এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

শিল্পী সিংহ




অণুগল্প





তট

তীর্যক বেগে দৃষ্টির পূর্ণ প্রতিফলনে উপচে পড়েছে আলোর ছটা। সদ্য সম্পর্কিত নর-নারীর প্রেমঘন মুহূর্ত। একবিংশ সন্ধ্যায় জনকোলাহল থেকে ছিটকে যাওয়া দুই মেরু প্রান্তদ্বয় একত্র। সমুদ্রে লেগেছে ভাটার টান। ফর্মাল শার্টে তৌসিন;পিঁয়াজির আভায় তিয়াশা। সিল্কের শাড়ির আঁচলটায় নোনতা জলের বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু তৈরী হওয়া প্রত্যেকটা মুহূর্ত পায়ে ছুঁয়ে চলে যাচ্ছে। লোমকূপেরা হয়ে উঠছে তীব্র তীক্ষ্ণ।সমুদ্রে ভাটা লাগলেও নববিকশিত অন্তরে লেগেছিলো জোয়ার। চাঁদের আলোয় চিক্ চিক্ করছে দিনের ভয়ঙ্কর সমুদ্রের প্রেমের পূর্ণ আভাস। মুষ্টি যুগল একত্রে করে দু মাইল যে হেঁটেই পেরিয়ে গেছে তারা নিজেরা ই বুঝতে পারেনি। তিয়াশার হাতের  গরম চিংড়ি থেকে তখনও হালকা হালকা গরম ভাপ বেরোচ্ছে।

     নির্জনতা গ্রাস করা এলাকাটা খুঁজে পেয়ে দেরি না করেই বসে পড়লো তৌসিন আর তিয়াশা। 'দেখছিস আকাশ আর সমুদ্রের মেলবন্ধন টা'। 'হুম তো'।'তোর তো বড়ো পছন্দের রে তিয়াশা' মেয়েটার গলা ভারী হয়ে আসছে, হাতের সূচালো নখ গুলো বার বার ঘষে চলেছে তৌসিনের আঙুলের ডগার সঙ্গে। 'তোকে তো কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলেছিলাম । তোর প্রত্যেকটা স্বপ্নকে নিজের হাতে পূরণ করার দায়িত্ব আমার রে। 'তিয়াশার মাথা তৌসিনের কাঁধে। নিজেদের একান্ত গোপনীয় কথা ; সঙ্গে ভাটার টানে সমুদ্রের কুলুকুলু  ধ্বনি আর দু একটা পাখির কিচির মিচির ছাড়া এলাকাটি সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ। একটা চিংড়ি একসাথে দু প্রান্তে মুখ দিয়ে খাওয়া যে কখন শেষ হয়ে গেছে বোঝার অবকাশও ছিলো না। শীতের সন্ধ্যে হালকা হাওয়ায় উড়ছে তিয়াশার চুল।সদ্য নিষ্পাপ দাম্পত্য কে এত কাছ থেকে প্রকৃতিও দেখতে পাবে আশা করেনি। আস্তে আস্তে শুরু হয়েছে জোয়ারের টান।ঠিক পাঁজরা কেঁপে যাওয়া টান।সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রি দশটা। চেতনা যখন ফিরলো বালিতে মাখামাখি দুটো শরীর। লবণাক্ততা যে এতটা মিষ্টত্ব অর্জন করতে পারে তার নবপ্রয়াস। সেদিনের সেই------ই-------ই তট টা ছিলো প্রকৃতি ঘন মধুচন্দ্রিমার বিরল সাক্ষী।



শিল্পী সিংহ

পরিচিতি
শিল্পী সিংহ
মেমারী,পূর্ব বর্ধমান
বিজয় নারায়ণ
মহাবিদ্যালয়(ইটাচুনা,হুগলি) থেকে বাংলায় স্নাতক।
বর্তমানে শিক্ষা বিকাশ সেবা ফাউন্ডেশন বি. এড কলেজর (মেমারী,নুদীপুর) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
ভালোবেসে লেখালেখি।লিখতে হবেই বললে লেখা হারিয়ে যায় ওটা  হয় না।যখন উদাসী মন খাতায় আঁকিবুঁকি টানি লেখা এমনই হয়ে যায়।


1 comment:

  1. Bah khub valo. Tousin ki bache ache ki nah tarpor tiyasa khojo naini I think��

    ReplyDelete