এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

তনিমা হাজরা




অনুগল্প



পিছুটান

পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে ছেলেটি রোজই দুম করে সাইকেলে চেপে হঠাৎ, আসছি, বলে হাওয়া হয়ে যেতো মেয়েটিকে একরাশ শূন্যতা উপহার দিয়ে।

তখন আর কোনো পিছুটান তার মাথায় থাকতোনা।ভুলে যেতো পিছনের অঙ্কগুলো সব, চার, তিন, দুই, কিংবা এক।।
সেই কিশোরবেলায়, তখন তাকে ডাকতো শুধু খেলার মাঠ কিংবা আড্ডার ঠেক।।

সেখানে সেই দুইবিনুনি কিশোরী।। সে চিরকাল তার হাতের পাঁচ।। পায় নি কোনোদিন তার অস্তিত্বের আলাদা কিছু আঁচ হৃদয়ের চিলেকোঠায়।। এতটাই সুলভ ছিল তাই।।
কিন্তু রোজ রোজ সুলভ হতে হতে একদিন হঠাৎ অভিমানী মেয়েটি  কোথায় যেন হারিয়ে গেল।।

ছেলেটি ভাবতেই পারে নি এমন করে মুঠোর ভেতর থেকে দুম করেই সুলভ স্বপ্নেরা হারিয়ে যেতে পারে।।

আর এখন এই প্রাজ্ঞ তরুনীটি।।
এলোমেলো কথায় কথায় ছেলেটির কথারা যখন আর শেষই হতে চায় না কিছুতেই, তখন তাকে হঠাৎ সম্বিৎ ফিরিয়ে দিয়ে বলে, দেরি হয়ে গেল যে। যা এবার ফোনটা রেখে দে।। ফিরে যা নিজের ঠিকানায়।।

কিন্তু ছেলেটি সেই তখনকার মতো হুস করে সাইকেল নিয়ে হাওয়া হয়ে যাবার দম আর পায় না কিছুতেই। কিংবা এখন  বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভুল করে ভুলে যেতে ভুলে যায় তাকে।।

আর তাই, তার অঙ্কটায় ভাগশেষে পড়ে থাকে সেই অমোঘ পাঁচ।। উত্তরটা তাই আসন্নমানে আসে।। পুরোপুরি মেলাতে পারে না সে কিছুতেই।।

কী আশ্চর্য!! সেই দুই বেণী কিশোরী!! সেই হুস করে সাইকেল চড়ে খেলার মাঠে বা আড্ডার ঠেকে ছুট!!
এ জীবন রহস্য অপার হে কালকূট। বিষকেও কী সহজে যত্নে কন্ঠে আগলে রাখো।। আর তার মারণ নেশার ঝোঁকে ঝোঁকেই জীবন বাঁচতে থাকো।।

ছুটে পালাতে চাইলেই কি আর পালানো যায়,
তাই সেই গোলমেলে অঙ্কটায়, অনিবার্য ভাগশেষটা থেকেই যায়।।
থেকে যায়  সাথে সাথে হেঁটে চলা এক দূরাগত ভাটিয়ালি গান,
সেই বেখাপ্পা ভাগশেষ, যার আরেকনাম হলো পিছুটান।।।


তনিমা হাজরা

No comments:

Post a Comment