এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

মিঠু নাথ কর্মকার



কবিতা (সাধারণ বিভাগ)




কবিতালাশ

বদ্ধমনের উঠোন জুড়ে পায়রার খুঁটে খাওয়া কিছু উচ্ছিষ্ট শব্দ
ধুয়ে যাচ্ছে বাউল বৃষ্টির ফোঁটায়
নিষিদ্ধতার কার্নিশ বেয়ে সন্তর্পণে তুলে নিয়ে
শুকতে দিয়েছিলে ঝুল বারান্দায়
অলস বিকেলে প্রিয় গোলাপের টবে জল দিতে এলে
লাজুক ক্যাকটাসটা  কুঁড়ি নিয়ে চেয়ে থাকে চাতকের মতো
একলা রাতের বিষণ্ণতায় ঘষা কাঁচের শার্সি
চুঁয়ে আসা জ্যোত্স্নার পিঠে
আধভেজা শব্দ দিয়ে কবিতা বুনি
হিমেল হাওয়ায় নিশ্ছিদ্র পথে ভেসে আসা গন্ধে টের পাই ফুল ফোটা
ট্রাফিক সিগনালে নিযুত কথাদের যানজট
পেরিয়ে
চোখের পাতার গ্যালাক্সিতে কবিতার মিছিল
রোদভেজা সকালে শিশু সূর্যটা রাহুর ভিতরে ঢুকে গেলে…
ছত্রভঙ্গ মিছিলে পদপিষ্ট হয়ে পড়ে থাকে কয়েকটা বেনামী কবিতার লাশ      ……



স্বপ্নভঙ্গ

অভাবের ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারা পড়ন্ত যৌবন
খিদের জোড়া উনুনে হাঁড়ি বসিয়ে দুমুঠো
চালের বিনিময়ে মহাজনের কামনার আগুনে
পুড়ে খাক হয় ……
অপুষ্ট কৈশোরের অসহায় লক্ষণরেখা প্রাণপণ ঢেকে রাখে দারিদ্র্যের কালশিটে
পরা পুরু চাদর……
কন্যাশ্রীর সুবাদে দু'চোখের অশ্রুকোটরে খেলে স্বপ্নের জোয়ার-ভাঁটা , কল্পনার রকেট মাধ্যাকর্ষণের বাধা কাটিয়ে মহাকাশে পা রাখে……
নিভু নিভু উনুনের তাপ সঞ্চালনে স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের উষ্ণতা বাড়তে থাকে, হাইব্রীড মগজে  অচাষযোগ্য জমিতে কর্ষণ করার সফল প্রয়াস……
যান্ত্রিক গোলযোগে মহাশূন্যেই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়  কল্পনার মহাকাশযান
নুইয়ে পড়া ঘরের নিকানো দাওয়ায়  অসংখ্য শাখা নদীর শুষ্ক খাতে ছড়ানো স্বপ্নের  কয়েকটা টুকরো …


মিঠু নাথ কর্মকার
মিঠু নাথ কর্মকার এর কাছে কবিতা পড়া আর কবিতা আবৃত্তি শোনা একান্ত পছন্দের হলেও নিজে কবিতা লেখার মতো দুঃসাহসিক চিন্তা কখনই মনের গহীনে উঁকি দেয়নি । জীবনের আবর্তে এক শুভানুধ্যায়ীর দেওয়া কলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই কবিতায় হাতেখড়ি আর তখন থেকে কবিতাই অবসর যাপন। শৈশব থেকেই প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে বেড়ে ওঠায় খুব কাছ থেকে জীবনকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছেন তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাস্তবজীবনের অসহায়তা দুঃখ কষ্ট যন্ত্রনা কবিতায় পরিস্ফুট হয়েছে ।

No comments:

Post a Comment