এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

জ্যোতির্ময় রায়



অঙ্কন : জ‍্যোতির্ময় রায়



কবিতা



#শেষ_হতে_হতে

আজকাল শব্দরাও বড্ড অকেজো,
আর বুকের ভিতর তোলপাড় করে না
শুধুই আঁকি বুঁকি কেঁটে যায় নীরবতায় ।।

রক্তের দাগে পাতা ভেজায়নি কতকাল,
পোয়াতি মনের হঠাৎ পাশ ফিরে শুয়ে থাকা,
আগুনে পুড়েছে কতদিন ,রোদ আসেনি বারান্দায় ।।


দুচোখে আঁকছি রামধনু ,চশমায় জন্মদাগ
বিষাক্ত শরীরে তবে সে ঘৃণা জমানো থাক ।।

ভালোবাসাগুলো যেন কেমন আছে আজ?
সন্ধ্যে হলেই ফেরৎ আসে না আর কেউ
বালির উপর রুমাল ,ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঢেউ ।।







উপন্যাস
(ধারাবাহিক)




এবং তারপর আমি
(প্রথম অধ্যায় )


(১০)

"ভালোবাসি ?  কৈ না তো ,তোকে একটুও ভালোবাসি না ,তবুও কেন ?
কি জানিস এই পৃথিবীতে সব থেকে প্রিয়মানুষকে হারিয়েছি অনেক আগেই ।তখন ল্যাম্পপোস্টময় আমিও ইন্তেজারীর ইস্তিহারে দেওয়াল লিখেছি অনেক। নাঃ সে ফেরেনি আর । তারপর থেকেই একটা মুক্ত আকাশ খুঁজি একটু উড়বো বলে । পাইনি রে । তবুও জানি তোর কাছেই আমি কাঁদতে পারি ,আবার হাসতেও ,তুই তো জানিস তোকেই সব থেকে বেশি জ্বালাই আমি ,ছ‍্যাবলামো করি । তবুও আমি কিন্তু তোকে ভালোবাসি না । শুধুই তোকেই আমার সব কথা বলতে পারে ,এমনি "মাকে" তো সব কথা বলা যায় না ,সে সব কথাও তোকেই বলি । আমার চার দেওয়ালে একটু ঘুরে দেখ তোর আচর কাঁটা দেওয়ালে ,বুকের উপর যে দু মুখো সাপের ছোবল তাতেও তোর কাছেই ধরা পরি বারবার । জানি তুইও অন্য পৃথিবীতে স্বপ্ন আঁকিস ,অন্য কোনো গল্পের নায়িকা তুইও ,এতে কষ্ট হয় না আমার ,দেখ !তোকে কিন্তু ভালোবাসি না আমি ,কিন্তু আমার আকাশের প্রতিটি তারায় তারায় তুই । দীপশিখা কিংবা প্রীতি, হমম স্বীকার করছি এদের মাঝে একটা আকাশ খুঁজে ছিলাম, পাইনি রে ,উড়ার মত । হয়তো ভালোবেসেছিলাম এদের কিন্তু সেই উড়বার জায়গা নেই । বদ্ধ ঘরে দম বন্ধ হয়ে যায় যে আমার ,তুই তো ভালো করেই জানিস ,তুই তো সব কিছুই জানিস আমার ,সব টা ,সেই ফাস্ট ইয়ার থেকে এক সঙ্গে ল্যাব ,ক্লাস ,এক্সাম ....হয়তো মাঝে মাঝে আমি ডুব  মারতাম ,তুই কিন্তু ভুলিস নি ঠিক আগের মতোই আছিস । তবুও তোকে ভালোবাসি না আমি । এই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় যে তুই ,হ্যাঁ তুই । প্রেম-টেম নয় কিন্তু খুব কাছের কেউ । তুই যখন ব্যস্ত থাকিস তার ফোনে ,মাঝে মাঝে রাগ হয় ,অভিমান হয় ,তোর ইগ্নোররেন্স গুলো খুব বুকে লাগে ,তারপর ভাবি ...."ওহঃ নাঃ তোকে ভালোবাসি না আমি ।"

আর তো কয়েকটা দিন ,দুমাস পনেরো দিন তারপর তুইও আমার জীবন থেকে চলে যাবি ,আমিও চলে যাবো অজানা কোনো ঠিকানায় ।হয়তো আর কোনদিন কথাও হবে না তোর সাথে । কিন্তু আমি থাকবো কি রে বল ,কাকে জ্বালাবো? কার কাছে কাঁদবো ,মায়ের কাছে কাঁদলে সেও যে কেঁদে দেবে ,সেটা যে দেখতে আমি পারি না ,কাকে ডিস্টার্ব করবো বল ,রাত বিরাতে ফোন করে ? পাবো কি মুক্ত আকাশ একটা "নীহারিকা" নাম দিয়েছি তোর নীহারিকা । তুই বললি যে পেয়ে যাব ,কৈ পেলাম বল ,দীপশিখা আর প্রীতি ভেবেছিলাম পাবো এদের মাঝে ,পেলাম কৈ ? ফের আবার খুঁজবো ? নাঃ বড্ড ভয় হয় রে । কিন্তু তোকে ভালোবাসি না আমি । তুই হারিয়ে যাবি জানি ,এতে কষ্ট হবে না আমার ,কারণ তোকে ভালোবাসি না আমি ,আমার আকাশে সূর্য উঠবে না আর কোনদিন ,পাখি উড়বে না কোনোদিন । আর তারারাও হারাবে মেঘের আড়ালে । সেই "নীলাঞ্জনা" হারাবার পর তো আর চাঁদ উঠেনি এবার মেঘে ঢাকা আকাশে আমি কি করবো ,আমার পৃথিবীতে অক্সিজেন আর থাবেনা । জানিস মন খারাপ হলে তোকে ফোন করি ,আর তুই .....নাঃ রে ভালোবাসী না তোকে একটুও আমি ।

একবার ভাব ...তোকে ছাড়া আর কাউকে না বলতে পারা আমার কি হবে তুই হারালে ,তুই তো ভালো করেই চিনিস ,আমি হয়তো এত টুকুও চিনি না তোকে । কিন্তু তুই সব থেকে প্রিয় ...কিন্তু ভালোবাসি না কিন্তু তোকে একটুও আমি ।।”

কিসব বলছিস বলতো ,সব তো মাথার উপর দিয়ে গেল ।

“তুমি বাল বোঝো ,বাল ?”

“কি সব মুখের ভাষা ? এই জন্য কোনো মেয়ে পটে না তোর জন্য”

“আচ্ছা তাই ? আরে বাল ,বাল হলো একটা কমন কথা ,তাছাড়া অন্য কোনো মেয়ের সামনে কিন্তু আমি একটুও খিস্তি মারিনা একদম ভদ্র ছেলে । ভিতর থেকে আসে না বুঝলি”

“আচ্ছা আমি কি দোষ করলাম তবে ?”
“দোষ তো অনেক করেছিস ,এই আমিকে ফেরাস নি কোনোদিন আবার রেখেও দিসনি”
“আচ্ছা তাই ,ওরম মনে হয়”
“ ভগবান আমাকে তুলে নাও উপরে ।”





(১১)

আজ বাবার শরীরটা বেশ ভালো আছে ,ঈপ্সিতা অফিস যায়নি দু দিন । আজ ফের অফিসের পথে । মেঘ করেছে আজও ,”ছাতা নিয়েছি , এই যা ছাতা নেওয়াই হয়নি”

বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে ,যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে কোনো মতে মাথা গুঁজে আছে ,অনেক ভিড় বাস গুলোতেও ।অফিস টাইম যে ।


“কিরে তুই এখানে ,আঙ্কেল কেমন আছে ?”

“মোটা মুটি ভালোই , আজ উন্নতি হয়েছে অনেকটা ,কাল হাসপিটাল থেকে ছাড়বে বলেছে ।”

“দু দিন ধরে ফোন করে যাচ্ছি ফোনে তো তোকেই পাচ্ছিই না ,বস তোর খোঁজ করছিল ।”

পরের সপ্তাহে মিটিং আছে ,আমাদের বস বদলি হচ্ছে জয়পুরে ,নতুন বস আসবে ,নতুন স্ট্র্যাটেজি বানাবে বলছে তাই” আমি তোর ডোকোমেন্টেশন গুলো কারেশন করে দিয়ে দিয়েছি ,তুই চার্ট ফাইলটি শুধু সাবমিট করে দিস “

“থ্যাংক ইউ, তুই এসব করতে গেলি কেন ? তোর তো কম পেসার নয় “

“নো থ্যাংক ইউ ,এটা আমার দ্বায়িত্ব,যাই হোক ,আমি এই রেনকোটটা দিচ্ছি ,এটা পর , আর বাইকে বস “

“না, আমি বাসে চলে যাবো”

“আর কত দিন লুকোবি বল , আজ আর না নয় , বুঝলি। কাল আঙ্কেলকে আনতে আমিও যাচ্ছি ,আর ফোনটা যেন অন থাকে”

অগ্যতা অভিকের বাইকে যেতেই  হলো ,কারণ এরপর অফিস দেরি হয়ে যাবে ।


অফিস থেকে ফিরেই আজ বড্ড ক্লান্ত ,বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে ,সো আজ আর রান্না নয়  । কোনো মতে জামা কাপড় ছেড়ে শুয়ে পড়ল ঈপ্সিতা ।

হঠাৎ একটা ফোনে ঘুম ভেঙে গেল তার । অচেনা একটা নম্বর ।
“হ্যালো , কে বলছেন”
“আমি”
“আমি কে ?”
“মা”

“কার মা ,কোন মা ,আমার মা তো নেই ,আমার মা আমার কাছে মরে গেছে ,যে মা ছোট মেয়েকে ছেড়ে চলে যেতে পারে সে মা কি করে ? আপনি ভুল জায়গায় ফোন করেছেন”

“না ইসু ,না ...তুই ভুল ভাবিস না ,আমায় , জানি আমি অনেক বড় দোষী ,জানি । তোর বাবাকে দেখিস মা ,তুই যখন ছোট ছিলি তখন একবার এই রোগটা হয়েছিল , ভুলে যায় সব কিছু একটু খেয়াল রাখিস”

“ন্যাকামো হয়েছে ?আপনি আর এই নাম্বারে ফোন করবেন না”

ফোন কেটে দিল ঈপ্সিতা । হ্যাঁ বড্ড ভুলো মানুষ

প্রিয়ম । বাবার এই বড্ড ভুলে যাওয়া অনেক বার দেখেছে ।

কিন্তু মা কেন ছেড়ে গেছে এখনো জানে নি ,জানতেও চায় না । বাবাই তার সব ।।

ঘড়ি তে তখন একারোটা বাজে ,ঘুমটা ভেঙে গেছে । আর ঘুম আসছেনা । বাবার ঘরে গিয়ে আবার ডাইরিটা খুলেতেই ,একটা ছবি বেরোল ,পেন্সিল দিয়ে আঁকা ,বেশ পুরোনো । ঠিক বোঝা যাচ্ছে না ,মুখটা ,ছবির নিচে লেখা শেষ পেন্সিলের টান ….।।

বাবা এত ভালো ছবি আঁকত জানত না ,আগে ..
কেন বন্ধ করলো ছবি আঁকা ?”




(১২)

"যেদিন থেকে তুই বলা শুরু করবি ,যে আমিও তোকে ভালোবাসি ,সেদিন বুঝবি আর তোর ধাঁরে কাছে নেই , সেদিন যেমন একটা ভালো বন্ধুকে হারাবি ,ঠিক তেমনি আমাকেও। "ভালোবাসি" শব্দটা তোর কাছে আমি শুনতে চাই না ,তবে হ্যাঁ আমি তোকে হাজার বার বলবো "আই লাভ ইউ , হাজার বার ফ্লাইং কিস দেবো ছুড়ে ,হাজার বার ইচ্ছে হবে জড়িয়ে ধরি ,গাল টিপি ,ঘারে হাত দিয়ে চলি ,হাতে হাত রাখি ,এতে আমার ব্যক্তি গত চাওয়া তোর কাছে ,তুই কিন্তু এসব চাইবি না ,চাইলেই হারাবি আমায় ,আর কোনোদিনই হয়তো তোর বাড়ির পথে পা রাখবো না তখন ।"

আসলে তোকে হারাতে চাইনা আমি ,
,জানি একদিন দুটি পথ দু দিকে চলে যাবে ,তুই অন্যের পৃথিবী সাজাবি ,অন্য আকাশে চাঁদ হয়ে থাকবি ,আমার ওসব কিছুই চাই না ,শুধু মরা চাঁদের আড়ালে শুকতারা হয়েই তোকে চাই ।
আমি রোজ সন্ধ্যা সকাল সেই তারার দিকে চেয়ে এক একটা ঘর বানাবো ...জানালা ....মন খারাপ হলে ওই জানালায় গিয়ে বসবি ,আমিও বসবো তারপর ...।।”

কিসব বলছিস ? সেটা ভাবিস না যে আমি কোনোদিন তোকে বলবো । এটা “ না” ধরেই রাখ বুঝলি ।

“হমম ,জানি তো , যদি বাই চান্স ….
“বাই চান্স এর কোনো অপশন নেই”
“আচ্ছা দেখবো”
হমম



(১৪)

“বাপরে আজকাল খুব ব্যস্ত মানুষ হয়ে গেছিস তুই ,তোর তো পাত্তাই পাওয়া যায় না”

এখন রিপ্লাই দিয়ে কি হবে ? না দিলেই তো পারতিস”

“আচ্ছা ,এবার বুঝতে পারলি ,যে কেউ রিপ্লাই না দিলে কেমন লাগে ? কেউ ফোন কেটে দিলে কেমন লাগে ? ঠিক আমারও এরকম মনে হয় বুঝলি ,মনে হত ।”

“বিশাল ঘ্যাম …”

“হাঁ হবেই …”

“ভালো ,কাল ভাইভা দিবি ,বল না রে ,আমি বাড়ি যাবো” চল না ভাইভা টা দিয়ে দি”

“আমার কিছুই লেখা হয়নি ,কাল দেবো না”

“বেশি লেখা নেই তো ,লিখে নে না বাবা ,একা ভাইভা দিতে ইচ্ছে করছে না’

কাল সকালে তোকে ফোন করেবো জলদি আসবি কিন্তু”

“দেখি ….”

নীহারিকার কথা আজ পর্যন্ত প্রিয়ম রাখেনি এমন হয়নি ,এই প্রথম বার সে তার কথা রাখেনি ,যায়নি কলেজ পরের দিন “অনেক বার ফোন করেছিল সে ,একবারও ফোন ধরেনি প্রিয়ম ।।


(১৫)

কিছু মিঠে রোদ্দুর দেবে ? গায়ে মাখবো আমি ।বিকেল বেলার প্রাসাদী আল্লাদের মতো বিস্কুট গুলো নুইয়ের পড়ুক নোংরা করা জলে ।।

কবিতা ভালোবেসে অনেকে হয়তো ভাবতেই পারে খুব কাছের মানুষ ।মনের কথা গুলো কেমন বলে দেয় অনায়াসে । আসলে এর বাইরে যে চোখের আড়ালে মরে যাওয়া প্রেম সে খোঁজ নিতে যায়নি কেউ ।।

হমম ,রোজ ভাবি আরো একবার খুব শক্ত করে একটা কষিয়ে চড় মেরে বলবে "ফাক ইউ" ।সব মিথ্যে ,সব মন গড়া । এত চুদুর বুদুর কেন তবে ওই মেয়ে গুলোর সঙ্গে ।। আমি নির্বাক চোখে জিভের ডগায় আঙুলে কামড় দিয়ে বলব "ও সব মন গড়া "।।

আসলে কেউ পারফেক্ট হয় না ,আমি অযথা ছককাটি "নিশ্চই এবার পাবো " দি পারফেক্ট লাভ "।তাই চুলকানি গুলো বেড়ে যায় ভালো করে জেনে নিতে গভীরতা ।।

কোনো অস্তিত্ব নেই তোমার বাস্তবে । হমম তোমাকে নিয়ে কবিতা লেখা যায় ,হাজার হাজার কবিতার স্রোতে কিংবা ড্রইং খাতা জুড়ে তোমার পায়ের ছাপ । মানে এই না তুমি উপন্যাস এর মহানায়িকা হয়ে গেছো ।।আগে গল্প হও ,তবেই এসো ।।”

-হমম বুঝলাম।
-কি বুঝলি ?
-ওই যা বললি ।
-তুমি বাল বুঝেছো ,
-তুমিই একটা বড়ো বাল
-ছি কি সব কথা
-আচ্ছা আমি বললে কি সব ,তুই যে মারিস খিস্তি
-ছেলেদের খিস্তিটা জন্ম গত অধিকার
-“বাল” ইসস তোর সাথে থেকে থেকে আমিও খিস্তি শিখে গেছি ,
-“এটাই পাওনা , যাক মনে থাকবে আমাকে ,
-আমি কাউকে ভুলি না বুঝলি ,
-আচ্ছা দেখা যাবে”




(১৬)

"এরপরের বার আমি মেয়ে হয়ে জন্মাবো । চোখে কাজল ,কপালে টিপ ,বিনি করে বাধা চুল ,নাঃ চুলটা খোলাই থাক ,ওতেই বেশ লাগে বলো ?
আর dslr এ পোস দিয়ে fbতে আর ইন্সট্রা ভরাবো । ছেলেরা দেখেই ক্রাশ খাবে । আর আমি ধরা দিয়েও ধরা দেবো না । তুমি যখন ছেলে হয়ে মেসেজ করবে আমি পাত্তাই দেব না ,ফোন কেটে দেব , অন্য ছেলেদের সাথে ভাব জামাবো ,আর তোমায় জাস্ট ইগনোর ,না না ইগনোর নয় ,ঝুলিয়ে রাখবো ,তুমি বার বার প্রোপজ করবে আমি শুধুই এড়িয়ে যাবো অন্য কোনো গল্পে ,হ্যাঁ না কিছু বলবো না । দেখবে সেদিন কতটা জল ভিজাবে রুমাল ? "

-ভালো
-কি ভালো ?
-বাল
-এই এই আবার ।

-কি আবার ? শুন না কাল কলেজ যাবি ? সাজেশনটা অবশ্যই আনবি কিন্তু ,মনে করে ,দু দিন পর এক্সাম ,আমার কিছুই পড়া হয়নি ।

-আমারও তো ,তুই এত চাপ নিস কেন বলতো ,তোর জন্য শালা আমি একটু শান্তি ঘুমোতে পারি না ,সকালে ফোন ,বিকালে ফোন ,আর পড়া শুনার ,একটু কি রোমান্টিক কথা বলবো ,তা নয় ,

-চুপ কর ত ,আমার ভালো লাগছে না , মাথা ব্যথা করছে ।
-কি হয়েছে ?
-কিছু না ,
-কিছু’ত একটা হয়েছে ,লুকোছিস , আর কত লুকোবি বল ?
-না না কিছু হয়নি বলছি তো ।
-আর মাত্র কয়েটা দিন তারপর হয়তো কোনো দিন দেখাই হবে না , হয়তো ভুলে যাবি ।
-আমি ভুলি না বুঝলি ,তুই ভুলে যাবি ,
-দেখা যাবে ,
হমম দেখা যাবে ,

জানালায় চাঁদ এসে ছুঁয়ে গেছে কখন ঈপ্সিতা বুঝতে পারেনি । এদিকে ভোরের পাখির ডাক ।

নাঃ ! আজ থাক ,কাল বাবাকে আনতে যাবে ,অভিক আসবে বলেছে ।।

আজ তো রান্নাও করেনি ,বিস্কুট ছিল ওটা খেয়েই শুয়ে পড়ল ঈপ্সিতা ।।



(১৭)

দশটা বাজে । কলিং বেল অনেকক্ষন ধরে অভিক বাজাচ্ছিল । অনেক বার ফোন করেছে ,কিন্তু ফোন সুইচ অফ । হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল ঈপ্সিতার । দেখে দশটা বাজে । তড়িঘড়ি করে উঠে পড়ল । কলিং বেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুলতেই অভিক ,আর বাবা ।।

কি ম্যাডাম ঘুম ভাঙলো । ভেবেছিলাম এক সঙ্গে যাবো আঙ্কেল কে আনতে । হলো না । আপনি ঘুমান ।।

ঈপ্সিতা কি পরে ঘুমিয়েছিল ? নাকি জেগে ছিল জানে না । তবে কাল সারারাত চাঁদ যখন দিগন্তে ছুঁয়ে গিয়েছে ,সূর্য উঠেনি দেখল …

“তারপর আর কথা হয়নি ,নাকি হয়েছিল ? আকাশের নীহারিকা থেকে যেখানে তারার জন্ম ,ঠিক তেমনি ডাইরির বাকি অংশটাও হয়তো লেখা হবে না কোনো দিন ,রহস্যে ভরে থাকবে দু চোখের প্রতীক্ষায় ,কতটা জমি পেল আকাশ ? নাকি জামার হাতায় জল ভিজিয়েছে বুক পকেট ?....চলতে চলতে এক অজানা পাহাড়ের গায়ে লেখা

“ভালোবাসি না তোক একটুও
তবুও করতে পারিনা “না”
বুকের ভেতর গোপন খাতায় তোর ঠিকানা ।।”

এক গাল সাদা দাঁড়ি ,চোখে গোল চশমাওয়ালা লোকটা যে কতটা কঠিন ,বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায় । তবে ভিতরে ম্যাগমার স্তরে সাজানো । আজও ঈপ্সিতা লক্ষ্য করে ,জানালার কাঁচে কি যেন আঁকি বুঁকি কাটে ,কি যেন খুঁজে চলে ,আনমনে । তবুও সে আকাশে যেন বাঁচা যায় ,বৃষ্টি হয় না ,মেঘ হয় না ।

“মা দেখ একটা জানালা বানালাম ,মন খারাপ হলে ওই জানালার ধারে এসে বসিস ,দেখবি মন ভালো হয়ে যাবে ।।


(সমাপ্ত )


জ্যোতির্ময় রায়
হৃদয়পুর ,বারাসাত ,কলকাতা-৭০০১২৭

No comments:

Post a Comment