এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

রূপায়ন মন্ডল




কবিতা





।। হুইসেল ।।

ইদানীং আমি স্বপ্নের গভীরে আরো একটা স্বপ্নের ভিতরে ঢুকে পড়ি
কেমন একটা অবশ মায়াঘুম

দেখি একটা অন্ধকার সুড়ঙ্গপথে হাঁটু ভেজা জলে একা চলেছি আমি
শুধু ঝিঁঝিঁর শব্দ আর জলের নিঃশ্বাস

পুরোনো কাগজ, আসবাব আর শ্যাওলার গন্ধ গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়
মগজে ঝিম ধরে গলা শুকিয়ে কাঠ

অবশেষে এবড়োখেবড়ো দেয়াল এলোপাথাড়ি হাতড়ে পথ খুঁজে পাই
আবছা আলো ভেসে আসে

দেখি টলটলে জলে ভাসে বিছানা,পুরোনো ফ্রেমে ছবি,তোমার নাকছাবি
পথ শেষ হয় আমারই উঠোনে

পশ্চিমের বারান্দায় নৌকো বাঁধা আর বাইরে ঘন কুয়াশা চারিদিকে
শীতের হিমে ভেজা তার শরীর

ঝোড়ো শব্দের ঝাপট নিয়ে তীব্র হুইসেল দিয়ে ওঠে পাঁচটার লোকাল
নড়ে ওঠে ভিতরের কড়িকাঠ ।




।। অর্থহীন ।।

যদিও হাসবে হয়তো, তবু ভেবেছিলাম একটা চিঠি লিখে বলবো সব কিছু
তবে আর কিছুই লিখিনি তোমায়

আসলে আজকাল যাই লিখি তার আর মানে খুঁজে পাই না কিছুই
তার চেয়ে অনেক ভালো নীরবতা

মনে নেই শেষ কবে ভীষণ যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়ে চিৎকার করে
মৃত মাকে কাছে চেয়েছিলাম

আমাদের শরীরের খাল-নালায় চুইয়ে চুইয়ে পড়া ভালবাসার জল
চেটে খায় শকুনের দল

শামুকের মতো নৈঃশব্দ মেখে তুমি আমি সকাল মাখি রো্জ
রাতের পলি জমা হয় বুকে

আসলে আজ আর অজানা শবের জন্য কেউই আর ফিরে চায় না
কি হবে খুলে হৃদয় তোরণ!



।। উৎসব ।।

এইভাবে, এইভাবেই একটা একটা করে
পেঁয়াজের খোসার মত আবরণ সরিয়ে
হিংস্র আঙ্গুলে আর্তনাদের চিহ্ন রেখে রেখে
নিজের উৎসমুখ তুমি
বনফায়ারের আলোয় ঝলসাবে ।

শীত পড়ছে গুটি গুটি
কার্নিভাল উৎসবে মাতছি আমরা ।

আরো, আরো একটা একটা করে
দিনগুলো বিজ্ঞাপনে মুখ লোকায়
সিরিয়া থেকে শুশুনিয়ার পাহাড়ের দেশ
গ্রামান্তে শ্মশানে ঝিনুকের দাগে ক্ষত
শব বয়ে যায় জলস্রোতে ।

মাঘ এল বলে পাড়ায় পাড়ায়
তীর্থে তীর্থে উৎসবে মাতছি আমরা ।



।। মনখারাপের আকাশ ।।

মনখারাপের আকাশ
তোর কোলেতে ভাসছি
ভরদুপুরে রোদের পাঁচিল
স্মৃতির আচার চুষছি ।
বৃষ্টি বদল মুখের আদল
মেঘ না চাইতে পানি
দু’এক ফোঁটায় ভাসিয়ে দিলি
দু’চোখে শয়তানি ।
মরতে আমায় দাও না কেন?
বাঁচতে চাওয়াও মিছে
ঘুণপোকাতে কাটছে স্মৃতি
সুখের তেঁতুল বিছে ।
আধেক মন ঘুমের ঘোরে
জানিনা কেন ফুঁসছি ?
মনখারাপের আকাশ তাতে
সাধ করে কি ভাসছি !!  



*****

No comments:

Post a Comment