এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সুজাতা দাস



ছোটগল্প



চিটিং

সিদ্ধার্থ চলে যাবার পর শ্রুতি গভীর পরিতৃপ্তির ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিল।
হঠাৎ ঘুমটা ভেংগে গেল, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ধড়মড়িয়ে উঠে বসল শ্রুতি। উফ, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে আসছে।
উঠে খোলাচুলটা হাতখোঁপায় বেঁধে দ্রুত বিছানার চাদর আর বালিশের ওয়াড় বদলে, ধোয়া চাদর ওয়াড় টান টান করে পেতে একবার তীক্ষ্ণ চোখে চারিদিক পরখ করে নিলো, সিদ্ধার্থর ব্যাবহারের কিছু পড়ে আছে কিনা।

তারপর একটা হাল্কা চুড়িদার কামিজ নিয়ে বাথরুমে শাওয়ার খুলে তার নীচে দাঁড়ালো।

বিয়ের আগে দাদার বন্ধু সিদ্ধার্থের সাথে আলাপ, প্রেম। বাড়ির লোকেরা প্রশ্রয় দিত, সবাই জানত, শ্রুতি আর সিদ্ধার্থের বিয়ে হবে। বহুবার দুজনে চিলেকোঠায়, ডায়মনহারবারে সময় কাটিয়েছে। হটাৎ একদিন সিদ্ধার্থ না বলে হাওয়া। অনেকদিন অপেক্ষার পর অনির্বানের সাথে বিয়েটা হয়ে গেল।

অনির্বান একজন আদর্শ স্বামী। শ্রুতিকে খুব ভালোবাসে,আর একজন ওদের মাঝে আছে। দারুন ফুটফুটে ওদের মেয়ে তিন্নি।

গরমের ছুটিতে ননদ তিন্নিকে নিজের বাড়ি নিয়ে গেছে। তিন্নির বয়েসী ননদের মেয়ে। দুজনের ভারী ভাব। আজ অনির্বান অফিস থেকে ফেরবার পথে তিন্নিকে নিয়ে আসবে।

বিয়ের চারবছর পরে হঠাৎ সিদ্ধার্থের সাথে আবার দেখা। কেন হঠাৎ না বলে চলে গিয়েছিল, জিজ্ঞেস করায় বলেছিল, ও ঠিক তখন মানসিক ভাবে বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলোনা। জার্মানি চলে গিয়েছিল। এখানেও বেশীদিন থাকবেনা, আবার চলে যাবে।

সেই শুরু। আবার  সিদ্ধার্থর সাথে দেখা, ঘোরা, তবে খুবই লুকিয়ে।

শ্রুতি চিলিচিকেনটা দ্রুত বানিয়ে ময়দা মাখতে মাখতে শুনল, অনির্বান আর তিন্নি এসে গেছে। তিন্নি এসে মাকে জড়িয়ে ধরলো। তিন্নি আর অনির্বানের জন্য শ্রুতি লুচি বানাতে রান্নাঘরে গেল।

অনির্বান প্রসন্নমুখে বসে ভাবছিল, ভাগ্যিস চাকরিকরা মেয়ে বিয়ে করিনি। শ্রুতির মতো নরম মিষ্টি গৃহকর্মনিপুণা মেয়েকে করেছিলাম। পুরোঘরে ধুপের পবিত্র গন্ধের সাথে, লুচি, চিলি চিকেনের গন্ধ মিশে একাকার হয়ে আছে। অনির্বান ভালোবাসার গন্ধে বিভোর হয়ে গেলো।


No comments:

Post a Comment