এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

তোহাদ্দেশ সেখ



ছড়াক্কা
(গল্প আকারে)




পদ্ম-ঝিনুক ও কাঠুরে

রাজার দেশে গরিব সে যে, কাঠুরের এক বাস।
কাঠুরের ছেলের বায়না চলে
রাজার পাঠশালায় পড়বে বলে
কাঠুরের ধন ছিলনা তাই
ছেলে তার পড়তে না পাই
এই দুঃখে গেল কেটে কাঠুরের কয়েকটা মাস।


একদিন গেলো কাঠ কাটতে গভীর বনের কোলে
পেলো একটি ঝিনুকের খোল
দেখে হল চোখ গোল গোল
দেখতে সুন্দর রত্ন গোটা
ভিতরে এক পদ্ম ফোটা
কুড়িয়ে দুহাতে তবু মনে চিন্তা  দোলে।


মাঝরাতে স্বর্গ নামে কাঠুরের ছোট্ট ঘরে,
ঝিনুক খোলে
আলো জ্বলে
ঘরের মাঝে
জ্যোৎস্না সাজে
অবাক তারা ভেবে না পাই, যদি হট্ট করে?


শীতের সকাল কুড়াল হাতে কাঠুরে যাই বনে,
একটু ভিতর দ‍্যাখে গিয়ে
সুন্দরী এক পদ্ম নিয়ে
ডাকে তাকে হাত বাড়িয়ে
কাঠুরে ভয়ে সেই দাঁড়িয়ে
মন্ত্র তন্ত্র যাই ভুলে কিছুই তার থাকেনা মনে।


পদ্ম হাতে জানাই সে পদ্ম-পরী নাম তার,
মিনতি জানাই ফিরিয়ে দিতে
এসেছে আজ সেটাই নিতে
দুদিন আগে হারিয়ে গেছে
কাঠুরি যা বনে পেয়েছে;
ওটা ছাড়া পরীর দেশে থাকবেনা নাম তার।


কাঠুরে জানাই পেয়েছি যা আছে বাসায়
ঘরের কোণে আছে রাখা
নাইকো তাতে রত্ন টাকা
বললে পরে দেবো এনে
কাজ নাই তার এমনি দিনে
দরকার নাই আমার যা রাখবো আমি কোন আশায়?


তবে এনে দাও পদ্ম-ঝিনুক থাকি অপেক্ষায়।
কাঠুরে তখন দৌড়ে গেল
পদ্মা-ঝিনুক নিয়ে এলো
দেবার বেলা দুহাত খামে
পরীর চোখে অশ্রু নামে
পদ্মপরী ভেবে না পাই, ঋণ শোধবে কোন উপায়?


ধন্যবাদ জানাই পদ্ম-পরী, সততায় মুগ্ধ সে।
উপহার তাঁর পাওনা বলে
হাতে একটি দিয়ে থলে
উড়ে যাই বন পেরিয়ে
পদ্ম-ঝিনুক সাথে নিয়ে।
থলে খুলে কাঠুরে দেখে শুধুই তাতে মুক্তা যে।


ছেলের পড়ার সখ মিটলো; না থাকলো অভিযোগ।
অবাক চোখে
দেখলো লোকে
গরিব ছেলে
ক‍্যামনে পেলে,
কাঠুরে ছেলে পাঠশালাতে পড়তে সুযোগ?


প্রমাণ দিল রাজপ্রসাদে; ঝিনুক আবিষ্কার!
ছিল সেদিন সর্বহারা
খুশিতে আজ আত্মহারা
রাজাও শুনে অবাক হল
প্রসাদ কোণে জায়গা দিলো
সত্য কথায় কাঠুরে আজ পেল পুরস্কার।।





কবিতা




পৃথিবী তখনো ঘুমিয়ে

আজ একটি নারীর বুকে ঝড় ঝাপটা
আর একটি ধর্ষিতার বুকে রক্ত
পৃথিবী তবু ঘুমিয়ে।
প্রতিটা দিনপঞ্জিতে যখন
একটা ফাঁকা রাস্তা বা একটা নির্জন খোলা মাঠ
বা বিশ্বাসের গুপ্তঘর পেয়ে যাচ্ছে
একটি রক্তাক্ত নগ্ন নারী দেহ,
পৃথিবী তখনো আঁকতে থাকে সুরক্ষা নামের প্রহসন ছবি।
ঘুমন্ত পৃথিবীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
কখনো যোনিতে প্রবেশ করছে
চার সেলের টর্চ লাইট, কখনো লোহার শক্ত রড।
কখনো চিরে ফেলছে নরম জরায়ু মুখ
কখনো খাবলে তুলে নিচ্ছে সদ‍্য বেড়ে ওঠা স্তন!__
পৃথিবী তখনো ঘুমিয়ে।
আইনের কালো পর্দা
ধর্ষকের হাতে লেগে থাকা ধুলা ঝাড়ে।
রক্ত এড়িয়ে সমাজ চাঁটতে থাকে যোনিরস
প্রতিদিন খবরের কাগজে।
মৃত স্তনেও কালো তিল খুঁজতে পারে ধর্ষণ কারণ
পৃথিবী আজও ঘুমিয়ে।

 
 তোহাদ্দেশ সেখ, 

নিবাস - উপরডিহা,
ডাকঘর- মুকুন্দপুর,
থানা - বহরমপুর,
জেলা- মুর্শিদাবাদ,
পিন কোড- ৭৪২১৮৭,
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত,
জন্ম তারিখ- ০২.০১.১৯৯৫.
কথা ও হোয়াটসআপ -
+৯৬৬৫৭২৪০৬৩৮৪
(বর্তমানে সৌদি আরবে আছি)


No comments:

Post a Comment