এখন তরঙ্গ তে লেখা পাঠান প্রতিমাসের ৫ থেকে ২০ তারিখ অবধি

বিজন বিশ্বাস




কবিতা



ওপার ও এপারের গান

ওপারে সবুজ পাড়ে ঘোমটা টানা এক পশলা আকাশ ছোঁয়া গাঁ-
এপারে বাণভাসী পোড়া বালু মাঠ খাঁ খাঁ;
ওপারে শ্বাসমুলী বণানীর দোল, স্রোত আর পাখিদের রোল;
এপারে কৃষকে ধূসর শরীরে নুন বাতাসেয় রোদপোড়া বিরান মাটির ফাকা কোল!
তবু আমি এপারের বয়ে চলা মৃতপ্রায় নদীদের দলে,
আমার রাখাল-বেলা মিশে রয় আধপোড়া বাসনার জলে!
ওপারে তোমার সুখে- আমারতো হয়না অসুখ;
আমার বিসুক দেখে তোমাদের পুড়ে যায় বুক।
এপারে আমার দানায়- খুঁটে খায় তোমার শালিক;
অথচ তোমরা ভাবো তোমরাই প্রকৃত মালিক!
তোমরা ওপারে গড়- সুন্দরী বনের বাহার,
ভেবেকি দেখেছো কভু কোথা পাও তোমরা আহার?
কতটুকু মাটি ছ্যানে কয়খানা ইট হয় পোড়া,
কয় ঝাকা বুলু দিয়ে
কতগুলি ইট যায় জোড়া?
সবকিছু এপারের ঘাম জল রোদ ছুঁয়ে হয়
তোমরা মোড়ল সাজো
কাজ করা ওতো সোজা নয়।
বিলাসের অন্তরালে কতো কতো সময়ের ঘাম,
একদিন দিতেই হবে শ্রম ও শ্রমিকের দাম!





এখন চৈত্রদিন

চৈত্র শেষ হতে হতে ক্রন্দসী পৃথিবী যেন;
কে কাকে বিদায় বলে কার বাঁশী শুনে?
কে বাজায় বিরাগ ভৈরব!
কার নদী হয় উচাটন প্রিয়তার লাগি?
সীমায় দাড়িয়ে ওই আহেরী ভায়রো- নবীনতম যোগী- নববৈশাখ;
আমের মুকুলে জাগে তাহারি আগমনী রাগ অনুরাগ!
দোহার সকাল ভেঙে জেগে ওঠে নবতর দোল বুকের কোঠরে কৃষকের ফসলের ঘ্রাণ।
আর কতো দূরে চৈত্রের চড়কের মেলা? আরকতো দূরে মোহময় পাতার বাঁশি বাজে?
এখন ফাগুন ফেলে চৈত্রর সময় এলে বেলে;
এখন তবুও জাগে মৌ মৌ ফসলের গান;
রাঙা হয় কৃষাণীর সব অভিমান ছেড়া আচলের ভাজে!
জোড়া শাড়ী, ব্লাউজ দুই এবং অধিকতর পায়ের মাকড়ি ও সই,
এমনতর স্বপ্নে বিভর তাহাদের একক সময়। মাঠ ভরা ধান গাছ গর্ভবতী মা,
নুয়ে আছে, ছুঁয়ে আছে- কৃষাণীর স্বপ্নের গা।
এখন চৈত্রদিন, ফলে ফুলে ফসলে রঙিন।


******

No comments:

Post a Comment