এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

বনবীথি পাত্র



অণুগল্প



মা

মেয়েটা স্কুল কামাই তো করেনা । তবে কি ........!!!!
এ অঞ্চলে হামেশাই তো এমন হচ্ছে। এখনো মেয়েদের বেশি লেখাপড়া শেখানোর থেকে মেয়ের একটা বিয়ে দেওয়াটাকে এরা অনেক জরুরি বলে মনে করে। ক্লাস ফাইভে যতগুলো মেয়ে ইস্কুলে ভর্তি হয়, তার সিকি ভাগও মাধ্যমিক পরীক্ষা অবধি এসে পৌঁছায় না ।
ক্লাস শেষ করে স্টাফরুমে এসেও মনটা খিচখিচ করছে নীলিমা দিদিমণির। মেয়েটার মধ্যে জীবনে মানুষ হওয়ার একটা তাগিদ ছিল, এভাবে সেটা নষ্ট হয়ে যাবে!!
শনিবার টিফিনে স্কুল ছুটির পর পায়ে পায়ে সুমিতাদের বাড়ির দিকে হাঁটা দেন নীলিমা দিদিমণি ।
সুমিতাদের বাড়ি বলতেই পাড়ার ছোট ছেলেগুলো দেখিয়ে দেয় বাড়িটা।
ছোট একচালা টিনের ঘর।
বাইরে থেকে সুমিতার নাম ধরে ডাকতেই সুমিতা বেরিয়ে এলো।
চোখে-মুখে দুশ্চিন্তা আর ক্লান্তির ছাপ।
ঘরে ঢুকে সুমিতার সাথে কথা বলে সবটুকু বুঝতে পারলেন।
বাপমরা মেয়েটার জীবনে ওর মা-ই সব। মায়ের তিনদিন ধরে জ্বর, মায়ের মাথার কাছটি ছেড়ে কোথাও নড়েনি সুমিতা। হয়তো খাওয়া ঘুমটাও হয়নি।
এখন একটু ভালো আছেন সুমিতার মা। সুমিতার হাতে জোর করে দুশোটা টাকা দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন নীলিমা দিদিমণি।
মা বৃদ্ধাশ্রমে, কতদিন মায়ের সাথে দেখাটুকুও করতে যাওয়া হয়নি। নিজের অজান্তেই চোখের কোণটা ভিজে ওঠে দিদিমণির.......

No comments:

Post a Comment