না , কেবলই
হাওয়া ভেসে যেতে যেতে চেয়ে থাকে
নীরব ধূসর পৃথিবীর দিকে

রূপকথার অসংখ্য পাখি ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে
উড়ে যায় বর্ণময় এক সীমাহীন দিগন্তে
আমি এই দিগন্তকে ধূসর, ধূসর, কেবলই ধূসর
দেখি কেন?  তবে কি বর্ণান্ধ আমি ?

শীতার্ত এই অন্ধকার পৃথিবীতে
আমি কেন এই  চর্মচোখে নারীকে দেখি না --- কোথায় দেখি না , কোন কাউকে দেখি না !
দেখি তার সজ্জিত শরীর, ভীরু পদধ্বনি  আর অবসন্ন করুণ চাহনি
তবু দেখি তাকে দলে দলে নারী নারী বলে ডাকে !
দলে দলে নারী নারী বলে ডাকে
কেন আমি আজো নারীকে দেখি না !

অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়
কবি পরিচিতিঃ
বর্তমান বাসস্থান বীরভূমের লাভপুর।
"কবিতার রঙবেরঙ" সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। পেশায় শিক্ষকতা আর নেশায় কবিতার সাথে অবৈধ মত্ততা । এছাড়া কবিতা আবৃত্তি করা এবং গান শোনা অন্যতম শখ ।


No comments:

Post a Comment