এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

উজান উপাধ্যায়




কবিতা




অনুতাপ

একটি নারী আমার হাতে গীতবিতান দিয়েছিল
অন্য একটি নারীও আমায় গীতবিতান দিয়েছিল
আরও অনেক নারী আমায় গীতবিতান দিয়েছিল
গেয়েওছিল যে যার মতো রবিঠাকুরের গান
বৃষ্টিহাওয়ায় ছড়িয়েছিল
মেঘমালাদের স্নান

শুনতে চাইনি একটিও গান
দেখতে পাইনি ওদের চোখে
ভিজে যাওয়ার ডাক

ভেবেছিলাম থাক
ভেবেছিলাম থাক

ওরা সবাই হারিয়ে যাক
যে যার মতো পালিয়ে যাক

ওদের চুলের ঝোড়ো উড়ান
অন্য বুকে তুফান তুলুক

আমি থাকবো গল্পগুচ্ছে
নীরব ঋতবাক

এখন যখন খরাপ্রবণ শুষ্ক বুকে
একটু শিশির রিমি ঝিমি
একটু মাদল ঘুঙুর ধ্বনি
চাতক চোখে হাতছানি দিই

আয়না ফিরে
এবার আমি
আপন হব
নিভৃত ক্ষণ
তোদের দেব
আয়না ফিরে

মেঘের বুকে
মুখ গুঁজেছি
পাগল হয়ে
ডাকতে থাকি

শোননা সবাই
অনেকগুলো
লাগবে না আজ

সবাই মিলে একটা শুধু

গীতাঞ্জলি দে

না সাড়া নেই
কেউ আসেনি
কেউ আসেনা

ওরা এখন গল্পগুচ্ছে ডুবে গেছে
ওরা এখন উপন্যাসে মিশে গেছে।




পাথুরে ইতিহাস

রাস্তার বেআব্রু বেয়াদব পাথর গুলো পাখনা লাগিয়ে বেমানান নিস্তেজ সমুদ্রের ঢেউয়ের ভিতরে ঝাঁপিয়ে পড়ল হঠাৎ। ম্যাজম্যাজে রোদ্দুরের ফাঁকিবাজিতে স্যাতসেঁতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়েছে বেআক্কেলে আকাশের বুকে ঝিম মেরে পড়ে থাকা মধ্যদুপুর।

এখানে আড়াল করে রাখা আছে অনুদ্বিগ্ন ঘাসজন্ম, প্রজাপতি স্তিমিত শিথিল বুনোহাওয়া সঙ্গে রেখেছে অনর্গল তোষামোদ করে , নিরন্তর ভাঙচুর প্রাসাদের নিভৃত কোটরে। অনবদ্য বৈধতার প্রারম্ভিকী বিনম্র জিঘাংসার মৈথুনের আয়োজন সেরে নেয় ।

অসম্ভব কৌশলের চক্রব্যূহ রচনার প্রাচীনতম বিনিময় এখানে উচ্ছাসের শামিয়ানা টানিয়ে রেখেছে।এসব অনর্থক জাগরনের লৌকিক কথকতা ঐতিহ্য,রীতি , সামাজিক বাটখারা ....বিপনন জাদুঘরে রাখা মায়াজালা ছাড়া আর কিছু নয় এইসব।

মানবের মানবীর চুম্বনপিয়াসী যান্ত্রিক শর্টকাট শরীরি প্রেমোপ্যাখ্যানে অজস্রবার বর্ণাঢ্য পরিমাপ , শতশত শোভাযাত্রা , নেশাহীন চতুর্মাত্রিক সেবায়ন সাজিয়ে রেখেছে গুহাচিত্রে, ধাতব সুহৃদ সমাহারে ।

পাথরের ইতিহাস কোনও দিন অতীতের তকমা পাবেনা সাল তারিখের ক্যালেন্ডার জুড়ে


উজান উপাধ্যায়

No comments:

Post a Comment