এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সিলভিয়া ঘোষ




অনুগল্প




পেশাদার

রাত প্রায় একটা হবে, শীতের রাতে একটা মানে বেশ রাত তাই বাইকটাকে জোরে চালিয়ে নিয়ে ফিরে চলেছে রাতুল তার গন্তব্যের দিকে।
আজ বেশ হাল্কা লাগছে, একটা চাপা টেনশন যে  ছিলো তা এ ক'দিন তার চালচলনে বেশ ভালোই প্রকাশ পেয়েছে, অনেক বার ধরা পড়তে পড়তে ও বেঁচে গেছে।

আজ, মাথাটার যন্ত্রণা অনেক কম। নিজের মন থেকে বলিউডি মস্তির গান, গলা দিয়ে যেন হুড়হুড়িয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে! রাতটা বেজায় ঠাণ্ডা, হাত পা অসাড় হয়ে আসছে। বাইক চালাতে চালাতে পিছনের দিনকটার কথা আরো একবার মনে করতে লাগলো সে!

দীঘা, মন্দারমণি, রায়চকের মতোন জায়গুলোতে    ছোটখাটো রিসর্ট গজিয়ে ওঠায় মানুষজনের উইকেন্ড ট্রিপটা ভালোই হয়। একথা আর কেউ না জানুক তা রাতুলের মতোন ছেলেদের জানতে বাকী নেই।  সেইজন্যই রায়চকের পর কাল আবার মন্দারমণি যেতে হবে। শেষ রাত টুকু তার নিজের বেডরুমে কাটাতে চায় সে। আজ সকালে বের হবার সময় মনে মনে রাতুল ঠিক করে নিয়েছিল কি করতে হবে তাকে ...

দুদিন ধরে অত্যন্ত চাপ নিয়েছে সে, খুব
সন্তর্পণে ছক্কাটা আজ হেঁকেছে। রাতুল রিসর্টের 9নং ঘরে যখন পৌঁছালো তখন তার চোখ বেঁধে দিয়েছে  রিসর্টের ম্যানেজার। এটাই ছিলো এখানে কাজ করার শর্ত, তাই তো টাকা টাও বেশী এখানে পাবে সে।
দেখার উপায় নেই ঘরের ভিতর কার সেবা করতে যাচ্ছে সে। দেড়দিন  চোখ বাঁধা অবস্থায় যার সেবা করেছে সে, এটুকু বুঝেছে সে নারী হয়েও যেনো পুরোটা নারী না।

চোখ বাঁধা অবস্থায় ঘরে যখন ও প্রবেশ করে তখন ওর হাত দুটো যার মুঠোর মধ্যে চলে আসে তাকে নারী ভাবতে ভয় হয় রাতুলের। তারপর এক নিমেষে ওর  ঠোঁটের উপর নীচের অংশ তার ওষ্ঠদ্বয়ের গহ্বরে প্রবেশ করে। কেমন জানি অবসন্ন লাগে রাতুলের, শরীরী খেলায় ও যেনো নিস্তেজ হয়ে আসে! আর তত বেশী আক্রমণ হতে থাকে উল্টোদিক থেকে। কিন্তু আশ্চর্য  একটাও কথা শুনতে পায়নি রাতুল এই দেড় দিনে। আরো একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছে রাতুল, একটু অন্যমনস্ক হয়ে থাকা বিপরীত দিকের মানুষটাকে চোখের দেখা দেখতে যেই না গান্ধারীর পট্টি তে হাত দিতে যাবে ঠিক তখনই দুটো সুঠাম বলিষ্ঠ হাত ওকে তার প্রশস্ত বক্ষ বিভাজিকায় খেলা করাতে নিয়ে চলে  আসে। রাতুলের কৌতূহল মেটে না, বাড়তে থাকে তার না দেখা মানুষটির প্রতি দেখবার আকাঙ্ক্ষা। বেশ দামী ওয়াইন খাইয়েছে ক্লায়েন্ট টি। আজ হাফ ডে হবার কথা ছিল কিন্তু সারা সন্ধ্যে ও ড্রিঙ্ক করেছে, প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় রাতুলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েও বিফল হয়েছে, আর সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়েছে রাতুল।

চোখের পট্টিটা খুলতেই যে চেহারা ওর কাছে ধরা পড়েছে, মনে মনে রাতুল যেনো এ রকমই একজনকে  কল্পনা করেছিলো। একজন নামজাদা প্রায় ৬ ফুট লম্বা কর্পোরেট বক্তিত্ব। তারপরে ?

কিছু ছবি তুলে নেয় রাতুল। অচেতন অবস্থায় রাতুলের সাথে তার ঘনিষ্ঠ  মুহূর্ত যার বাজার দর কম করে 25 লাখ থেকে 30 লাখ...

এরকম  দু তিনটে শাঁশালো ক্লায়েন্ট পেলে নিজের হোটেল ব্যবসাটা খুলতে বেশী সময় লাগবে  না রাতুলের...

সিলভিয়া ঘোষ


No comments:

Post a Comment