এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

মুরারি সিং




কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




সামান্য-মানুষ

সকালবেলায় বাগানের রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম
রাশি রাশি ঝরাপাতা
মৃদু-শীত
টুপটাপ-শিশিরের জল
আমার মাথায় কোনো ছাতা ছিল না

যে পুকুরে হাঁসগুলি সাঁতার কাটছিল
তার জলে
বিস্তর শালুক ফুটেছিল
    লাল লাল
যেন আমারই রক্তের সিলেবাস

ঘাড় উঁচু করে দেখলাম
দূরে
লাইটপোস্টের মাথায়
জাফরান রঙের সূর্য উঠছে

পাশ-ফেলের তোয়াক্কা না করে
ততক্ষণে আমি খুন হয়ে গেছি
ঝমঝম পাখিডাকে

ধীরে পায়ে বেড়ার ধারে ফুটে থাকা
অপরাজিতার কাছে হাজির হলাম

তার সামনে অবনত হলাম

নীলফুল কি বুঝল
তার হৃদয় ছুঁতে চাইছে  
একজন সামান্য মানুষ




জাতীয়-সংগীত
ডুবোজাহাজের খোলে বসে এক প্লেট চিলি-চিকেন সাবাড় করে
বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি
সেখানে চলছে
শকুন্তলার পতিগৃহেযাত্রা

আবার দেখছি বনতুলসির আধ্যাত্মচেতনায়
বুনো-হাঁসগুলি  
কিছু পালাকীর্তন গুঁজে দিয়েছে

সেই ঝাঁপতালে আমি তো বিচরণ করছি  
অঙ্ক-দিদিমনির অঙ্কনমার্গে

তারপর অবশ্য একবার
মিনিবাসের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে
বিষকন্যার শাঁখা-সিঁদুর থেকে
            আমার তিকিতাকায়  
আরো কিছুটা পাওয়ার ভরে নিয়েছিলাম

যদিও গতকাল বৃষ্টি হয়েছিল
এবং আজ মেঘেদের চিহ্নমাত্র নেই

এবং যদিও এখন আকাশে বাতাসে ভেসে
যাচ্ছে
ফেটে যাওয়া শিমুলতুলোর জাতীয়-সংগীত

তবু এক এক সময় হুলোবেড়াল সেজে
ভাবতে বসি
ইস ওই ডাগোর-ডোগোর চাঁদটাকে
যদি একবার
থাবার নাগালে পাওয়া যেত

দূর জীবনটা কেন যে ক্যাওড়া-জলের বশীভূত হল না




মুরারি সিংহ


No comments:

Post a Comment