অনুগল্প
# শূন্যতা #
আজ অভিষেকের খুব মন খারাপ। আজ তার স্ত্রী ঐশী'র জন্মদিন সাথে মৃত্যু দিন'ও।সারাদিন প্রার্থনা আতিথেয়তার পর এখন খুব একা লাগছে অভিষেকের। আজ আর ঘুম আসবে না তার। কিছু স্মৃতি কিছু ছবি আজ তার রাত্রের সঙ্গী। ঠিক একবছর আগে রাত্রি 9:30 নাগাদ অভিষেক খবর পায় পুরনো রেলস্টেশনের ধারে দুর্ঘটনায় সে তার স্ত্রী কে হারিয়েছে। অন্যমনস্ক হয়ে পথ চলার সময় দুর্ঘটনা তার মৃত্যুর কারন। তখন মিটিংয়ে থাকার কারনে শেষবারের জন্য দেখতেও পায়নি সে তার স্ত্রী'কে । ভাবতে ভাবতে চোখে জল এসে গেল অভিষেকের। চোখ মুছে পুরনো এলবাম নিয়ে বসল অভিষেক। পুরানো ছবি ঘাটতে ঘাটতে অভিষেক একটা চিঠি খুজে পেল।এক বছর আগে আজকের তারিখে ঐশী লিখে ছিল তাকে। অভিষেকের মনে পড়ল সেদিন সকালে অফিস যাওয়ার সময় ঐশী তাকে দিয়েছিল চিঠিটা। তারপর কখনো চিঠিটা পড়া হয়ে ওঠেনি। এক বুক আশা নিয়ে অভিষেক চিঠিটা খুব যত্ন করে পড়তে লাগলো। এটা তার ঐশীর লেখা শেষ চিঠি ।
চিঠিতে লেখা -
অভিষেক,
কেমন আছো তুমি? কেমন চলছে তোমার গোছানো সংসার ? সম্পর্কে আমি তোমার স্ত্রী হলেও একই ঘরে তো আমরা চেনা জানা অপরিচিত দুটো মানুষ। তাই ভাবলাম পুরনো বন্ধু সেই অভিকে একটা চিঠি লিখে ফেলি। সামনে তো কখনো কথা বলার সময় হয়না এই বন্ধু বনাম স্বামীর সাথে। জানিনা চিঠিটা আমার লেখা বলে খুলে পড়বে নাকি পরে দেখবে বলে অবহেলায় আবার সরিয়ে রাখবে যেমন প্রতিদিন আমার অভিমানকে সরিয়ে রাখো । তবু ও এক বিন্দু আশা নিয়ে শুরু করলাম । জানো অভি তোমাকে খুব মিস আমি রোজ। তুমি থাকো হয়তো সকাল সন্ধ্যে কিন্তু তোমাকে ঠিক পাই না যেমন করে আমার বন্ধু অভিকে পেতাম। আমার বন্ধু অভিকে খুব মিস করি। তার সাথে, তার
দুষ্টুমি, কথা বলার ধরন, যখন তখন আবদার মিস করি। যখন প্রথম বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলে, বলেছিলাম সম্পর্কটা বন্ধুত্বে থাকতে দাও। তুমি বলেছিলে, বন্ধু তো আমরা থাকবোই । সেই বন্ধুত্ব এখন কোথায় অভি?
জানি তুমি ব্যস্ত আছো। কাজের চাপ আছে । কিন্তু কাজের থাকে দু মিনিট সময় পাবার অধিকার'ও কি আমার নেই? তবে কেন সেদিন হাত ধরেছিলে, যখন জানতে সম্পর্কের কাঁচ আমার কাছে ঝাপসা হয়ে আছে আগেই। যখন জানতে একা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তবে কেন সেদিন একা চলতে দাওনি বল ? তুমি জানতে স্বপ্ন দেখতে ভয় পেতাম তবে কেন দেখিয়েছিলে স্বপ্ন? আজ তোমার ঘরের সাজানো এক বস্তু মনে হয় নিজেকে।
তোমার নামের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ইস্ নাম, যে নামে তুমি আমায় ডাকতে, কোনো অতীতে যেন হারিয়ে গেছে।
তোমাকে বলতে পারিনা অভি কিন্তু তোমার ইস্ ভালো নেই আজ। তোমার ইস্ এর তোমাকে দরকার, বন্ধু অভিকে দরকার। এই শূন্যতা বড় কষ্ট দিচ্ছে আমায়। একটিবার আমায় জড়িয়ে নাও তোমার বুকে। আমি মুষলধারায় কাঁদতে চাই, রাগ দেখাতে চাই, বলতে চাই ভালোবাসি। এই শূন্যতা থেকে মুক্তি চাই আমি।
অনেক সাহস করে চিঠিটা লিখলাম আর আজ নির্লজ্জ হয়ে জন্মদিনের উপহার টা তোমাকে চাইতে চলেছি। আজ বিকালে তোমার ইস্ পুরোনো রেলস্টেশনের ধারে তার বন্ধু অভির জন্য অপেক্ষা করবে। ইস্ কে তার অভি ফিরিয়ে দাও।
তোমার ইস্ আজ মুক্তি না নিয়ে ফিরবে না। তুমি আসবে তো আমায় নিতে। কথা দাও আজকের অপেক্ষা আমার শেষ অপেক্ষা হবে।
ইতি
তোমার ঐশী
চিঠিটা পড়ার পর অভিষেক কান্নায় ভেঙে পড়ল এক পৃথিবী শূন্যতা নিয়ে। যে শূন্যতা সে চাইলেই ভালোবাসায় পূর্ণ করতে পারত তা আজ অতীতের রেখা টেনে তার বর্তমানে ভরে দিয়ে গেল সীমাহীন শূন্যতা।।
আজ অভিষেকের খুব মন খারাপ। আজ তার স্ত্রী ঐশী'র জন্মদিন সাথে মৃত্যু দিন'ও।সারাদিন প্রার্থনা আতিথেয়তার পর এখন খুব একা লাগছে অভিষেকের। আজ আর ঘুম আসবে না তার। কিছু স্মৃতি কিছু ছবি আজ তার রাত্রের সঙ্গী। ঠিক একবছর আগে রাত্রি 9:30 নাগাদ অভিষেক খবর পায় পুরনো রেলস্টেশনের ধারে দুর্ঘটনায় সে তার স্ত্রী কে হারিয়েছে। অন্যমনস্ক হয়ে পথ চলার সময় দুর্ঘটনা তার মৃত্যুর কারন। তখন মিটিংয়ে থাকার কারনে শেষবারের জন্য দেখতেও পায়নি সে তার স্ত্রী'কে । ভাবতে ভাবতে চোখে জল এসে গেল অভিষেকের। চোখ মুছে পুরনো এলবাম নিয়ে বসল অভিষেক। পুরানো ছবি ঘাটতে ঘাটতে অভিষেক একটা চিঠি খুজে পেল।এক বছর আগে আজকের তারিখে ঐশী লিখে ছিল তাকে। অভিষেকের মনে পড়ল সেদিন সকালে অফিস যাওয়ার সময় ঐশী তাকে দিয়েছিল চিঠিটা। তারপর কখনো চিঠিটা পড়া হয়ে ওঠেনি। এক বুক আশা নিয়ে অভিষেক চিঠিটা খুব যত্ন করে পড়তে লাগলো। এটা তার ঐশীর লেখা শেষ চিঠি ।
চিঠিতে লেখা -
অভিষেক,
কেমন আছো তুমি? কেমন চলছে তোমার গোছানো সংসার ? সম্পর্কে আমি তোমার স্ত্রী হলেও একই ঘরে তো আমরা চেনা জানা অপরিচিত দুটো মানুষ। তাই ভাবলাম পুরনো বন্ধু সেই অভিকে একটা চিঠি লিখে ফেলি। সামনে তো কখনো কথা বলার সময় হয়না এই বন্ধু বনাম স্বামীর সাথে। জানিনা চিঠিটা আমার লেখা বলে খুলে পড়বে নাকি পরে দেখবে বলে অবহেলায় আবার সরিয়ে রাখবে যেমন প্রতিদিন আমার অভিমানকে সরিয়ে রাখো । তবু ও এক বিন্দু আশা নিয়ে শুরু করলাম । জানো অভি তোমাকে খুব মিস আমি রোজ। তুমি থাকো হয়তো সকাল সন্ধ্যে কিন্তু তোমাকে ঠিক পাই না যেমন করে আমার বন্ধু অভিকে পেতাম। আমার বন্ধু অভিকে খুব মিস করি। তার সাথে, তার
দুষ্টুমি, কথা বলার ধরন, যখন তখন আবদার মিস করি। যখন প্রথম বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলে, বলেছিলাম সম্পর্কটা বন্ধুত্বে থাকতে দাও। তুমি বলেছিলে, বন্ধু তো আমরা থাকবোই । সেই বন্ধুত্ব এখন কোথায় অভি?
জানি তুমি ব্যস্ত আছো। কাজের চাপ আছে । কিন্তু কাজের থাকে দু মিনিট সময় পাবার অধিকার'ও কি আমার নেই? তবে কেন সেদিন হাত ধরেছিলে, যখন জানতে সম্পর্কের কাঁচ আমার কাছে ঝাপসা হয়ে আছে আগেই। যখন জানতে একা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তবে কেন সেদিন একা চলতে দাওনি বল ? তুমি জানতে স্বপ্ন দেখতে ভয় পেতাম তবে কেন দেখিয়েছিলে স্বপ্ন? আজ তোমার ঘরের সাজানো এক বস্তু মনে হয় নিজেকে।
তোমার নামের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ইস্ নাম, যে নামে তুমি আমায় ডাকতে, কোনো অতীতে যেন হারিয়ে গেছে।
তোমাকে বলতে পারিনা অভি কিন্তু তোমার ইস্ ভালো নেই আজ। তোমার ইস্ এর তোমাকে দরকার, বন্ধু অভিকে দরকার। এই শূন্যতা বড় কষ্ট দিচ্ছে আমায়। একটিবার আমায় জড়িয়ে নাও তোমার বুকে। আমি মুষলধারায় কাঁদতে চাই, রাগ দেখাতে চাই, বলতে চাই ভালোবাসি। এই শূন্যতা থেকে মুক্তি চাই আমি।
অনেক সাহস করে চিঠিটা লিখলাম আর আজ নির্লজ্জ হয়ে জন্মদিনের উপহার টা তোমাকে চাইতে চলেছি। আজ বিকালে তোমার ইস্ পুরোনো রেলস্টেশনের ধারে তার বন্ধু অভির জন্য অপেক্ষা করবে। ইস্ কে তার অভি ফিরিয়ে দাও।
তোমার ইস্ আজ মুক্তি না নিয়ে ফিরবে না। তুমি আসবে তো আমায় নিতে। কথা দাও আজকের অপেক্ষা আমার শেষ অপেক্ষা হবে।
ইতি
তোমার ঐশী
চিঠিটা পড়ার পর অভিষেক কান্নায় ভেঙে পড়ল এক পৃথিবী শূন্যতা নিয়ে। যে শূন্যতা সে চাইলেই ভালোবাসায় পূর্ণ করতে পারত তা আজ অতীতের রেখা টেনে তার বর্তমানে ভরে দিয়ে গেল সীমাহীন শূন্যতা।।
ঈশিতা চক্রবর্তী |
No comments:
Post a Comment