মুক্ত গদ্য
ঘাস কাটার কাঁচি
ওফ! এবার থামো। থেমে যাওয়ার রাস্তায় না হয় কিছুক্ষণের জন্য এসে দাঁড়াও ! আসলে, সকাল হচ্ছে এবার। ভোরের জলকণা ছুঁয়ে ছুঁয়ে সূর্য শরীর যে নতুন এক পাখির ডাক রেখে যায়, তারই নাম মূলত সকাল। জানালাটা খুলে দিই এবার, অন্ধ রাত ভোরের স্নান সেরে এখন সকাল দেবগৃহে দেবারতি সাজাতে নিমগ্ন। কিছু পরিচিত পাখির ঠিক এই সময়েই ঘুম ভেঙ্গে যায়। যদিও কেউ কেউ ঊষার আলোয় স্নাত হয়ে এখন দেবগৃহে ! আর ঠিক এই সময়েই ভেসে আসে নিকট বাতাস ছুঁয়ে ঘাস কাটা কাঁচির আওয়াজ। কচ্ , কচ্, কচ্। যখন ছোটো ছিলাম তখন মায়ের কাছে শুনেছি, সবুজ তৃণেরা ঊষসীর নম্র তাপ মেখে শিশির বাতাসে স্নান সেরে নিতে খুব ভালোবাসে। তাই এই মুহূর্তে ওদের শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে বয়ে যায় স্নান সুগন্ধী। তারপর ভোরের কথোপকথন যখন সকালের পথ ছুঁয়ে যেতে চায়, ঠিক তখনই আসে এক মালি কাকু। ওদের ভিজে নরম শরীরকে পরম যত্নে মুছে দিয়ে পরিচর্যা শুরু করে ওদের সেই মায়াবী কাঁচি দিয়ে। সূর্যের ক্রম বর্ধিত আলো আর কাঁচির ধারালো শব্দটা !! উফ! ওরা কাঁদে জানো ! এতো আদর যে ওরা চায় না আর ! শুধু দু'হাত তুলে বাঁচতে চায়, একমুঠো আকাশ দেখতে চায়, মালি কাকুর কাঁচিটা বড়ই নির্মম, তারও অধিক নিষ্ঠুর মালি কাকু।
কচ্ কচ্ কচ্... আবার সেই শব্দ। ঘুমের দেশে যাওয়া ঘুমেরাও বুঝি আজ ভীত সন্ত্রস্ত। আসলে কিছু কিছু সময় রাতের অন্ধ রঙ'ই বোধহয় শান্তির, ভোর আর সকাল আলোর চেয়ে।
নীপবীথি ভৌমিক |
No comments:
Post a Comment