এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

সিলভিয়া ঘোষ



অণুগল্প



জীবন যেমন

আজ বড় উল্টো পাল্টা হাওয়া ছাড়ছে দখিনা বাতাস, সব কিছু উড়িয়ে নিয়ে যাবে মনে হয় ,এখন যদি ঝড় ওঠে তবে তো আজকের বাজার সব লাটে উঠবে।
এদিকে  সকালে রোদ দেখে  কয়েকটা জামা কাপড় কেচে এসেচে ময়না। জানালাগুলো ও খুুুলে এসেছে সে। সারাটা বছর এই কটা দিনের দিকে  তাকিয়েই তো বসে থাকে সে। নইলে কবেই...

প্লাস্টিকটা কে পরিষ্কার করে পেতে চারধারে
ইঁটগুলো পাততে  পাততে ময়নার মনে পড়ে যাচ্ছিল ফেলে আসা পঁচিসটা  বছর আগের কথা। "মধ্যমগ্রামের ব্রিজটার নীচটা তখন কোথায়? ব্রিজটাই বা কোথায়? পরিবর্তন  তো এসেছেই , তা না হলে ভরা চৈত্রতেও লোকের সেই উপছে পড়া ভিড় নেই ! নিজের জন্য না হোক বাচ্চার জন্য তো জামাকাপড়  কেনে লোকে? তা না, সারাক্ষণ শুধু মোবিলে কতা কইছে! অথচ সেদিনও যেমন আমরা এ হাট ও হাট ঘুরে ঘুরে মাথায় করে ছোট ছোট মেয়েদের আদ্দির টেপ জামা, সূতির ফরোক,  ফিতে দেওয়া গেঞ্জির জামা প্যান্ট, ছোট ছেলেদের পাঞ্জাবি , গেঞ্জি, নিমা বয়ে নিয়ে আসতাম আজও তাই করি।"

''বাচ্চাদের জিনিসগুলোতে যতবার হাতবুলাই  ততবার মনে হয় আমার অজানা
,অচেনা সন্তানদের গায়ে হাত বুলাচ্ছি। তাদের প্রত্যেকের জন্য আমার কাছে রাখা আছে কত রকমের জামা, যদি তারা জানতো,  তাহলে তারা আমার কাছে ঠিক কোন না কোনদিন দেখা করে ধরা দিত'' মনে মনে বলে ময়না। আজ তারা নেই বলেই তো তার পিছুটান নেই !তাই তো সে  রাত ন'টার পরেও রাত এগোরোটায় সব গোটাতে পারে ।কলমীর মতো বাড়ি যাবো বাড়ি যাবো করে হাঁক পাড়ে না। আজ হয়তো ঝড়ে সব গুটিয়ে নিয়ে তাকে  অসময়ে ঘরে যেতে হবে । হুঁ ঘর! যেখানে অপেক্ষা করে থাকে কালো জমাট বাধা ক্ষয় রোগে আক্রান্ত বছর ষাঠের এক অকাল বৃদ্ধ মামুদ আলাম। ময়না একটু ছুটি চায় ঐ অন্ধকারের  একঘেয়েমীর কবল থেকে... নতুন বছরের নতুন আলো দেখতে চায় সে... সেল সেল সেল বলে চিৎকার করে নতুন মানুষ কে টানতে চায় তার কাছে... কটা বাচ্চার মাপ দেখতে গিয়ে দু গালটা টিপে আদর করতে চায় নতুন স্বপ্ন দেখবে বলে... জীবন যেমন  তেমন ভাবে কাটাতে চায় প্রতিবার নতুন নতুন রূপে , নতুন নতুন গন্ধে , রসে ,বর্ণে......


সিলভিয়া ঘোষ

No comments:

Post a Comment